পুরো বিশ্বকে প্রায় সপ্তাহখানেক তটস্থ রাখার পর বুধবার (৯ এপ্রিল) অধিকাংশ দেশের ওপর বহু শুল্ক আগামী ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে গাড়ি ও গাড়ির যন্ত্রাংশ আমদানিতে ২৫ শতাংশ শুল্কের বিষয়ে তার অবস্থানে কোনও নড়চড় হয়নি। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
গাড়ি ও সংশ্লিষ্ট যন্ত্রাংশে শুল্ক স্থগিত না করায় কড়া সমালোচনা করেছেন ডেট্রয়েট ও মিশিগানভিত্তিক গাড়ি ব্যবসায়ীরা। ট্রাম্পের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ডেট্রয়েট রিজিওনাল চেম্বার এবং মিশিগানঅটো বলেছে, মার্কিন গাড়ি শিল্পের জটিল আন্তর্জাতিক সরবরাহ ব্যবস্থা যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেজন্য এই নীতিতে পরিবর্তন আনা জরুরি।
সরবরাহ ব্যবস্থায় ভাঙন ধরলে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় মার্কিন গাড়ি শিল্প দুর্বল হয়ে পড়বে বলেও সতর্ক করেছেন তারা।
গত মাসের শেষ নাগাদ আকস্মিকভাবে গাড়ি ও যন্ত্রাংশ আমদানিতে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন ট্রাম্প। তার দাবি, এই পদক্ষেপ মার্কিন গাড়ি শিল্পে ‘অসাধারণ প্রবৃদ্ধি’ নিয়ে আসবে এবং দেশটিতে কর্মসংস্থান ও বিনিয়োগ বাড়াবে। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, এই সিদ্ধান্তের ফলে যুক্তরাষ্ট্রে উল্লেখযোগ্য গাড়ি উৎপাদন সাময়িকভাবে বন্ধ হতে পারে, গাড়ির দাম বাড়তে পারে এবং মিত্র দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কের টানাপড়েন তৈরি হতে পারে।
রিজিওনাল চেম্বার এবং মিশিগানঅটো বলেছে, বিভ্রান্তিকর বাণিজ্যনীতির কারণে অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। দ্রুত এর সমাধান না হলে, মিশিগানের গাড়ি শিল্প, সরবরাহ শিকল (সাপ্লাই চেইন) এবং এই শিল্পে সংশ্লিষ্ট কর্মীরা ভোগান্তির শিকার হবে।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্র গত বছর প্রায় ৮ মিলিয়ন গাড়ি আমদানি করেছিল, যার মূল্য প্রায় ২৪০ বিলিয়ন ডলার, যা মোট বিক্রির প্রায় অর্ধেক। মেক্সিকো যুক্তরাষ্ট্রে গাড়ি সরবরাহকারী শীর্ষ দেশ। এর পরেই রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, কানাডা এবং জার্মানি।
বিশ্লেষকদের অনুমান, এই শুল্ক আরোপের ফলে গাড়ির দাম হাজার হাজার ডলার বেড়ে যেতে পারে। মেক্সিকো ও কানাডা থেকে যন্ত্রাংশের উপর ২৫% শুল্ক আরোপের ফলে প্রতিটি গাড়ির উৎপাদন খরচ ৪,০০০ থেকে ১০,০০০ ডলার পর্যন্ত বাড়তে পারে বলে অ্যান্ডারসন ইকোনমিক গ্রুপের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।