বিষয়টি চমকে ওঠার মতো, গর্বেরও। কারণ, ফিফা ওয়ার্ল্ড কাপের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে স্থান পেলো বাংলাদেশের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারজয়ী গীতিকবি ও সাংবাদিক রবিউল ইসলাম জীবনের লেখা গানের চরণ।
বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টার দিকে বাংলাদেশের তারকা ফুটবলার শেখ মোরসালিনের ছবি পোস্ট করে ফিফা কর্তৃপক্ষ ক্যাপশনে জুড়ে দিয়েছেন জীবনের লেখা ‘জ্বলে ওঠো বাংলাদেশ’ গানের একটি লাইন, ‘লাল-সবুজের বিজয় নিশান হাতে হাতে ছড়িয়ে দাও’। শেষে বাংলাদেশের পতাকাও জুড়ে দেওয়া হয়।
এটুকুতেই যেন নতুন করে জ্বলে উঠলো বাংলাদেশের সংগীত ও ফুটবল অঙ্গন। প্রথম কারণ বাংলায় পোস্ট। দ্বিতীয় কারণ, জনপ্রিয় বাংলা গানের লাইন। যা বাংলাদেশের ফুটবল ও বাংলা গানের জন্য নতুন মাত্রা বলে মনে করছেন অনেকে। পোস্টটি প্রকাশের ৫ ঘণ্টার মাথায় প্রায় সাড়ে ৬ হাজার মন্তব্য পড়েছে। শেয়ার হয়েছে ২ হাজারের বেশি।
বলা দরকার, ‘জ্বলে ওঠো বাংলাদেশ’ তুমুল জনপ্রিয় একটি বাংলা ক্রীড়া সংগীত। যার জন্ম হয়েছে ২০১১ সালে ক্রিকেট বিশ্বকাপ ইভেন্ট ঘিরে। রবিউল ইসলাম জীবনের কথায় গানটির সুর-সংগীত করেছেন আরফিন রুমি। কণ্ঠ দিয়েছেন ব্যান্ড দূরবীনের সদস্যরা।
গীতিকবি রবিউল ইসলাম জীবন বলেন, ‘গানটির বয়স ১৪ বছর। গানটি শুরু থেকে তুমুল জনপ্রিয়তা পেয়েছে এতে কোনও সন্দেহ নেই। তবে সেই গানটির জনপ্রিয় একটি লাইন আজ যখন ফিফা ওয়ার্ল্ড কাপ কর্তৃপক্ষ তাদের ফেসবুক পেজে বাংলায় লিখে প্রকাশ করলো, তখন সেটিতে অন্যরকম ভালোলাগা তৈরি হলো। আমি মনে করি এটা বাংলাদেশেরই অর্জন। আমি নিজেও এটির কথা জানতাম না। পোস্টটি প্রকাশের অনেক পরে একজন আমাকে মেনশন করায় সেটি নজরে আসে।’
স্মৃতিকাতর জীবন বলেন, ‘‘মনে পড়ে এই গানটি প্রকাশ হয়েছিল ২০১১ সালের এই ফেব্রুয়ারিতেই। তখন ক্রিকেট বিশ্বকাপ উন্মাদনা চলছিল দেশজুড়ে। গানটি প্রথম প্রচার হয় এটিএন বাংলার ‘ইসমাইল শো’তে। এরপর সেটি নতুন কলেবরে প্রচার হয় চ্যানেল আই-এ। ভিডিওটি নির্মাণ করেন আজকের সুপারহিট চলচ্চিত্র নির্মাতা হিমেল আশরাফ। মডেল হয়েছেন দেশের অনেক কিংবদন্তি। তখন গানটি দারুণ সাড়া ফেলেছে। ১৪ বছর পর আবারও সেই গানটিকে নতুন জীবন দিলো ফিফা। এটা ভালোলাগার ও সম্মানের। আমি কৃতজ্ঞতা জানাই সংগীতশিল্পী আরফিন রুমি, সঞ্চালক-নির্মাতা খন্দকার ইসমাইলসহ গানটির সঙ্গে যুক্ত সকল শিল্পী-কুশলীর প্রতি।’’
রবিউল ইসলাম জীবনের গান লেখার ক্যারিয়ার প্রায় দুই দশকের। সিনেমা, অডিও এবং নাটকের গান এখনও লিখছেন নিয়মিত। তার জনপ্রিয় গানের সংখ্যা অনেক। পেয়েছেন প্রচুর স্বীকৃতিও। তবে সব ছাপিয়ে ২০২২ সালে ‘পরাণ’ সিনেমার ‘ধীরে ধীরে’ গানটির জন্য তিনি অর্জন করেন শ্রেষ্ঠ গীতিকবির জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।