জিম্বাবুয়ে চলমান খরার কারণে তীব্র খাদ্য সংকটে ভোগা জনগোষ্ঠীকে সহায়তা করতে ২০০ হাতি নিধনের পরিকল্পনা করেছে। মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দেশটির বন্যপ্রাণী কর্তৃপক্ষ এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। গত চার দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ খরার কারণে দেশটির কৃষিক্ষেত্র ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় প্রায় ৬৮ মিলিয়ন মানুষ খাদ্য সংকটে পড়েছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
জিম্বাবুয়ে পার্কস অ্যান্ড ওয়াইল্ডলাইফ অথরিটির (জিমপার্কস) মুখপাত্র টিনাশে ফারাও রয়টার্সকে জানান, আমরা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রায় ২০০ হাতি নিধনের পরিকল্পনা করছি। কীভাবে এই কাজটি সম্পন্ন করা হবে, সেটির প্রস্তুতি চলছে।
ফারাও জানান, নিধিত হাতির মাংস খরার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত জিম্বাবুয়ের জনগোষ্ঠীর মধ্যে বিতরণ করা হবে। এটি হবে ১৯৮৮ সালের পর দেশের প্রথম হাতি নিধন অভিযান। নিধন কার্যক্রমটি হুয়াংগে, মবিরে, তশলোতশো ও চিরেদজি জেলায় পরিচালিত হবে। এর আগেই প্রতিবেশী নামিবিয়া গত মাসে ৮৩টি হাতি নিধন করে এবং সেই মাংস খরাপীড়িত জনগোষ্ঠীর মধ্যে বিতরণ করে।
পাঁচটি আফ্রিকা মহাদেশের দক্ষিণাঞ্চলীয় পাঁচটি দেশ — জিম্বাবুয়ে, জাম্বিয়া, বতসোয়ানা, অ্যাঙ্গোলা ও নামিবিয়া —জুড়ে প্রায় ২ লাখেরও বেশি হাতির বসবাস। এটি বিশ্বব্যাপী বৃহত্তম হাতি জনসংখ্যার একটি কেন্দ্র।
ফারাও আরও জানান, এই নিধন কর্মসূচির মূল লক্ষ্য বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যগুলোকে জনাকীর্ণতা থেকে রক্ষা করা। কারণ পার্কগুলো সর্বোচ্চ ৫৫ হাজার হাতি ধারণ করতে পারে, যেখানে জিম্বাবুয়েতে বর্তমানে প্রায় ৮৪ হাজারেরও বেশি হাতি রয়েছে।
তিনি বলেন, এটি পার্কগুলোকে খরা পরিস্থিতিতে সুরক্ষিত রাখার প্রচেষ্টা। নিধন প্রক্রিয়াটি বড় আকারে নয়, কারণ আমরা ২০০ হাতি নিয়ে কাজ করছি, অথচ আমাদের দেশে ৮৪ হাজারের বেশি হাতি রয়েছে।
খরা পরিস্থিতির কারণে মানব-হাতি সংঘাত বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। গত বছর জিম্বাবুয়েতে হাতির আক্রমণে ৫০ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছে। দেশটি দীর্ঘদিন ধরে তার বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ প্রচেষ্টার জন্য প্রশংসিত হয়ে আসছে এবং তার হাতির সংখ্যা বাড়ানোর প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।
জিম্বাবুয়ে জাতিসংঘের বিপন্ন প্রজাতি আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিষয়ক কনভেনশনের (সাইটস) কাছে আইভরি ও জীবিত হাতির বাণিজ্য পুনরায় চালু করার জন্য আহ্বান জানিয়ে আসছে। দেশটিতে প্রায় ৬ লাখ ডলার মূল্যের আইভরি মজুদ রয়েছে, যা বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে না।