X
মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫
১৫ বৈশাখ ১৪৩২

কোন পথে এগোচ্ছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
০৫ মে ২০২৪, ২১:২৪আপডেট : ০৫ মে ২০২৪, ২১:২৪

দুই বছরের বেশি সময় ধরে চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে চলতি বছরের প্রথম চার মাস ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীর জন্য কঠিনতম বলে প্রতীয়মান হয়েছে। হয়ত ২০১৪ সালে শুরু হওয়া দীর্ঘ সংঘাতের সবচেয়ে কঠিনতম সময় ছিল তা।

রণক্ষেত্র জুড়ে ব্যাকফুটে রয়েছে কিয়েভের সেনারা। চীনের বড় ধরনের আর্থিক সহযোগিতায় রাশিয়া নতুন করে হামলা জোরদার করেছে। বিপরীতে ইউক্রেনের পশ্চিমা সমর্থকদের অস্ত্র সরবরাহে ধীর গতি ও দ্বিধা দেখা দিয়েছে। নির্বাচন ও অন্যত্র মনোযোগে পশ্চিমা মিত্রদের কাছ থেকে ইউক্রেনের সহযোগিতা পাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

২০২৩ সালে ব্যর্থ পাল্টা আক্রমণের পর চলতি বছর ইউক্রেনের জন্য কঠিন বলে আগেই ধারণা করা হচ্ছিল। ওই পাল্টা আক্রমণ নিয়ে অনেক প্রত্যাশা ও সরঞ্জাম জড়ো করা হয়েছিল।

এস্তোনিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী সচিব কুস্তি সালম বলেছিলেন, ২০২৪ সাল হবে কঠিন। ইউক্রেনীয় সেনাদের প্রতিরক্ষা জোরদার করতে হবে, তাদের মাটি কামড়ে থাকতে হবে।

শত্রুদের ক্লান্ত করে দিতে ভ্লাদিমির পুতিনের পরিকল্পনা হয়ত কাজ করতে শুরু করেছে। অথবা এই বছর ইউক্রেনের জন্য সূর্যোদয়ের আগে অন্ধকার সময় হয়ে দেখা দিতে পারে।

সম্প্রতি ইউক্রেন সফরে ন্যাটোর মহাসচিব জেন্স স্টোলটেনবার্গ মিত্রদের কাছে ইউক্রেনকে দেওয়া সামরিক প্রতিশ্রুতি পালনের আহ্বান জানিয়ে ঘোষণা দিয়েছিলেন, ইউক্রেনের জয়ী হওয়ার জন্য সময় শেষ হয়ে যায়নি।

পূর্বাঞ্চলীয় রণক্ষেত্রে রাশিয়ার মন্থর অগ্রগতি অব্যাহত রয়েছে। ডনেস্ক, লুহানস্ক, খারকিভ ও জাপোরিজ্জিয়া অঞ্চলে প্রচুর সেনা হারাচ্ছে মস্কো। পুরো ডনেস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চল দখল করা ২০১৪ সাল থেকেই রাশিয়ার লক্ষ্য। এক দশক পর হয়ত তারা সেই কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে যাচ্ছে।

গ্রীষ্মে নতুন আক্রমণ শুরুর জন্য চলমান হামলাগুলো প্রস্তুতিমূলক কাজ হতে পারে। নতুন অভিযানের লক্ষ্য হতে পারে ডনেস্কের চাসিভ ইয়ার শহর। যা ইতোমধ্যে রণক্ষেত্রের সম্মুখভাগে রয়েছে। গ্রীষ্মের আগেই শহরটি রাশিয়ার দখলে যেতে পারে। এছাড়া খারকিভের কুপিয়ানস্ক শহরটিতেও নজর রয়েছে রাশিয়া। ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভে প্রবেশের জন্য কুপিয়ানস্ক একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান।

ওয়াশিংটনভিত্তিক থিংক ট্যাংক ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অব ওয়ার চলতি সপ্তাহে লিখেছে, আভদিভকা দখল ও সেখানে সেনা উপস্থিতি স্থিতিশীল করার ফলে রাশিয়ার সামনে পশ্চিমে এগিয়ে যাওয়া বা উত্তরে চাসিভ ইয়ার শহর দখলের যেকোনও একটিকে বেছে নেওয়ার সুযোগ রয়েছে রাশিয়ার সামরিক কমান্ডের সামনে।

চাসিভ ইয়ার শহরটি বাখমুতের মাত্র ছয় মাইল পূর্বে অবস্থিত। ডনেস্ক রণক্ষেত্রে বাখমুত দীর্ঘদিন হটস্পট ছিল। ২০২৩ সালের মে মাসে রাশিয়া তা দখল করলেও ইউক্রেনীয় সেনাদের গুপ্ত অবস্থান ও হামলা চলমান রয়েছে। এখন প্রায় পরিত্যক্ত শহরটি এক সময় ইউক্রেনীয় সেনাদের গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান ছিল। উঁচু এলাকা হওয়ার কারণে আশেপাশে নজর রাখা ছিল সহজ। এটি ক্রামাটর্স্ক ও স্লোভিয়ানস্ক শহরের প্রবেশদ্বারও। রুশ সেনাদের কাছে এই দুটি শহরের কৌশলগত গুরুত্ব রয়েছে ডনেস্ক দখলের ক্ষেত্রে। 

