যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপ ও ভিসা নিষেধাজ্ঞা হুমকির মুখে কিছুটা নমনীয় হয়েছে ভিয়েতনাম। যুক্তরাষ্ট্রে আটক অবৈধ ভিয়েতনামী নাগরিকদের দ্রুত ফিরিয়ে আনতে ও পরবর্তী প্রত্যাবাসন অনুরোধে সাড়া দিতে সম্মত হয়েছে হ্যানয়। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অভিবাসী বিষয়ক আইনজীবী টিন থানহ নিগুয়েন বলেছেন, অতীতের যেকোনও সময়ের চেয়ে এবার দ্রুত পদক্ষেপ নিচ্ছে ভিয়েতনাম। প্রত্যাবাসনে মার্কিন অনুরোধে ৩০ দিনের মধ্যে সাড়া দিতে সম্মত হয়েছে তারা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য শুল্কের হুমকি এড়াতে ভিয়েতনামের বৃহত্তর কৌশলের অংশ। বর্তমানে ভিয়েতনামের অর্থনীতি মার্কিন বাজারের ওপর সবচেয়ে বেশি নির্ভরশীল।
একজন ভিয়েতনামী কর্মকর্তার বরাত দিয়ে টিন জানান, ট্রাম্প প্রশাসনের দ্বিতীয় মেয়াদের প্রথম মাসেই আটক ৩০ অবৈধ অভিবাসীর জন্য ভ্রমণ নথি ইস্যু করতে রাজি হয়েছে হ্যানয়। এতে তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর পথ সহজ হয়েছে।
ভিয়েতনামের অতীত কার্যক্রমের সঙ্গে তুলনা করলে তাদের এবারের পদক্ষেপে কিছুটা বিস্ময়কর উল্লেখ করে তিনি আরও বলেছেন, এ ধরনের অনুরোধে সাড়া দিতে অতীতে হ্যানয় গড়িমসি করতো। ফলে পরবর্তী প্রত্যাবাসনের কাজও শুরু করা সম্ভব হয়ে উঠত না।
অবশ্য এবারের দ্রুততার পেছনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অপ্রত্যাশিত কার্যকলাপের প্রভাব থাকার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভিয়েতনামের এক কর্মকর্তার বরাতে টিন জানিয়েছেন, অবৈধ অভিবাসীদের ফিরিয়ে না নিলে বাড়তি শুল্ক আরোপ এবং অনির্দিষ্টকালীন ভিসা নিষেধাজ্ঞা জারির হুমকি দিয়েছে মার্কিন কর্তৃপক্ষ।
ট্রাম্পের শুল্ক আরোপ হুমকি তালিকায় আলাদাভাবে ভিয়েতনামের নাম উচ্চারণ না করলেও তার সহকারীদের পক্ষ থেকে দেশটির ওপর চাপ প্রয়োগের ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। হোয়াইট হাউজ নাখোশ হলে বাণিজ্য উদ্বৃত্ত ও বিভিন্ন বাণিজ্য প্রতিবন্ধকতার কারণে কঠোর মার্কিন পদক্ষেপের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হতে পারে হ্যানয়।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে ভিয়েতনামের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে সাড়া পায়নি রয়টার্স।
চলতি মাসের শুরুর দিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে স্বাক্ষরিত চুক্তির আওতায় নাগরিক প্রত্যাবাসনে ঘনিষ্ঠভাবে সহযোগিতা করবে ভিয়েতনাম।
ট্রাম্প প্রশাসনের দ্বিতীয় মেয়াদের প্রথম মাসেই ৩৭ হাজার ৬৬০ জন অভিবাসীকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। তাদের বেশিরভাগই লাতিন আমেরিকার দেশগুলোর নাগরিক। অবশ্য তাদের মধ্যে কতজন ভিয়েতনামের ছিলেন তা নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি।