গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তি অধরাই রয়ে গেল। রবিবার (২৫ আগস্ট) কায়রোতে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ বৈঠকে মধ্যস্থতাকারীদের কোনও প্রস্তাবেই সম্মত হয়নি হামাস ও ইসরায়েল। মিসরীয় নিরাপত্তা বাহিনীর দুটি সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
অবশ্য নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জ্যেষ্ঠ মার্কিন কর্মকর্তা এবারের আলোচনাকে ‘গঠনমূলক’ বলে উল্লেখ করেছেন। তার মতে, চূড়ান্ত ও বাস্তবায়নযোগ্য চুক্তি নিশ্চিত করতে সবার স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ছিল।
তিনি আরও বলেছেন, আলোচনাকারীরা কায়রোতে আরও কিছুদিন অবস্থান করবেন। সামনের দিনগুলোতে বাদবাকি বিষয় নিয়ে আলোচনা অব্যাহত থাকবে।
গাজায় সংকট নিরসনে কয়েকমাস ধরে চলা অনিয়মিত আলোচনা কোনও সাফল্য নিয়ে আসতে পারেনি।
সমঝোতায় যেসব বিষয় বাঁধা হয়ে আছে তার মধ্যে একটি ফিলাডেলফি করিডোরে ইসরায়েলি বাহিনীর অবস্থান। এটি গাজার দক্ষিণাঞ্চল ও মিসর সীমান্তে ১৪ দশমিক ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি পথ। হামাসের অভিযোগ, করিডোর থেকে সেনা প্রত্যাহারের অঙ্গীকার ভঙ্গ করেছে ইসরায়েল।
গাজা উপত্যকা বিভক্তকারী ফিলাডেলফি ও নেতজারিম করিডরের বিকল্প বেশকিছু প্রস্তাব মধ্যস্থতাকারীরা উপস্থাপন করেছিল। কিন্তু একটিও দু’পক্ষের মনঃপূত হয়নি বলে মিসরীয় সূত্র নিশ্চিত করেছে।
এছাড়া ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে বন্দী কিছু ফিলিস্তিনির মুক্তি নিয়েও শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গাজা ত্যাগ করার শর্তে তাদের মুক্তি দেওয়া হবে বলে সূত্রগুলো জানিয়েছে।
ওই মার্কিন কর্মকর্তা বলেছেন, বৃহস্পতিবার থেকে ইসরায়েল, যুক্তরাষ্ট্র ও মিসরের মধ্যস্থতাকারীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি অনেক আলোচনা হয়েছে। কাতার ও মিসরের আলোচনাকারীদের সঙ্গে হামাসের জ্যেষ্ঠ প্রতিনিধিদের বৈঠক সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার ভিত্তি তৈরি করতে তারা সচেষ্ট ছিলেন।
তিনি আরও বলেছেন, নিষ্পত্তি না হওয়া বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করতে রবিবার বৈঠকে অংশগ্রহণ করে ইসরায়েলি কর্মকর্তারা। তবে আলোচনার অগ্রগতি নিয়ে স্পষ্ট করে তিনি কিছু বলেননি।
চলতি বছর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গাজা যুদ্ধবিরতি নিয়ে ৩ধাপের একটি প্রস্তাব উপস্থাপন করেন। ২ জুলাই এটিতে আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মতি জানিয়েছিল হামাস। তবে পরবর্তীতে ইসরায়েল এই প্রস্তাবনার শর্তগুলো এড়িয়ে চলছে বলে তারা অভিযোগ করে আসছে।
রবিবার আল-আকসা টিভিকে হামাসের কর্মকর্তা ওসামা হামদান বলেছেন, ‘২ জুলাই সম্মত হওয়া প্রস্তাবের কোনও শর্ত প্রত্যাহার বা নতুন কোনও পরিকলনা গ্রহণযোগ্য হবে না।’
জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ইজ্জত আল-রেশিক বলেছেন, মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে আলোচনা শেষে রবিবার কায়রো ছেড়েছে হামাসের একটি প্রতিনিধি দল। তিনি আরও বলেন, গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতি ও ইসরায়েলি সেনা সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাহার নিশ্চিত করলেই চুক্তি বাস্তবায়ন করা সম্ভব।