কলকাতার আরজি কর হাসপাতালে নারী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় এবার সোচ্চার হয়ে ভারতের রাজ্যসভার তৃণমূলের সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দিচ্ছেন জহর সরকার। ভারত সরকারের সাবেক এই কর্মকর্তা তিন বছর আগে তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ হয়েছিলেন।
এ নিয়ে জহর সরকার চিঠি দিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো তথা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। সেই চিঠিতে তিনি বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গে সাংসদ নির্বাচিত করে আপনি আমাকে প্রভূত সম্মানীত করেছেন। বিভিন্ন সমস্যা সরকারের দৃষ্টিগোচর করবার সুযোগ দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ। আমি অনেক চিন্তা করে দেখেছি, সাংসদ পদ থেকে পদত্যাগ করব। রাজনীতি থেকে সম্পূর্ণভাবে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করব।
এই চিঠিতে জহর সরকার তার ক্ষোভ প্রকাশ করে লিখেছেন, মাননীয়া মহোদয়া, বিশ্বাস করুন এই মুহূর্তে রাজ্যের সাধারণ মানুষের যে স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন ও রাগের বহিঃপ্রকাশ আমরা দেখছি, এর মূল কারণ কতিপয় পছন্দের আমলা, দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের পেশীশক্তির আস্ফালন। সরকারের কোনও বক্তব্যকেই মানুষ বিশ্বাস করছে না। পুরনো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো কেন ঝাঁপিয়ে পড়ে কথা বলছেন না।
এর আগেও তৃণমূল কংগ্রেসের বেশ কিছু বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন তিনি। যা নিয়ে সৌগত রায়সহ তৃণমূলের অন্যান্য সাংসদদের সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন। সেই বিষয়টিও চিঠিতে উল্লেখ করেছেন জহর সরকার। তিনি বলেছেন, সে সময়েই পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিতে চেয়েছিলেন, কিন্তু অপেক্ষা করে গিয়েছিলেন, কারণ ওই সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কাটমানির বিরুদ্ধে যে আন্দোলন-পদক্ষেপ নিয়েছিলেন, তা নিরন্তর চালাবেন বলে ভেবেছিলেন। শেষ পর্যন্ত তা হয়নি।
আরজি করের ঘটনায় এর আগে তৃণমূলের রাজ্যসভার অপর এক সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় সোচ্চার হয়েছিলেন। তিনি ধরনাতেও বসেছিলেন। এমনকি গ্রেফতার হওয়ায় শঙ্কায় কলকাতা হাইকোর্টে তাকে আগাম জামিনের আবেদন করতেও হয়েছিল। এবার আরজি করের ঘটনায় দলের একজন সিনিয়র সাংসদ সদস্যপদ ছাড়ছেন। ফলে যথেষ্ট বিপাকে পড়েছে পশ্চিমবঙ্গের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস।