যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য গ্রিনল্যান্ড গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন কংগ্রেসম্যান মাইক ওয়াল্টজ। দ্বীপটি যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে নেওয়া উচিত বলে হবু মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মন্তব্য করার পর বুধবার (৮ জানুয়ারি) তার সুরেই এই কথা বলেন ওয়ালটজ। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
ফক্স নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, একদিকে রাশিয়া চাইছে আর্কটিক নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিতে। তাদের রয়েছে বরফের মধ্যে দিয়ে চলাচল উপযোগী ৬০ এর অধিক জাহাজ। এর কয়েকটি আবার পারমাণবিক শক্তিচালিত। যুক্তরাষ্ট্রের এমন জাহাজ আছেই মাত্র দুটি, যার একটি আবার আগুনে পুড়ে গেছে।
আর্কটিকে মার্কিন নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠায় ট্রাম্পের আগ্রহ নিয়ে প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি। ট্রাম্প প্রশাসনে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালনের জন্য মনোনীত হয়েছেন ওয়াল্টজ।
তিনি আরও বলেছেন, গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক সম্পদের বিষয়টি ভুলে গেলে চলবে না। বরফ গলতে শুরু করায় চীনারা পর্যন্ত সেখানে দখল নেওয়ার আশায় আইস ব্রেকার বানানোতে মনোযোগ দিচ্ছে।
আসছে ২০ জানুয়ারি ওভাল অফিসের চেয়ারে বসতে যাচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। নিজের আগের মেয়াদে গ্রিনল্যান্ড বিক্রি করে দেওয়ার জন্য ডেনমার্ককে পরামর্শ দিয়েছিলেন ট্রাম্প। তবে তার এই পরামর্শ উড়িয়ে দিয়েছিল ডেনিশ সরকার।
দ্বিতীয় দফায় ইতোমধ্যে বিভিন্ন রকম কথাবার্তা বলে সবাইকে তটস্থ করে রেখেছেন ট্রাম্প। কানাডাকে ৫১তম অঙ্গরাজ্য হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। আবার পানামা খাল দখল করে নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন। এরমধ্যে মঙ্গলবার গ্রিনল্যান্ডে মার্কিন নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠায় সামরিক বা অর্থনৈতিক পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়টি বিবেচনাধীন রেখেছেন বলে জানিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
ট্রাম্পের পরামর্শকে অগ্রাহ্য করে গ্রিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মুটে এগেডেদ জানিয়েছেন, এই দ্বীপাঞ্চল বিক্রির জন্য নয়।
আর্কটিক অঞ্চলে নিরাপত্তা পরিস্থিতির পরিবর্তনের কথা স্বীকার করে গ্রিনল্যান্ড সরকার বুধবার জানিয়েছে, আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিতে তারা হবু ট্রাম্প প্রশাসন ও সামরিক সংগঠন ন্যাটোর মিত্রদের সঙ্গে কাজ করতে ইচ্ছুক।
ডেনমার্কের নিয়ন্ত্রণাধীন স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল গ্রিনল্যান্ড ন্যাটোর সদস্যভুক্ত। উত্তর আমেরিকা থেকে গ্রিনল্যান্ড হয়ে স্বল্পতম দূরত্ব অতিক্রম করে ইউরোপে পৌঁছানো সম্ভব। এছাড়া, ভূরাজনৈতিক ও অবস্থানগত কারণে মার্কিন সেনাবাহিনীরও এই এলাকা নিয়ে আগ্রহ রয়েছে।