চীনা গবেষকদের এক যুগান্তকারী আবিষ্কারে ইমিউন কোষ তথা রোগ প্রতিরোধকারী কোষ নিয়ে নতুন তথ্য সামনে এসেছে, যা স্নায়ুবিক রোগ যেমন বিকাশজনিত সমস্যা, স্নায়ুতে আঘাত, অস্বাভাবিক ব্যথা এবং ভাইরাসজনিত স্নায়ু সংক্রমণের চিকিৎসায় নতুন সম্ভাবনার পথ খুলে দিতে পারে।
চাইনিজ অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেস-এর শেনচেন ইনস্টিটিউটস অব অ্যাডভান্সড টেকনোলজির গবেষকরা প্রথমবারের মতো প্রমাণ করেছেন, মাইক্রোগ্লিয়া নামের ইমিউন কোষ কেবল মস্তিষ্ক ও মেরুদণ্ডে নয়, বরং পেরিফেরাল নার্ভাস সিস্টেমেও থাকে।
জার্নাল সেল-এ প্রকাশ হয়েছে এ গবেষণার বিস্তারিত। এত দিন ধারণা করা হতো সেন্ট্রাল নার্ভাস সিস্টেমের মাইক্রোগ্লিয়া কোষ নেই।
মাইক্রোগ্লিয়ার উপস্থিতির কথা বিজ্ঞানীরা জানতে পারেন ১৯১৯ সালে। পরে ২০২৩ সালে লি হানচিয়ের নেতৃত্বে প্রকাশিত আরেকটি গবেষণায় মানব ভ্রূণের ত্বক, অণ্ডকোষ ও হৃদযন্ত্রে এই কোষের অস্তিত্ব পাওয়া যায়।
সাম্প্রতিক গবেষণার প্রধান লেখক উ চিশেং জানান, ‘আমরা প্রথম সেন্ট্রাল নার্ভাস সিস্টেমের বাইরের কিছু টিস্যুতে মাইক্রোগ্লিয়া লক্ষ্য করলেও পেরিফেরাল সিস্টেমে উপস্থিতি নিশ্চিত করতে পারিনি। তাই বছরের পর বছর গবেষণা চালাই।’
এই গবেষণায় মানুষ, বানর ও শূকরের নমুনা ব্যবহার করা হয় এবং অবশেষে তারা নিশ্চিত হন যে পেরিফেরাল সিস্টেমেও মাইক্রোগ্লিয়া রয়েছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, ইঁদুরের মতো ছোট প্রাণীর দেহে এই কোষ অনুপস্থিত, তাই এতদিন এই আবিষ্কার অগোচরে ছিল।
এই আবিষ্কার বিভিন্ন স্নায়ু রোগের কারণ ও চিকিৎসায় নতুন দিক উন্মোচন করতে পারে। যেমন, গর্ভাবস্থায় ভ্রূণের বিকাশজনিত ত্রুটি, বংশগত স্নায়ু রোগ, ব্যথা নিয়ন্ত্রণ ও স্নায়ু পুনরুজ্জীবনের ক্ষেত্রে এই কোষ বড় ভূমিকা রাখতে পারে।
লি বলেন, ‘ব্যথা ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে এই কোষ কখনও ব্যথা বাড়াতে, কখনও কমাতে কাজ করে — এই দ্বিমুখী বৈশিষ্ট্য থেকেই ভবিষ্যতে নির্ভুল ব্যথা নিয়ন্ত্রণের উপায় বের করা যাবে।’
সূত্র: সিএমজি