ইউক্রেনের সুমি শহরে রুশ হামলায় হতাহতের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত, অন্তত ৩৪ জন নিহত এবং ১১৭ জন আহত হওয়ার তথ্য দিয়েছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা। রবিবার (১৩ এপ্রিল) শহরের কেন্দ্রে দুটি রুশ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ সংঘটিত হয়। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
ইউক্রেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইহোর ক্লাইমেনকো বলেছেন, ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত অধিকাংশ মানুষই ছিলেন রাস্তায়। তাদের কেউ পায়ে হেঁটে, কেউ ব্যক্তিগত গাড়ি বা গণপরিবহন ব্যবহার করে যার যার গন্তব্যে যাচ্ছিলেন। এছাড়া, ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে একাধিক ভবনও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া দাবি করেছেন ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি । এদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুদ্ধের দ্রুত অবসানের জন্য তোড়জোড় করলেও দৃশ্যমান কোনও অগ্রগতি হচ্ছে না।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জেলেনস্কির প্রকাশ করা এক ভিডিওতে দেখা গেছে, বিধ্বস্ত বাস ও পোড়া গাড়ির আশেপাশে অনেক মানুষের মৃতদেহ ইতস্তত পড়ে আছে।
হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন ব্রিটেন, জার্মানি ও ইতালির নেতারা।
জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ বলেছেন, রাশিয়ার কাছে শান্তির আসল অর্থ এই হামলায় স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
হামলার বিষয়ে বক্তব্য জানতে রয়টার্সের অনুরোধে সাড়া দেয়নি রুশ কর্তৃপক্ষ।
বেসামরিকদের উদ্দেশ্য করে কোনও হামলা চালানোর অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছে মস্কো। অবশ্য, ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন শুরুর পর থেকেই অসংখ্য সাধারণ মানুষ হতাহত হয়েছেন।
এর আগে, চলতি মাসের শুরুতে ইউক্রেনের কেন্দ্রীয় শহর ক্রিভি রিহে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়েছিল। ওই হামলায় নয় শিশুসহ ২০ জন প্রাণ হারিয়েছিলেন। যুদ্ধের সম্মুখসারি থেকে বহু দূরে অবস্থিত এই শহরটি জেলেনস্কির জন্মস্থান।
রাশিয়ার সীমান্ত থেকে মাত্র ২৫ কিলোমিটার দূরে সুমি শহরের অবস্থান। এখানে প্রায় আড়াই লাখ মানুষের বসবাস। গত আগস্টে কিয়েভের বাহিনী রাশিয়ার ভেতরে অভিযান চালালে শহরটি একটি সেনাঘাঁটিতে পরিণত হয়।
হামলায় নিহতদের স্মরণে সোমবার থেকে তিনদিনের শোক ঘোষণা করেছেন সুমির ভারপ্রাপ্ত মেয়র আর্তেম কোবঝার।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইউক্রেনে পূর্ণ সামরিক আগ্রাসন শুরু করে রাশিয়া। দেশটির প্রায় ২০ শতাংশ এলাকা এখন ক্রেমলিনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।