কেউ বলছেন, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলা ভাষার অন্যতম সেরা সিনেমা এটি। আবার কারও মতে, গত কয়েক বছরে গোটা ভারতের সবচেয়ে সুনির্মিত ছবি। এমন অগণন প্রশংসার বানে ভাসছে অঞ্জন দত্ত নির্মিত ও অভিনীত সিনেমা ‘চালচিত্র এখন’। যেটা তিনি বানিয়েছেন বিখ্যাত চলচ্চিত্রকার মৃণাল সেনের সঙ্গে তার প্রথম পরিচয় ও কাজের স্মৃতিগুলোর সমন্বয়ে।
গত ১০ মে ছবিটি মুক্তি পেয়েছে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম হইচইতে। এরপর থেকেই কলকাতা, বাংলাদেশ এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থানরত বাঙালিদের কাছ থেকে বিপুল সাড়া পাচ্ছে ছবিটি। বিশেষ করে অঞ্জন দত্ত ও শাওন চক্রবর্তীর অভিনয়ে বিস্মিত সকলে।
‘চালচিত্র এখন’ নিজের অর্থায়নে বানিয়েছেন অঞ্জন। তার বিশ্বাস ছিল, ছবিটি দর্শকের ভালো লাগবে। কিংবদন্তি এই শিল্পীর ভাষ্য, ‘কলকাতার বাইরের জেলাগুলো কিংবা ঢাকা অথবা বিশ্বের অন্যান্য শহরে যেসব বাঙালি আছেন, তাদের পক্ষে তো কলকাতায় এসে ছবিটা দেখা সম্ভব নয়। তাদের কথা ভেবেই আমরা ছবিটা হইচইতে মুক্তি দিয়েছি। আমি জানতাম, ছবিটা ভালো লাগবে দর্শকের। রিস্কটা নিয়েছি, নিজের টাকা খরচ করেছি। কিন্তু এতোটা ভালো লাগবে, এতো আন্তরিকভাবে সবাই ছবিটা নিয়ে লিখবেন, এটা ভাবিনি। এটা বাড়তি পাওনা হয়ে গেছে।’
সোমবার (২০ মে) রাতে ফেসবুক লাইভে এসে ছবিটির বিভিন্ন দিক নিয়ে অনুরাগীদের সঙ্গে কথা বলেছেন অঞ্জন। এক পর্যায়ে মৃণাল সেনের কথা বলতে গিয়ে কান্নায় তার চোখ ভিজে আসে, ধরে আসে গলা। সেই কান্না দমিয়ে দত্ত বললেন, ‘আমি আপ্লুত যে, এত দিন পর সবাই মৃণাল সেনকে নিয়ে ভাবছে। তাকে নিয়ে এত লেখা হচ্ছে। মৃণাল সেনকে আবার সবাই শ্রদ্ধা জানাচ্ছে, এই ছবির মারফত। এটা আমার কাছে বড় পাওনা। মৃণালদা নেই আজ। তিনি যে কত বড় মাপের নির্মাতা ছিলেন, অনেকেই জানেন না। ভারতবর্ষে সিনেমার নিউ ওয়েভ তিনি এনেছেন।’
বলা প্রয়োজন, ‘চালচিত্র’ নামে একটি ছবি নির্মাণ করেছিলেন মৃণাল সেন। ১৯৮০ সালে মুক্তি পাওয়া সেই ছবিতে অভিনয়ের মধ্য দিয়েই অভিষেক হয়েছিল অঞ্জন দত্তের। মৃণালের সঙ্গে পরিচয় হওয়া এবং ওই ছবির শুটিংয়ের অভিজ্ঞতাগুলোই ‘চালচিত্র এখন’-এ তুলে ধরেছেন অঞ্জন। এতে মৃণাল সেনের ভূমিকায় আছেন অঞ্জন দত্ত, আর অঞ্জনের ভূমিকায় অভিনয় করে তাক লাগিয়েছেন শাওন চক্রবর্তী। এছাড়াও ছবিটিতে রয়েছেন বিদীপ্তা চক্রবর্তী, সুপ্রভাত দাস, শুভাশিস মুখার্জি প্রমুখ।
ছবিটির জন্য দ্বাবিংশ ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে সেরা অভিনেতার পুরস্কার পেয়েছিলেন অঞ্জন দত্ত। এছাড়া এই ছবি কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে বিশেষ জুরি পুরস্কার জিতেছিল।