প্রশান্ত মহাসাগরের তলদেশে ধাতু উত্তোলনে খননকাজের ধকল এখনও বয়ে বেড়াচ্ছে সেখানকার বাস্তুসংস্থান। বুধবার (২৬ মার্চ) নেচার সাময়িকীতে প্রকাশিত এক গবেষণাপত্রে বিজ্ঞানীরা এই দাবি করেছেন। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
ব্রিটেনের ন্যাশনাল ওশানোগ্রাফি সেন্টারের (এনওসি) নেতৃত্বাধীন ওই গবেষণায় দেখা গেছে, ১৯৭৯ সালের পরীক্ষামূলক খননের প্রভাব এখনও সমুদ্রতলে বিদ্যমান। ওই অঞ্চলে শত শত প্রজাতির প্রাণী নিয়ে জটিল বাস্তুতন্ত্র গড়ে উঠেছে।
গবেষণাটির প্রধান ড্যানিয়েল জোন্স বলেন, গভীর সমুদ্রে ভবিষ্যৎ কোনও খননকাজ চালানোর আগে তার দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব অনুমান করতে এই গবেষণা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। আমাদের পর্যবেক্ষণ করা অংশের কিছু জায়গায় চার দশক পর খুব সামান্য পুনরুদ্ধারের লক্ষণ দেখা গেছে। আর কিছু প্রজাতি পুনরায় বসতি স্থাপন করে সংখ্যাবৃদ্ধি শুরু করেছে।
চলতি সপ্তাহে জাতিসংঘের নেতৃত্বে একটি সম্মেলন আয়োজিত হতে যাচ্ছে। জ্যামাইকার কিংসটনে ইন্টারন্যাশনাল সিবেড অথরিটির বৈঠকে ৩৬টি দেশের প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছেন। এখানে তারা আলোচনা করবেন, সমুদ্র তলদেশ থেকে কপার ও কোবাল্টের মতো ধাতু উত্তোলনের জন্য খনন কোম্পানিগুলোকে অনুমোদন দেওয়া উচিত কিনা। এই আলোচনায় সাম্প্রতিক গবেষণার একটি প্রভাব থাকতে পারে বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
খননকাজে নীতিমালা নিয়ে ২৫৬ পাতার একটি খসড়া প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হবে প্রতিনিধিদের মধ্যে। বিভিন্ন গোষ্ঠীর দাবি অনুযায়ী এখানে শতাধিক সংশোধনীর প্রয়োজন হতে পারে।
এদিকে, সমুদ্রতলে খননকাজ বন্ধের দাবি জানিয়েছে পরিবেশ বিষয়ক সংস্থাগুলো। ৩২টি দেশের সরকার এবং ৬৩টি বৃহৎ প্রতিষ্ঠান তাদের এই দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছে।
পরিবেশবাদী সংস্থা গ্রিনপিসের এক কর্মী লুইস ক্যাসন বলেছেন, সাম্প্রতিক গবেষণার ফলাফল এটাই প্রমাণ করে যে, সমুদ্র তলদেশে খননকাজ শুরুর আগেই তা বন্ধে সরকার পক্ষ থেকে পদক্ষেপ নেওয়া কতটা প্রয়োজন।