শিরোনাম পড়েই চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া ঠিক হবে না। কারণ, এই অন্তর্বর্তী সরকার জন্মের পেছনে প্রকাশ্য অংশীদারত্ব রয়েছে জাকিয়া বারী মমরও। তিনি বরাবরই সমর্থন জুগিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে। এমনকি সরাসরি অংশ নিয়েছেন রাজপথেও।
সেই আন্দোলন থেকে এই সন্ধ্যায় (৮ আগস্ট) জন্ম হলো নতুন সরকার। যাকে ডাকা হচ্ছে ‘অন্তর্বর্তী’ নামে। এতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আর উপদেষ্টা হিসেবে থাকছেন ১৬ জন। তারা হলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহ উদ্দিন আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক ড. আসিফ নজরুল, মানবাধিকারকর্মী আদিলুর রহমান খান, সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল হাসান আরিফ, সাবেক পররাষ্ট্র সচিব তৌহিদ হোসেন, পরিবেশ আইনজীবী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, নির্বাচন পর্যবেক্ষক শারমিন মুর্শিদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুকী আজম, সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রি. জেনারেল (অব.) সাখাওয়াত হোসেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান সুপ্রদীপ চাকমা, চিকিৎসক বিধান রঞ্জন, ইসলামি চিন্তাবিদ আ ফ ম খালিদ হাসান, উন্নয়নকর্মী ফরিদা আখতার, গ্রামীণ ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক নূরজাহান বেগম, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মো. নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভূইয়া।
পুরো তালিকা বিশ্লেষণ করলে পাওয়া যাচ্ছে, সমাজের প্রায় সব শ্রেণির অংশীদারত্ব রয়েছে এতে। শুধু নেই শিল্প-সংস্কৃতি-সাহিত্যের কেউ! এ নিয়ে নতুন সরকারের শপথ অনুষ্ঠানের আগেই অস্বস্তি প্রকাশ করেছেন অভিনেত্রী মম।
তার ভাষায়, ‘দেশের নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে শিল্পী-সাহিত্যিক কেউ নেই...। এটা কি পূর্ব কর্মের দায়! নাকি, শিরদাঁড়ায় ক্ষয় ধরেছে তাই! লজ্জা!!!’
নতুন সরকার শপথের ঠিক আগমুহূর্তে অভিনেত্রীর এই প্রতিক্রিয়া অনেক অর্থবহ মনে করছেন শিল্প-সংস্কৃতির অনেকেই। কেউ বলছেন অন্তত একজন মানুষের প্রতিনিধিত্ব থাকা জরুরি ছিল নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের সূচনালগ্নে। আবার কেউ কেউ মমর সুরেই প্রশ্ন তুলেছেন, এই না থাকার দায় শিল্পী-সাহিত্যিকরাও এড়াতে পারেন না। মম’র প্রতিক্রিয়ায় ‘লজ্জা’টা আসলে নতুন সরকারের মুখগুলো দেখে নয়। বরং তার লজ্জা এই সরকারে শিল্পীদের প্রতিনিধিত্ব অর্জন করতে না পারার কারণে।
এদিকে এই আন্দোলনের সর্বাগ্রে থাকা শিল্পী আজমেরী হক বাঁধন নতুন সরকার প্যানেলে বেশ খুশি। পুরো তালিকাটি শেয়ারও করেছেন। তবে তার আগেই তিনি সরকার তথা দলগুলোকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন কড়া ভাষায়। জানান দিলেন, ক্ষমতায় যারাই থাকুক কিংবা যে দল; ভালো না লাগলে তার সমালোচনা বন্ধ করা যাবে না। অন্তর্বর্তী সরকার নিয়ে যেমন সমালোচনা করলেন তারই সতীর্থ জাকিয়া বারী মম।
তাই তো নেত্রীর ভাষায় আজমেরী হক বাঁধন সবাইকে হুঁশিয়ারি দিলেন এই বলে, ‘নিজের সমর্থিত রাজনৈতিক দলের অযৌক্তিক সিদ্ধান্তের সমালোচনার কালচার তৈরি করুন।’
তার মানে, এই অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনাও জারি থাকবে, যেমন ছিল সদ্যগত আওয়ামী লীগ সরকারের বেলায়।
বলা দরকার, বাঁধন ও মম দুজনেই মিডিয়ায় নাম লেখান একটি সুন্দরী প্রতিযোগিতার মাধ্যমে, ২০০৬ সালে। দুজনেই সমান্তরাল এগিয়ে চলেছেন টিভি নাটক, সিনেমা ও ওটিটি প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে।