বুলগেরিয়ার অর্থনীতিবিদ ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভাই হতে যাচ্ছেন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) প্রধান। বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বোর্ড সভায় ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে তার মনোনয়ন নিশ্চিত হয়। এর ফলে তিনিই হবেন উদীয়মান অর্থনৈতিক দেশগুলো থেকে প্রথম ব্যক্তি, যিনি বৈশ্বিক ওই সংস্থার নেতৃত্ব দেবেন। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ওই সংস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের বেশি ভোট থাকলেও তারা কোনও প্রার্থী না দেওয়ায় জর্জিয়েভার প্রধান হওয়ার বিষয়টা অনেকটা নিশ্চিত হয়।
জর্জিয়েভার মনোনয়ন নিশ্চিত হওয়ার পর তিনি রয়টার্সকে বলেন, ‘সতর্ক সংকেতগুলো পরিষ্কার হচ্ছে এবং আমাদের অবশ্যই পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।’ আইএমএফ বোর্ডের একটি সূত্র রয়টার্সকে জানায়, ৬৬ বছর বয়সী ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা এ পদের জন্য প্রস্তুত, সাক্ষাৎকারে তিনি বোর্ডকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছেন বহুজাতিক এ প্রতিষ্ঠানকে এ মুহূর্তে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য তিনিই যোগ্য ব্যক্তি।
চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য উত্তেজনা বৃদ্ধি এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যে আইএমএফ’র প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে অনেকগুলো চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবেন তিনি। জর্জিয়েভা জানান, ব্যাংকের ১৮৯টি সদস্য দেশগুলোর (অর্থনৈতিক) ঝুঁকি সর্বনিম্ন করতে সহায়তা দেওয়াতে তিনি প্রাধান্য দেবেন।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, আইএমএফে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বেশি ভোটিং ক্ষমতা রয়েছে, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ক্ষমতা ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ)। তবে ইইউর দেওয়া এ প্রার্থীর বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র কোনও প্রার্থী দেয়নি। ফলে তিনিই যে আইএমএফ’র প্রধান হচ্ছেন তা অনেকটা নিশ্চিত।
জর্জিয়েভার নিয়োগের জন্য সম্প্রতি আইএমএফ ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়োগের বয়সসীমা শিথিল করে। সে সময় আইএমএফের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বোর্ড সভা অনুমোদনের পর শিগগিরই জর্জিয়েভা নিয়োগ পাবেন।
ক্রিস্টিন লাগার্দের পরে ক্রিস্টালিনা জার্জিয়েভা হবেন আইএমএফের প্রধান হিসেবে দ্বিতীয় নারী। ২০১১ সাল থেকে আইএমএফের প্রধান হিসেবে ক্রিস্টিনা দায়িত্ব পালন করছিলেন। সম্প্রতি তিনি ইউরোপের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট পদে যোগ দেন। সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টিন লাগার্দের পদত্যাগ কার্যকর হয় গত ১২ সেপ্টেম্বর। জার্জিয়েভা ২০১৭ সাল থেকে বিশ্বব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। বর্তমানে তিনি ছুটিতে আছেন। জর্জিয়েভা গেল জুলাই মাসে বাংলাদেশ সফর করেন। বিশ্বব্যাংক ছাড়াও ইউরোপীয় কমিশনে তার দীর্ঘদিনের কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে।