নায়ক সালমান শাহ আর কণ্ঠশিল্পী আঁখি আলমগীরের সঙ্গে সম্পর্কটা পারিবারিক ও বন্ধুত্বপূর্ণ ছিলো। তাই নয়, সালমান নায়ক হওয়ার আগেই তাদের সঙ্গে পরিচয়। এমনকি সিনেমা করানোর জন্য সালমানকে প্রথম সোহানুর রহমান সোহানের কাছে নিয়ে যান আঁখির মা কবি খোশনূর। সেই সূত্রে আঁখি আলমগীরকে সালমান প্রসঙ্গে জিজ্ঞেস করতেই বললেন, ‘সালমান শাহকে চিনি না!’
১৯৭১ সালের এই দিনে (১৯ সেপ্টেম্বর) সিলেটে জন্মগ্রহণ করেন ক্ষণজন্মা নায়ক সালমান শাহ। এমন দিনে আঁখি আলমগীরের কাছ থেকে জানার চেষ্টা হলো, কেন তিনি এমন একজন নায়ককে ‘চিনি না’ বলে উড়িয়ে দিলেন!
আঁখি আলমগীর বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা আসলে সালমান শাহকে চিনি না। আমাদের বাসায় সালমান হলো ইমন। এখনও আমরা তাকে ইমন বলেই মনে করি। আমাদের যে কোনও গল্পে, স্মৃতিতে ইমনই ঘুরে ফিরে আসে।’
এরপর আরেকটু পেছনে যান আঁখি। বলেন, ‘ইমনের মা নীলা আন্টি রাজনীতি করতেন। পাশাপাশি কিন্তু গানও গাইতেন। তো উনি আমার মায়ের লেখা একটা গান করেন বিটিভিতে। সেই গানের সূত্রে নীলা আন্টি আর আমার মায়ের সঙ্গে একটা পারিবারিক বন্ডিং তৈরি হয়। সেভাবেই ইমনের সঙ্গে আমাদের পরিচয়।’
ইমন তথা সালমান শাহের সঙ্গে আঁখি আলমগীরের সম্পর্কটা ছিলো তুই-তোকারি। একেবারে শৈশবের বন্ধুর মতো। আঁখি বলেন, ‘ইমন বয়সের আমার থেকে যথেষ্ট বড়। কিন্তু আমরা একে অপরকে নাম ধরে ডাকতাম। তুই তুই করতাম। এটা আমি আর ইমন না। আমরা ভাই-বোন সবগুলোই এভাবে তুই-তুই সম্পর্কে বাঁধা ছিলাম। ইমন আর ইমনের ছোটভাইও ছিলো আমাদের সার্কেলে। যেখানে বড়-ছোট বিষয় ছিলো না। সবাই সবাইকে তুই-তুই করতাম! আমার ছোট ভাইও ইমনকে তুই তুই করতো। ইমন ভাই বলতো না। সম্ভবত আমরা সবাই পাগল ছিলাম!’ আঁখি জানান, ইমনকে সালমান শাহ হিসেবে গড়ে তোলার প্রথম উদ্যোগটা নেন তার মা খোশনূর। এটাও জানান, ইমন আসলে তখন থেকেই নায়ক হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে নিজেকে গড়ে তুলছিলো। আঁখির ভাষায়, ‘‘যেহেতু আমাদের পরিবার সিনেমা ও সংগীতের সঙ্গে সরাসরি জড়িত, সেজন্য ইমন বার বার আম্মুকে দেখলেই বলতো, ‘আন্টি প্লিজ একটা কিছু করেন। আপনি চাইলে হবে’। তাই নয়, আমি দেখেছি ও আসলে নিজেকে ছোটবেলা থেকে নায়ক হিসেবেই গড়ে তুলেছে। ওর মধ্যে এর বাইরে আর কোনও প্ল্যান ছিলো না। এরপর ওকে নিয়ে আম্মু সোহান আঙ্কেলের কাছে যান। তারপরের ইতিহাস তো সবারই জানান।’’
আঁখি মনে করেন, ইমন তথা সালমান শাহ অসম্ভব ভালো একজন মানুষ ছিলেন। তার ভাষায়, ‘হি ওয়াজ ভেরি সুইট পারসন। একেবারে তাজা প্রাণের একজন মানুষ ছিলো। এজন্যই হয় তো আল্লাহ ওকে এতো দ্রুত নিয়ে যায়। সেটা আল্লাহই ভালো জানেন।’