২০১৪ সাল থেকেই চাসিভ ইয়ার শহরে উল্লেখযোগ্য সামরিক শক্তি নিয়োগ করেছে ইউক্রেন। এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ সামরিক হাসপাতাল রয়েছে। আছে রুশবিরোধী জয়েন্ট ফোর্সেস অপারেশন এর সদর দফতর। 

আভদিভকার ২৬ মাইল উত্তর-পশ্চিমে রয়েছে পক্রোভস্ক শহর। এখানে ডনেস্ক ও বাখমুতগামী দুটি বড় সড়ক একত্রিত হয়েছে। রয়েছে আভদিভকাগামী রেলপথ। রাশিয়া যদি সফলভাবে পক্রোভস্ক দখল করতে পারে তাহলে চাসিভ ইয়ার, ক্রামাটর্স্ক ও স্লোভিয়ানস্ক যাওয়ার পথ সুগম হবে তাদের সামনে।

ফ্লেচার স্কুল অব ল অ্যান্ড ডিপ্লোম্যাসির রুশ সামরিক বিশ্লেষক পাভেল লুজিন বলেছেন, গ্রীষ্মে আরও বড় সামরিক অভিযানের জন্য রাশিয়ার সেনারা তাদের এখনকার হামলা আরও গতিশীল করতে পারবে কিনা তা বলা কঠিন। বড় অভিযানের জন্য খুব বেশি অস্ত্র-সরঞ্জাম নেই। এছাড়া এই প্রত্যাশা মস্কোর তৈরি।

তিনি বলেছেন, আমরা যা দেখছি তা হলো রাশিয়া ২০১৪ সালের আগস্টে ইলোভাইস্ক ও ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে ডেবাল্টেসেভোর মতো ইউক্রেনীয় সেনাদের ঘিরে ফেলার চেষ্টা করছে। কিন্তু তারা তা করতে পারেনি। হয়ত রাশিয়া আবারও একই চেষ্টা করবে। কারণ যুদ্ধে এগিয়ে যেতে হলে তাদের শক্তিশালী অবস্থান প্রয়োজন।

এই এগিয়ে যাওয়া সম্ভব হলে ক্রেমলিন নিজেদের সেনাদের বিশ্রাম ও অতিরিক্ত শক্তি মোতায়েন করতে পারবে বলে মনে করেন লুজিন। তার মতে, রাশিয়ার একটি বিরতি প্রয়োজন। কিন্তু তারা যুদ্ধের অবসান ঘটাবে না।

লুজিন বলেছেন, এখন রাশিয়া অন্তত ডনেস্ক ও লুহানস্ক দখল করতে চাইছে।

সূত্র: নিউজউইক

/এএ/
টাইমলাইন: ইউক্রেন সংকট
০৫ মে ২০২৪, ২১:২৪
কোন পথে এগোচ্ছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ?
সম্পর্কিত
ভারতের সামরিক অভিযান ‘আসন্ন’, বললেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী
স্পেন-পর্তুগালে বড় ধরনের বিদ্যুৎ বিপর্যয়, অচল জনজীবন
ক্ষুধার্ত গাজাবাসীদের ভিড় কমিউনিটি কিচেনে, খাবারের জন্য লড়াই
সর্বশেষ খবর
ইরেশ জাকেরের বিরুদ্ধে হত্যা মামলার সাক্ষী ও বাদীর বক্তব্যে অসঙ্গতি
ইরেশ জাকেরের বিরুদ্ধে হত্যা মামলার সাক্ষী ও বাদীর বক্তব্যে অসঙ্গতি
ইউআইইউ’র সমাধান কোন পথে?
ইউআইইউ’র সমাধান কোন পথে?
সিলেটে ঘরের দরজা ভেঙে মামা-ভাগনের লাশ উদ্ধার
সিলেটে ঘরের দরজা ভেঙে মামা-ভাগনের লাশ উদ্ধার
ইউনাইটেড পাওয়ারের গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন, বিদ্যুৎ না থাকায় ডিইপিজেডে উৎপাদন বন্ধ
ইউনাইটেড পাওয়ারের গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন, বিদ্যুৎ না থাকায় ডিইপিজেডে উৎপাদন বন্ধ
সর্বাধিক পঠিত
‘আমার স্বামীর কোনও দোষ নাই, শুধু আ.লীগ করে বলে মাইরা ফেলাইছে’
‘আমার স্বামীর কোনও দোষ নাই, শুধু আ.লীগ করে বলে মাইরা ফেলাইছে’
ইউআইইউ বন্ধ ঘোষণা
ইউআইইউ বন্ধ ঘোষণা
প্রশাসনে অস্থিরতা কাটছেই না, বাড়ছে ক্ষোভ-অসন্তোষ
প্রশাসনে অস্থিরতা কাটছেই না, বাড়ছে ক্ষোভ-অসন্তোষ
মানবিক করিডোরের জন্য যেসব শর্ত দিয়েছে সরকার
মানবিক করিডোরের জন্য যেসব শর্ত দিয়েছে সরকার
ধর্ষণের অভিযোগে ইমামকে গণপিটুনি, কারাগারে মৃত্যু
ধর্ষণের অভিযোগে ইমামকে গণপিটুনি, কারাগারে মৃত্যু