আর্জেন্টিনার পূর্বাঞ্চলীয় আটলান্টিক উপকূলের কাছে হিলারিও আসকাসুবি শহরটি পাখিদের সমস্যায় ভুগছে। হাজার হাজার সবুজ-হলুদ-লাল রঙের তোতাপাখি শহরটিতে আক্রমণ করেছে। জীববিজ্ঞানীদের মতে, আশেপাশের পাহাড়ি এলাকায় বনভূমি ধ্বংসের কারণে এই পাখিরা শহরে চলে এসেছে। তারা শহরের বৈদ্যুতিক তারে কামড় দিয়ে বিদ্যুৎ বিভ্রাট ঘটাচ্ছে এবং তাদের নিরন্তর কিচিরমিচির এবং সর্বত্র মলত্যাগ করে শহরবাসীদের বিরক্ত করছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
জীববিজ্ঞানী ডায়ানা লেরা বলেন, পাহাড়ের বনভূমি ধ্বংস হচ্ছে, যার ফলে পাখিরা খাদ্য, আশ্রয় এবং পানির খোঁজে শহরের কাছাকাছি চলে আসছে।
তিনি আরও বলেন, আর্জেন্টিনার বনাঞ্চলের বড় একটি অংশ গত কয়েক বছরে ধ্বংস হয়ে গেছে।
কয়েক বছর ধরে এই তোতাপাখিরা শরৎ ও শীতকালে শহরে আশ্রয় নিচ্ছে। স্থানীয়দের মতে, কখনও কখনও শহরের প্রতি ৫ হাজার মানুষের বিপরীতে ১০টি করে তোতাপাখি থাকে। গ্রীষ্মকালে এই পাখিরা প্রজনন মৌসুমের জন্য দক্ষিণ প্যাটাগোনিয়ার উপকূলে চলে যায়।
শহরের বিদ্যুতের তার ও খুঁটিতে শত শত পাখি বসে আছে এমন ছবি পাওয়া গেছে, সূর্যাস্তের আলোয় পাখিদের ঝাঁক শহরের ওপর দিয়ে উড়ে যাচ্ছে। এই দৃশ্যগুলো পরিচালক আলফ্রেড হিচককের ১৯৬৩ সালের বিখ্যাত থ্রিলার ‘দ্য বার্ডস’ ছবির কথা মনে করিয়ে দেয়।
স্থানীয় সাংবাদিক রামন আলভারেজ বলেন, তারা তারে কামড় দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত করে, এরপর বৃষ্টির সময় তারে পানি ঢুকে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। প্রতিদিন এই তোতাপাখিরা আমাদের খরচ এবং সমস্যার সৃষ্টি করে। বিদ্যুৎ চলে গেলে রেডিও বন্ধ হয়ে যায়।
শহরবাসীরা তাদের তাড়ানোর জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করেছে। যেমন শব্দ ও লেজার লাইট। কিন্তু কোনোটিই কাজ করেনি।
জীববিজ্ঞানী লেরা বলেন, আমাদের প্রাকৃতিক পরিবেশ পুনরুদ্ধার করতে হবে। তবে যতক্ষণ তা না হচ্ছে, আমাদের এমন কৌশল ভাবতে হবে, যা আমাদের শহরে সবচেয়ে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে একসঙ্গে বসবাসের সুযোগ দেয়।