ব্রিটেনের বাংলাদেশি কমিউনিটিতে অনুকরণীয় সব পর্যায়ে গ্রহণযোগ্য নেতার অভাব রয়েছে। আদর্শ হওয়ার মতো নেতার শূন্যতায় ব্রিটিশ বাংলাদেশিদের নতুন প্রজন্মের তুলনামূলক সক্রিয় রাজনীতিতে অংশগ্রহণ কম। ভারতীয় বা পাকিস্তানি কমিউনিটির তুলনায় ব্রিটিশ-বাংলাদেশিদের মূলধারার রাজনীতিতে কম অংশগ্রহণের অন্যতম কারণ আদর্শ হওয়ার মতো নেতা না থাকা।
ব্রিটেনের মন্ত্রিসভায় প্রথমবারের মতো স্যার কিয়ার স্টারমারের মন্ত্রিসভায় স্থান পান বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত দুই ব্রিটিশ সংসদ সদস্য রুশনারা আলী ও টিউলিপ সিদ্দিক। তারা দুজনের কেউই নতুন এমপি নন। তারা যথাক্রমে টানা চারবার ও তিনবারের অভিজ্ঞ এমপি। তারা দুজনেই ফুলটাইম রাজনীতিবিদ। কিন্তু মন্ত্রী হওয়ার মাত্র কিছুদিনের মধ্যেই নিজেদের কর্মকাণ্ডের কারণে বিতর্কিত হচ্ছেন তারা। তাদের বিতর্কিত হওয়ায় হতাশা বেড়েছে তাদের সমর্থকসহ বাংলাদেশি কমিউনিটিতে।
এই দুজন বিতর্কহীনভাবে কাজ করলে, তাতে করে ব্রিটেনের বাংলাদেশি কমিউনিটির মুখ উজ্জ্বল হতো। কিন্তু সংবাদমাধ্যমে তারা শিরোনাম হচ্ছেন নেতিবাচক খবরের উৎস হিসেবে, যা কখনও কাঙ্ক্ষিত ছিল না কমিউনিটিতে। কমিউনিটির প্রত্যাশা, বর্তমান প্রজন্মের সংসদ সদস্য ও মন্ত্রীদের হাত ধরে যেন নতুন প্রজন্ম মূলধারার রাজনীতিতে এগিয়ে যায়।
গত জুলাই মাসে খবরে শিরোনাম হন টিউলিপ সিদ্দিক। তিনি ট্রেজারির অর্থনৈতিক মন্ত্রী এবং হ্যাম্পস্টেড ও হাইগেটের এমপি। টিউলিপ সিদ্দিক লন্ডনের ঘর ভাড়া থেকে ঠিক সময়ে আয় ঘোষণা করতে ব্যর্থ হয়ে এমপির নিয়ম ভঙ্গ করার পরে ক্ষমা চান।
আবাসন, সম্প্রদায় ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী রুশনারা আলী গত সপ্তাহে একটি দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেছেন। ১২ বছর ধরে অনুষ্ঠিত সম্মেলনগুলো গ্রেনফেলের ঘটনায় সেলোটেক্সের সম্মেলনে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ রুশনারা আলীর নিরপেক্ষতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। পার্লামেন্টের ইন্টারেস্ট রেজিস্টারের রেকর্ডগুলো ইঙ্গিত করে, রুশনারা অনুষ্ঠান আয়োজকদের কাছ থেকে ভ্রমণ এবং সম্পর্কিত খরচের জন্য নয় হাজার পাউন্ডের বেশি অনুদান পেয়েছিলেন। একটি পোর্টফোলিও ছাড়লেও তিনি যথারীতি সরকারের মন্ত্রী হিসাবে তার দায়িত্ব পালন করবেন।
সাংবাদিক মাহবুবুল করীম সুয়েদ সোমবার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, তারা দুজনই ব্রিটিশ রাজনীতির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে বাংলাদেশি কমিউনিটির শীর্ষ প্রতিনিধি। তারা বিতর্কের ঊর্ধ্বে থাকবেন—এটিই সমাজের প্রত্যাশা।