হংকংয়ের সর্বোচ্চ আদালত ৪৫ জন গণতন্ত্রপন্থি কর্মীকে দোষী সাব্যস্ত করে সাজা দিয়েছে। মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) দেওয়া এই রায়ে তাদের বিভিন্ন মেয়াদে সর্বোচ্চ ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড দেওয়া হয়। জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত মামলার রায় হংকংয়ের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে বড় আঘাত হেনেছে ও যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের সমালোচনার মুখে পড়েছে। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
২০২১ সালে ৪৭ জন কর্মীকে বেইজিং প্রণীত জাতীয় নিরাপত্তা আইনের আওতায় ষড়যন্ত্রের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়। এই মামলায় তাদের সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের ঝুঁকিতে পড়তে হয়েছিল। আন্দোলনের একজন সংগঠক হিসেবে চিহ্নিত সাবেক আইনের অধ্যাপক বেনি তাইকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
পশ্চিমা দেশগুলো বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র, এই রায়কে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে সমালোচনা করেছে। সাজাপ্রাপ্তদের মুক্তি দাবি করে তারা বলেছে, এই কর্মীরা শান্তিপূর্ণ ও বৈধ উপায়ে রাজনৈতিক কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছিলেন।
অন্যদিকে, বেইজিং ও হংকংয়ের কর্তৃপক্ষ বলেছে, গণতন্ত্রপন্থি বিক্ষোভে সৃষ্ট বিশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে জাতীয় নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন অত্যন্ত প্রয়োজন ছিল। অভিযুক্তদের আইন অনুযায়ী শাস্তি দেওয়া হয়েছে।
২০২০ সালে একটি অনানুষ্ঠানিক 'প্রাথমিক নির্বাচন' আয়োজনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে এই কর্মীদের বিচার করা হয়। অভিযোগে বলা হয়, ওই নির্বাচনে যাদের জন্য আয়োজন করা হয়েছিল, তারা পরবর্তীতে সরকারকে অচল করতে পারতেন।
১৪ জন কর্মীকে মে মাসে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। এছাড়া ৩১ জন স্বীকারোক্তিমূলক বিবৃতি দিয়েছেন। সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক গর্ডন এনজি ও মানবাধিকারকর্মী ওয়েন চাও রয়েছেন।
অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওয়াং এই রায়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি চীনের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, হংকংয়ে সমাবেশ, মতপ্রকাশ ও নাগরিক সমাজে ওপর দমন পীড়ন বন্ধ করা করা উচিত বেইজিংয়ের।
যুক্তরাজ্য বলেছে, ভিন্নমত ও স্বাধীনতা দমনে জাতীয় নিরাপত্তা আইন ব্যবহার করা হয়েছে।
১৯৯৭ সালে ব্রিটেন থেকে চীনের কাছে হস্তান্তরিত হয় হংকং। সে সময় হংকংয়ে বিশেষ স্বায়ত্তশাসনের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। তবে, জাতীয় নিরাপত্তা আইন কার্যকর হওয়ার পর থেকেই হংকংয়ের রাজনৈতিক ক্ষেত্রে বেইজিংয়ের প্রভাব বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে আন্তর্জাতিক মহল মনে করে।