যুক্তরাষ্ট্র থেকে নিজ দেশে ফেরত যাওয়ার আদেশ না মানলে অবৈধ অভিবাসীদের প্রতিদিন ৯৯৮ ডলার (প্রায় ১ লাখ ১০ হাজার টাকা) জরিমানা এবং জরিমানা না দিলে সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার পরিকল্পনা করছে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের পর্যালোচনায় এ তথ্য জানা গেছে।
১৯৯৬ সালের একটি আইন ব্যবহার করে এই জরিমানা আরোপ করা হবে, যা ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে ২০১৮ সালে প্রথমবারের মতো প্রয়োগ করা হয়। ট্রাম্প প্রশাসন এই জরিমানা পাঁচ বছর পিছিয়ে প্রয়োগ করতে পারে, যা মোট ১০ লাখ ডলারের বেশি হতে পারে বলে এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন।
রয়টার্সের পর্যালোচনায় দেখা গেছে, সরকারি ইমেইলে অভিবাসীদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার কথাও ভাবছে ট্রাম্প প্রশাসন।
যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের (ডিএইচএস) মুখপাত্র ট্রিসিয়া ম্যাকলাফলিন রয়টার্সকে বলেন, অবৈধ অভিবাসীদের এখনই দেশ ছেড়ে চলে যাওয়া উচিত। না হলে প্রতিদিন ৯৯৮ ডলার জরিমানা গুনতে হবে। গত ৩১ মার্চ ডিএইচএসের একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে এই জরিমানার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।
রয়টার্সের প্রাপ্ত ইমেইলে দেখা গেছে, হোয়াইট হাউজ কাস্টমস অ্যান্ড বর্ডার প্রোটেকশন (সিবিপি) সংস্থাকে জরিমানা ও সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার বিষয়ে চাপ দিচ্ছে। এমনকি জাস্টিস ডিপার্টমেন্টের সিভিল অ্যাসেট ফরফেইচার বিভাগও এই কাজে ব্যবহার করা হতে পারে।
ট্রাম্প প্রশাসন প্রায় ১৪ লাখ অভিবাসীকে নিশানা করছে, যাদের ফেরত পাঠানোর আদেশ দিয়েছে আদালত। ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে ১৯৯৬ সালের আইনে নয়জন অভিবাসীর বিরুদ্ধে কয়েক লাখ ডলার জরিমানা করা হয়েছিল, যা পরে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। তবে অন্তত চারজনের বিরুদ্ধে ৬০ হাজার ডলার করে জরিমানা করা হয়েছিল।
প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ২০২১ সালে ক্ষমতায় এসে এই জরিমানা বন্ধ করে দেন। বাইডেন প্রশাসনের সাবেক এক কর্মকর্তা স্কট শুকার্ট বলেন, এটা আইন প্রয়োগের জন্য নয়, বরং ভয় দেখানোর জন্য।
এই জরিমানার ফলে নিম্নআয়ের অভিবাসীদের ওপর চাপ বাড়তে পারে। মাইগ্রেশন পলিসি ইনস্টিটিউট-এর তথ্য অনুযায়ী, অবৈধ অভিবাসীদের ২৬ শতাংশ পরিবারের আয় ফেডারেল দারিদ্র্যসীমার নিচে।
হোয়াইট হাউজের ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিল এবং স্টিফেন মিলার সিবিপিকে জরিমানা প্রয়োগে চাপ দিচ্ছেন বলে ৩১ মার্চের একটি ইমেইলে জানানো হয়। তবে পরের দিন সিবিপির একটি মেমোতে বলা হয়, এই কাজ আইসিই’র (ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট) করা উচিত। মেমোতে আরও বলা হয়, সিবিপির সিস্টেম এই ধরনের জরিমানা প্রয়োগের জন্য প্রস্তুত নয় এবং এতে ব্যয় ও বিলম্ব হবে।
জরিমানা কবে থেকে কার্যকর হবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। ডিএইচএস মিলারের সম্পৃক্ততা বা জরিমানা প্রয়োগের প্রযুক্তিগত দিক নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি।