বলা যেতে পারে অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধনের পুনর্জন্ম ঘটে চলচ্চিত্র উৎসব থেকে। বিশেষ করে কান চলচ্চিত্র উৎসবের মাধ্যমে তার বৈশ্বিক যাত্রা ঘটে। এরপর ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ সুবাদে তিনি বিশ্বের নানা প্রান্তের উৎসবে ছুটে চলেন অভিনেত্রী হিসেবে।
তিনি বরাবরই বলেন, এ ধরনের উৎসবগুলো তাকে সব সময় টানে। কারণ, এতে গোটা বিশ্বের নানান মানুষ ও সিনেমার সঙ্গে তিনি পরিচিত হতে পারেন।
এবার সেই ইচ্ছের সিঁড়ি বেয়ে আরও একধাপ ওপরে উঠলেন অভিনেত্রী। নিজ দেশের সবচেয়ে বড় আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের অন্যতম জুরি বা বিচারক হিসেবে নিজের নামটি লেখাতে পেরেছেন। বলা দরকার, ১১ জানুয়ারি থেকে শুরু হতে যাচ্ছে ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের ২৩তম আসর। ৯ দিনব্যাপী এই উৎসবে প্রদর্শিত হবে ৭৫ দেশের ২৫০টির মতো সিনেমা। সেই উৎসবের ‘নারী নির্মাতা’ বিভাগের অন্যতম জুরি হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন আজমেরী হক বাঁধন। ১৯ ডিসেম্বর উৎসবের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অভিনেত্রী নিজেও। বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এটা আনন্দের ও সম্মানের বিষয়। আগেও আমি দুটি উৎসবে জুরি হিসেবে কাজ করেছি। তবে সেটি অনলাইনে ঘরে বসে। ভিসা জটিলতার কারণে তখন সরাসরি যেতে পারিনি। এবারই প্রথম সরাসরি জুরির কাজটি করতে পারবো। তাও আবার নিজ দেশের উৎসব।’ ২৩তম ঢাকা চলচ্চিত্র উৎসবে ‘নারী নির্মাতা’ বিভাগে জুরি হিসেবে আজমেরী হক বাঁধনের সঙ্গে আরও থাকছেন লন্ডনপ্রবাসী বাংলাদেশের অভিনেত্রী ও নির্মাতা লিসা গাজী, চিনের মেই পো রেইনবো ফং এবং ইরানি অভিনেত্রী হুদা মোগাদ্দাম মানিশ।
এর আগে অনলাইনে বসে ব্রাসেলসে অনুষ্ঠিত ‘আই অ্যাম টুমরো’ চলচ্চিত্র উৎসব এবং ভারতের ‘বেঙ্গালুরু চলচ্চিত্র উৎসব’-এ জুরি হিসেবে দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা রয়েছে বাঁধনের। বলেন, ‘দেশে কাজ থাকায় ২০২৩ সালের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত ব্রাসেলসের আই অ্যাম টুমরো ফেস্টিভ্যালে অনলাইনে যুক্ত হয়ে দায়িত্ব পালন করেছিলাম। এ ছাড়া ভিসা না দেওয়ার কারণে ভারতের বেঙ্গালুরু উৎসবে জুরি হিসেবে উপস্থিত হতে পারিনি। ফলে এবারই প্রথম সশরীরে জুরি হিসেবে ফেস্টিভ্যালে থাকতে পারবো। অন্য জুরিদের সঙ্গে পরিচিত হতে পারবো। এটা আমার জন্য আনন্দের বিষয়।’ পৃথিবীর যে কোনও চলচ্চিত্র উৎসবের প্রতি বাঁধনের আগ্রহ বেশ। যার শুরুটা হয়েছিল ২০২১ সালে ‘রেহানা মরিয়ম নূর’-এর মাধ্যমে ফ্রান্সের কান চলচ্চিত্র উৎসবে সরাসরি অংশ নিয়ে। বাঁধন বলেন, ‘কান উৎসব থেকে শুরু করে পৃথিবীর বড় বড় উৎসবে শিল্পী হিসেবে অংশ নিয়েছি। তবে একজন বিচারক হিসেবে ফেস্টিভ্যালে সরাসরি উপস্থিত থাকা, সিনেমা দেখা, সেগুলো বিচার করা খুব চ্যালেঞ্জিং। নতুন নতুন অনেক মানুষের সঙ্গে পরিচয় হবে, এটাও ভীষণ আনন্দের। সব মিলিয়ে আমি সম্মানিতবোধ করছি ঢাকা উৎসবের জুরি হিসেবে মনোনীত হয়ে।’
লম্বা সময় নতুন কোনও কাজের খবর না মিললেও বাঁধন সম্প্রতি ‘গুটি’ ওয়েব সিরিজের জন্য সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পেয়েছেন।