স্পেনে ভয়াবহ বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২০৫-এ পৌঁছেছে। ভ্যালেন্সিয়া অঞ্চলের বাসিন্দাদের আরও বৃষ্টির সতর্কতা দেওয়া হয়েছে। উদ্ধার তৎপরতায় সহায়তার জন্য অতিরিক্ত এক হাজার সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এ খবর জানিয়েছে।
শুক্রবার বিকেলে ভ্যালেন্সিয়া কর্তৃপক্ষ জানায়, ওই অঞ্চলে বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২০২ হয়েছে। এই বন্যা গত কয়েক দশকের মধ্যে স্পেনের সবচেয়ে প্রাণঘাতী প্রাকৃতিক দুর্যোগে রূপ নিয়েছে।
স্পেনের আবহাওয়া সংস্থা এমেট জানায়, শুক্রবার সকালের দিকে ভ্যালেন্সিয়াসহ চারটি অঞ্চলে তুমুল বৃষ্টি ও ঝড়ের সম্ভাবনায় অ্যাম্বার সতর্কতা জারি করা হয়েছে। কয়েকদিন আগের আকস্মিক বন্যায় পানির তোড়ে সেতু, গাড়ি ও স্ট্রিটলাইট ভেসে গেছে এবং বহু এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলগুলোতে হাজার হাজার মানুষ এখনও পানি ও খাদ্য সংকটে ভুগছে। পাশাপাশি অনেক এলাকা এখনও বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে। ধ্বংসপ্রাপ্ত গাড়ি ও ধ্বংসাবশেষে আটকে পড়া বাসিন্দারা পানি-বিদ্যুৎ ও ফোন সেবার অভাবে দুর্ভোগে আছেন।
উদ্ধারকর্মীরা ধ্বংসস্তূপে তল্লাশি চালানোর সময় স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা দেরিতে দেওয়া সতর্কবার্তা নিয়ে পরস্পরকে দোষারোপ করছেন। মঙ্গলবার সকালে এমেট কর্তৃক রেড এলার্ট ঘোষণা করা হলেও, সিভিল প্রোটেকশন সার্ভিস রাত ৮টার পর বাসিন্দাদের ঘরে থাকার নির্দেশনা পাঠায়। যা তখন অনেকের জন্য অপ্রয়োজনীয় হয়ে পড়ে। অনেকের দাবি, সতর্কবার্তা সময়মতো এলে এত প্রাণহানি হতো না।
শুক্রবার দিনভর ভ্যালেন্সিয়ার বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজারো বাসিন্দা সাহায্য নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলে ছুটে যান। শাবল, খাবার ও পানি নিয়ে অনেকেই পায়ে হেঁটে বহু কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে সাহায্যে এগিয়ে আসেন। তবে এই বিপুল মানুষের আগমনে সড়ক ব্যবস্থায় বিপর্যয় দেখা দেওয়ায় স্থানীয় সরকার সাধারণ জনগণকে বন্যাপীড়িত অঞ্চলে না যাওয়ার আহ্বান জানায়।
স্থানীয় সরকারপ্রধান কার্লোস মাজন জানান, উদ্ধার কার্যক্রম নির্বিঘ্ন রাখতে স্বেচ্ছাসেবকদের ফিরে যাওয়ার অনুরোধ জানানো হয়।
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলে স্পেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্গারিটা রবলেস আরও ৫০০ সেনা মোতায়েনের ঘোষণা দিয়েছেন। যা প্রয়োজনে আরও বাড়ানো হতে পারে। রবলেস বলেন, সেনাদের কাজের মধ্যে ভূগর্ভস্থ বা নিম্নতল থেকে আটকে পড়াদের উদ্ধারে সহায়তা, সড়ক থেকে পানি নিষ্কাশন এবং দুর্গত এলাকায় খাবার ও পানি সরবরাহ অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
মানসিক সহায়তা এবং মরদেহ শনাক্তকরণে বিশেষ দলও মোতায়েন করা হয়েছে।