বন্ধুদের নিঃসঙ্গতা দূর করতে বিভিন্ন চেষ্টার কথা আমরা জেনে থাকলেও নিঃসঙ্গ মাছকে চাঙ্গা করার চেষ্টা নিয়ে মনে হয় না আমরা খুব একটা গল্প শুনে থাকব। প্রাথমিকভাবে শুনতে অবাক লাগলেও জাপানের একটি অ্যাকুয়ারিয়াম কর্তৃপক্ষ তাদের সানফিশের নিঃসঙ্গতা দূর করতে এক অভিনব উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের এক প্রতিবেদনে এই খবর জানা গেছে।
সংস্কার কাজ পরিচালনার জন্য শিমোনোসেকি শহরের কাইকিয়োকান অ্যাকুয়ারিয়াম গত মাস থেকে দর্শনার্থীদের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে। তখন থেকেই তাদের সানফিশটি অসুস্থ হয়ে পড়তে থাকে বলে জানায় কর্তৃপক্ষ। এটির খাদ্য গ্রহণ অনিয়মিত হয়ে পড়তে থাকে। আর সময়ে সময়ে ট্যাংকের কাচ ঘেঁষে সাঁতরাতে দেখা যায়।
প্রাথমিকভাবে কর্তৃপক্ষ অনুমান করে, কোনও পরজীবীর সংক্রমণ বা হজমের সমস্যায় মাছটি অসুস্থ বোধ করছে। তবে কোনও কিছুতেই সানফিশের অবস্থার উন্নতি দেখা যায় না।
তখন এক কর্মী প্রশ্ন তোলে, দর্শকের অভাবে মাছটি একাকিত্বে ভুগছে না তো! প্রথমে বিষয়টি অদ্ভুত লাগলেও পরীক্ষামূলকভাবেই সম্ভাবনাটি যাচাই করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আর তাতেই চাঙা হয়ে ওঠে মাছটি।
কার্ডবোর্ড কেটে মানুষের প্রতিকৃতি বানিয়ে সেগুলোর গায়ে পোশাক চাপানো হয়েছে। তারপর এই 'দর্শকদের' রাখা হয়েছে অ্যাকুয়ারিয়ামের কাচের বাইরে, সানফিশটির দৃষ্টিসীমার মধ্যে। তারপর থেকেই এটিকে আবার চনমনে মেজাজে দেখা গেছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করা এক ভিডিওতে দেখা গেছে, নিজের কাচের ট্যাংকে সাঁতরে বেড়াচ্ছে মাছটি। কাঁচের বাইরে রাখা কার্ডবোর্ডের 'দর্শকদের' মাঝেমধ্যে আড়চোখে দেখছে। পুরো সমস্যা বোঝার পর থেকে অ্যাকুয়ারিয়াম কর্মীরাও এখন কাজের ফাঁকে মাছটির দিকে হাত নেড়ে উৎফুল্ল রাখার চেষ্টা করে।
অ্যাকুয়ারিয়ামের প্রাণীদের একাকিত্ব দূরীকরণের প্রচেষ্টার ঘটনা অবশ্য এটাই প্রথম নয়। কোভিড লকডাউনের সময় আরেক জাপানি অ্যাকুয়ারিয়াম তাদের ৩০০ ইইল যেন মানুষের সাহচর্য ভুলে না যায়, তা নিশ্চিত করতে স্বেচ্ছাসেবকদের অনুরোধ করেছিল, ফেসটাইমের মাধ্যমে যেন সেগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হয়।