আন্তর্জাতিক বিশ্বে বাংলাদেশের সংস্কৃতি ছড়িয়ে দিতে অন্যরকম উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। যার মাধ্যমে বিশ্বের সমৃদ্ধ ৬টি দেশে বসবাসরত বাংলাদেশী সংস্কৃতিকর্মীদের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করা হয়েছে অন্তর্জালের মাধ্যমে।
কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স, সুইজারল্যান্ড, ডেনমার্ক ও সুইডেনে অবস্থানরত বাংলাদেশের শিল্পীদের নিয়ে জুম অ্যাপের মাধ্যমে ৩০ জুন ৪টি অনুষ্ঠান হয়েছে। একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানগুলো সরাসরি সম্প্রচার হয় ফেসবুক পেইজ এবং ইউটিউব চ্যানেল-এ।
কানাডায় অবস্থানরত বাংলাদেশের শিল্পীদের নিয়ে অনুষ্ঠানটি হয় বাংলাদেশ সময় রাত ৯টা এবং কানাডা সময় সকাল ১১টায়।
অনুষ্ঠানটিতে অংশগ্রহণ করেন কানাডায় বসবাসরত মুখোশ ভ্যানকুভার বাংলা থিয়েটার-এর নাট্যকর্মী ও নির্দেশক জীনাত জাহান অনীতা, সংগীত পরিচালক আশিকউজ্জামান টুলু, কণ্ঠশিল্পী টিনা কিবরিয়া, কণ্ঠশিল্পী রদিয়া আশিকউজ্জামান এবং কিবোর্ডিস্ট ও কম্পোজার নাওয়ার আশিকউজ্জামান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন এম আলমগীর এবং সমন্বয়কারী হিসেবে ছিলেন একাডেমির কালচারাল অফিসার সৈয়দা সাহিদা বেগম।
অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থানরত বাংলাদেশের শিল্পীদের নিয়ে একই দিন অনুষ্ঠান হয় বাংলাদেশ সময় বিকাল ৪টা, সিডনি সময় রাত ৮টায়। এতে অংশগ্রহণ করেন অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসরত সংগীতশিল্পী লরিনা নূপুর রোজারিও, সংগীতশিল্পী সাজিয়া হোসেন প্রৈতি, নৃত্যশিল্পী অর্পিতা সোম, অভিনয়শিল্পী ও নির্দেশক জন মার্টিন এবং আলোকচিত্রী ও কথাসাহিত্যিক সরকার কবিরউদ্দিন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন আবৃত্তিশিল্পী তামান্না তিথি।
ফ্রান্স, সুইজারল্যান্ড ও ডেনমার্কে অবস্থানরত বাংলাদেশের শিল্পীদের নিয়ে বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায়, ফ্রান্স সময় বিকাল ৪টায় একই অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়। এতে অংশগ্রহণ করেন অল ইউরোপিয়ান বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশনের লেখক ও সংগঠক কাজী এনায়েত উল্লাহ, সুইজারল্যান্ডের জেনেভা বাংলা পাঠশালার প্রতিষ্ঠাতা ও কণ্ঠশিল্পী রিয়াজুল হক ফরহাদ, ফ্রান্সে বসবাসরত কণ্ঠশিল্পী মৌসুমী চক্রবর্তী, আবৃত্তিশিল্পী রাহুল চৌধুরী, ডেনমার্কে বসবাসরত কণ্ঠশিল্পী ও চ্যানেল আই সেরা কণ্ঠশিল্পী শারমিন সুলতানা উপমা, ফ্রান্সের স্বরলিপি শিল্পীগোষ্ঠীর সভাপতি ও একুশে উদযাপন পরিষদ ফ্রান্সের সদস্যসচিব এমদাদুল হক স্বপন এবং ফ্রান্সে বসবাসকারী পুঁথিশিল্পী কাব্য কামরুল। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন আবৃত্তিশিল্পী তামান্না তিথি।
সুইডেনে অবস্থানরত শিল্পীদের নিয়ে বাংলাদেশ সময় রাত ১০টা সেখানকার সময় সন্ধ্যা ৬টায় অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়। এতে অংশগ্রহণ করেন সেখানে বসবাসরত নৃত্য ও সংগীতশিল্পী অন্তরা বিশ্বাস পিঙ্কী, সংগীতশিল্পী শেখর দেব, সংগীতশিল্পী সায়মা রহমান লাবণ্য এবং আবৃত্তিশিল্পী গোলাম সারোয়ার পলাশ।
অনুষ্ঠানসমূহে সভাপতির বক্তব্যে মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী বলেন, ‘বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন ছিল আন্তর্জাতিক বিশ্বে যেন বাংলাদেশের সংস্কৃতি সুপ্রতিষ্ঠিত হয়, প্রসারিত হয়। তা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এই ধরণের অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়ে থাকে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসবাসকারী শিল্পীদের একটি প্রভাব ঐ দেশে রয়েছে। তারা সেই দেশে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের মাধ্যমে বসবাসকারী বাঙালীদের মধ্যে যেমন একটি ঐক্য তৈরি করতে পারে তেমনি সেই দেশের নাগরিকদের মধ্যেও আমাদের দেশের সংস্কৃতি সম্পর্কে একটি ধারণা দিতে পারে। এভাবেই আমাদের শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি আন্তর্জাতিক বিশ্বে পরিচিতি লাভ করতে পারবে।’
এক্ষেত্রে সকল প্রবাসী শিল্পী-সাহিত্যিকদের মুখ্য ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান তিনি।