তালেবান ও অন্য সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক মনোভাব এগিয়ে নিতে সেনাবাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি। এক টেলিভিশন ভাষণে ‘শত্রুদের’ বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করতে আফগান নিরাপত্তা বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। মঙ্গলবার দুটি পৃথক হামলায় নবজাতকসহ বহু মানুষ নিহত হওয়ার পর আফগান প্রেসিডেন্ট এই নির্দেশ দিয়েছেন বলে খবর দিয়েছে কাতার ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
মঙ্গলবার সকালে আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের একটি ম্যাটার্নিটি হাসপাতালে বন্দুকধারীরা ঢুকে পড়লে নবজাতক শিশু ও নার্সসহ অন্তত ২৪ জন নিহত হয়। তবে এই হামলার দায় স্বীকার করেনি কোনও গোষ্ঠী। ওই হামলার কিছুক্ষণের মধ্যে দেশটির পূর্বাঞ্চলে এক শেষকৃত্যে হামলার দায় স্বীকার করে সশস্ত্র গোষ্ঠী আইএস। এই হামলাতে আরও ২৪ জন নিহত হয়।
এসব হামলার পর এক টেলিভিশন ভাষণে আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি বলেন, ‘আজ আমরা কাবুলের একটি হাসপাতাল ও নাঙ্গাহারের একটি শেষকৃত্যে তালেবান ও দায়েশ (আইএস’কে এই নামে অভিহিত করে পশ্চিমা দেশ ও তার মিত্ররা) গোষ্ঠীর সন্ত্রাসী হামলা প্রত্যক্ষ করেছি।’ সেনাবাহিনীকে পাল্টা হামলা চালানোর নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, ‘দেশ, দেশের মানুষ ও অবকাঠামোর সুরক্ষা এবং তালেবান ও অন্যসব সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর হামলা ও হুমকি প্রতিরোধ করতে পাল্টা অভিযান প্রয়োজন।’
আফগানিস্তানের প্রায় ১৯ বছরের দীর্ঘ যুদ্ধ অবসানে গত ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠী তালেবান। কাতারের দোহায় স্বাক্ষরিত ওই চুক্তিতে তালেবান ও আফগান সরকারের মধ্যে আলোচনার শর্ত দেওয়া হয়েছে। তবে বন্দি বিনিময় নিয়ে মতবিরোধে সেই আলোচনা শুরু হয়নি। এর মধ্যে হামলার জেরে তালেবান বিরোধী অভিযান শুরুর নির্দেশ এসেছে।
বুধবার এক বিবৃতিতে আফগান বাহিনীর যেকোনও আক্রমণ প্রতিরোধে সম্পূর্ণ প্রস্তুত থাকার কথা জানিয়েছে তালেবান। এতে বলা হয়, ‘এখন থেকে সহিংসতা বৃদ্ধি এবং যেকোনও বিশৃঙ্খলার দায় কাবুল প্রশাসনের ঘাড়ে পড়বে।’
আফগানিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হামদুল্লাহ মোহিব এক টুইট বার্তায় লিখেছেন, ‘তালেবানের সঙ্গে শান্তি আলোচনায় সম্পৃক্ত থাকার সামান্য সুযোগ থাকছে বলে মনে হয়।’ ফলে আফগান শান্তি প্রক্রিয়ার ভাগ্য নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে।
উল্লেখ্য, ফেব্রুয়ারিতে চুক্তি স্বাক্ষরের পর আফগানিস্তানের শহরাঞ্চল ও মার্কিন স্বার্থে বড় ধরনের হামলা চালানো থেকে বিরত থাকছে তালেবান। আফগান সরকারের সঙ্গে শান্তি আলোচনার পথ সুগম করতে এমন পদক্ষেপ নিয়েছে ২০০১ সালে মার্কিন হামলায় উৎখাত হওয়া সশস্ত্র গোষ্ঠীটি।