গাজার উত্তরাঞ্চলের একটি হাসপাতাল থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নিয়েছে ইসরায়েল। হাসপাতালে আকস্মিক অভিযান চালানোর একদিন পর শনিবার (২৬ অক্টোবর) এই পদক্ষেপ নিলো তারা। এদিকে, ইসরায়েলিরা কয়েক ডজন পুরুষ চিকিৎসাকর্মী ও রোগীকে আটক করে নিয়ে গেছে বলে দাবি করেছে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলেছেন, ইসরায়েলি বাহিনী কামাল আদ ওয়ান হাসপাতালে শুক্রবার হামলা চালিয়েছিল। ওই এলাকায় সক্রিয় তিনটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের একটি হচ্ছে এই হাসপাতাল।
ইসরায়েলি সেনা চলে যাওয়ার পর ক্ষতিগ্রস্ত কিছু ভবনের ফুটেজ প্রকাশ করেছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। তবে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ওই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করতে পারেনি রয়টার্স।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, হাসপাতালের ৭০ সদস্যের অন্তত ৪৪ জনকে সেনাবাহিনী আটক করেছে। পরে বলা হয়, হাসপাতালের পরিচালকসহ ১৪ জনকে ছেড়ে দিয়েছে ইসরায়েল।
হাসপাতালে অভিযানের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র।
অবশ্য দেশটির সামরিক বাহিনী শুক্রবার দাবি করেছিল যে,হাসপাতাল এলাকায় 'সন্ত্রাসবাদীদের উপস্থিতি ও তাদের অবকাঠামোর' ওপর 'গোয়েন্দা তথ্যের' ভিত্তিতে অভিযান চালিয়েছে তারা।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলেছে, ভবনের জেনারেটর ও অক্সিজেন স্টেশনে আগুন ধরিয়ে দেয় সেনাবাহিনী। এতে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে অন্তত দুটি শিশু মারা গেছে।
অভিযানের আগে হাসপাতাল খালি করার নির্দেশ জারি করেছিল ইসরায়েল। কিন্তু রোগীদের ফেলে যেতে অস্বীকার করেন চিকিৎসকরা। অভিযানের আগে রোগী ও তাদের স্বজনসহ অন্তত ছয় শতাধিক মানুষ হাসপাতালের ছিলেন বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা মারওয়ান আল-হামস বলেছেন, হাসপাতালের রোগীরা এখন স্বাস্থ্যকর্মীদের সেবা ও প্রয়োজনীয় ওষুধ থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। তাদের নিরাপত্তা ও জীবন এতে ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে।
মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, ইসরায়েলের অভিযানের সময় তিনজন নার্স আহত ও তিনটি অ্যাম্বুলেন্স বিধ্বস্ত হয়েছে।
তারা আরও বলেছেন, গত তিন সপ্তাহে জাবালিয়া, বেইত হানোউন ও বেইত লাহিয়ায় ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত প্রায় আটশ' মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।
এদিকে, শুক্রবারের অভিযান চলাকালে তিন সেনা নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে ইসরায়েল। তারা আরও বলেছে,পুনরায় সংগঠিত হামাস সদস্যদের গোড়া থেকে উপড়ে ফেলতেই গাজার উত্তরাঞ্চলে ফের অভিযান শুরু করা হয়েছে।