ইউক্রেন যুদ্ধে মস্কোর বিরুদ্ধে শুরু থেকেই শিশু অপহরণের অভিযোগ করে আসছে কিয়েভ। ওই অপহৃত শিশুদের তথ্য নথিভুক্ত করার একটি প্রকল্পে স্বল্প মেয়াদে অর্থায়ন করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। গত ২৫ জানুয়ারি প্রকল্পটি স্থগিত করার পর বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) এটি পুনরায় কার্যকর করা হয়। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, স্বল্প সময়ের জন্য প্রকল্পটিতে পুনরায় অর্থায়ন করা হচ্ছে। এই সময়ের মধ্যে শিশুদের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা সম্ভব হবে। স্থগিত হয়ে যাওয়া প্রকল্পের জন্য এটি সাধারণ প্রক্রিয়ার অংশ।
ইউক্রেন কনফ্লিক্ট অবজারভেটরি নামের প্রকল্পটি পর্যালোচনা করার পর স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ট্রাম্প প্রশাসন। মার্কিন প্রেসিডেন্টের দাবি, আরও একাধিক ক্ষেত্রের মতো এই প্রকল্পও যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট নয়। তাই এটি চালু রাখাকে মার্কিন করদাতাদের অর্থের অপচয় বলে মনে করেন তিনি।
মার্কিন সরকারের অর্থায়নে ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যানটেরিয়ান রিসার্চ ল্যাব এই প্রকল্প পরিচালনা করছে। রাশিয়া কর্তৃক অপহৃত হাজারো ইউক্রেনীয় শিশুর অবস্থান খুঁজে বের করতে কাজ করে যাচ্ছে তারা।
কিয়েভের দাবি, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ১৯ হাজার ৫০০ এর বেশি শিশুকে তাদের পরিবারের সম্মতি ছাড়া ইউক্রেন থেকে রাশিয়া বা রুশ-অধ্যুষিত অঞ্চলে নিয়ে গেছে মস্কো। তাদের অভিযোগ, ক্রেমলিনের এসব কর্মকাণ্ড জাতিসংঘের সংজ্ঞানুযায়ী যুদ্ধাপরাধ ও গণহত্যার শামিল।
তবে কিয়েভের অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করেছে মস্কো। তাদের দাবি, যুদ্ধবিধ্বস্ত ও ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে যারা স্বেচ্ছায় সরতে চেয়েছে, কেবল সেই শিশুদেরই নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
চলতি মাসে ইউক্রেন কনফ্লিক্ট অবজারভেটরি প্রকল্পটি পুনরায় চালু করার জন্য ট্রাম্প প্রশাসনের কাছে দাবি করেন ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতারা। তাদের আশঙ্কা, প্রকল্প স্থগিত হওয়ার কারণে ইউক্রেন থেকে অপহৃত প্রায় ৩০ হাজার শিশুর স্যাটেলাইট ইমেজারি ও সংশ্লিষ্ট তথ্য হারিয়ে যেতে পারে।
উল্লেখ্য, ইউক্রেন থেকে অপহৃত শিশুদের বিষয়টি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) নজরেও আনা হয়েছিল। শিশুদের তুলে নিয়ে যাওয়ার অপরাধে ২০২৩ সালের মার্চে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও তার শিশু অধিকার কমিশনার মারিয়া লভোভা-বেলোভাকে গ্রেফতারের আদেশ দেন আদালত। আইসিসির এই সিদ্ধান্তকে অগ্রহণযোগ্য বলে প্রতিবাদ জানিয়েছে মস্কো।