X
শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫
৬ বৈশাখ ১৪৩২
কান উৎসব ২০২৪

কানে ঝুলছে বাংলাদেশের দুল!

মাহমুদ মানজুর, কান (ফ্রান্স) থেকে
মাহমুদ মানজুর, কান (ফ্রান্স) থেকে
১৯ মে ২০২৪, ০০:৫১আপডেট : ১৯ মে ২০২৪, ১৩:১০

কানে এবার প্রথম দিন (১৪ মে) থেকে ঝুলছিল না ঝিকিমিকি দুল! বরং বিষণ্ণতার মেঘ যেন ছেয়ে গেছে শহরের আকাশ-বাতাস। তবে উৎসবের পঞ্চম দিনে (১৮ মে) এসে সোনালু রোদ আর মিষ্টি বাতাসে প্রাণ ফিরেছে দক্ষিণ ফ্রান্সের উপকূলীয় এই ছোট্ট শহরে।

শনিবার (১৮ মে) পঞ্চম দিনে এসে কান উৎসবের পালে দে ফেস্টিভ্যাল ভবনে প্রাণের সঞ্চার ঘটেছে বটে, কিন্তু এখানে আগত সিনেমাওলারা খুব বেশি তৃপ্ত নন এখনও। এমনকি কান শহরের আমজনতারাও খানিকটা বিস্মিত এবারের আয়োজনের জৌলুসহীনতায়। যারা এই উৎসবের দিকে নিয়মিত নজর রাখেন কিংবা অংশ নেন সরাসরি, তাদের অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে; ৭৭তম কান উৎসব অতীতের রেশ ধরে জমেনি এখনও। বাকি দিনগুলোতে সেই জমাটি আবহ ফিরবে কিনা তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দিহান তারা। ফলে উৎসবের শুরু থেকে কানের আকাশে যে মেঘ জমেছিল, রোদ উঠেও সেটি কাটাতে পারেনি। কারণ, এবারের আসরের প্রধান অতিথি মেরিল স্ট্রিপের বাইরে এখনও বড় মাপের কোনও বৈশ্বিক তারকা কিংবা নির্মাতার পদধূলি পড়েনি।

এখানে অংশ নেওয়া ফিল্ম প্রফেশনালসরা বলছেন, ফরাসি সরকার এবারের উৎসব নিয়ে খানিকটা উদাসীন। কাটা হয়েছে সিংহভাগ বাজেট। ফলে উৎসবের পুরনো জৌলুসের প্রতিচ্ছবি মিলছে না এবার। বিষণ্ণতার গল্পের বাইরে এবারের কান উৎসবে বাংলাদেশের উপস্থিতি কিন্তু আশার আলো ছড়ায়। যেন কানে ঝুলছে বাংলাদেশের ঝুমকো দুল!

বলা দরকার, কান উৎসব গোটা বিশ্বের সিনেমাওয়ালাদের কাছে সবচেয়ে আরাধ্য একটি আয়োজন। যেখানে কোনও একটি অংশে যুক্ত হতে পারা পরম প্রাপ্তি বলে মনে করেন তারা। এবারের আয়োজনে তেমনই দুটি অন্তর্ভুক্তি ঘটেছে বাংলাদেশ নামটির সঙ্গে।

কান শহরে কথা বলছিলেন আদনান আল রাজীব এবারের কান উৎসবে নতুন আলোর মশাল হাতে নিয়ে সাগরপাড়ের শহরে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন ঢাকার জনপ্রিয় নির্মাতা আদনান আল রাজীব। উৎসবের প্রথম দিন থেকেই তিনি ফিলিপাইনের একটি বড় টিম নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন প্রযোজক-পরিবেশক-নির্মাতা-শিল্পীদের সঙ্গে বৈঠক আর পিচিংয়ে মনোযোগী।

এবারের উৎসবের সমান্তরাল বিভাগ ক্রিটিকস’ উইকের ৬৩তম আসরে প্রতিযোগিতার জন্য নির্বাচিত হয়েছে স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘র‌্যাডিক্যালস’। এটি সহ-প্রযোজনা করেছেন বাংলাদেশের দুই নির্মাতা আদনান আল রাজীব ও তানভীর হোসেন।

কানের অভিজ্ঞতা শেয়ার করলেন রাজীব। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বললেন, ‘এর আগে আমার বুসানে যাওয়ার অভিজ্ঞতা হয়েছে। তবে কানে যে এভাবে এত দ্রুত আসতে পারবো, সেটা কল্পনাও করিনি। আমার মনে হয়, কো-প্রডিউসার হিসেবে এটা আমার জন্য অবিশ্বাস্য একটি ঘটনা! যদিও আমার প্রেম কিংবা প্যাশনের জায়গা নির্মাতা হিসেবে। কিন্তু কো-প্রডিউসার হিসেবে আমি যে কাজ করছি, এখানে এসে যেভাবে একের পর এক মিটিং করছি, দেখছি, শিখছি এবং নিজের অভিজ্ঞতা অন্যদের সঙ্গে শেয়ার করছি, সেটা যেকোনও ফিল্মমেকারের সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য অসম্ভব দরকারি। সত্যি বলতে, এখন তো আমি এটাও বিশ্বাস করতে চাই দ্রুতই এমন উৎসবে আমি নির্মাতা হিসেবে বাংলাদেশের সিনেমা নিয়ে হাজির হবো। সেই আত্মবিশ্বাস আমার মধ্যে জন্মেছে এখানে এসে।’

রাজীব জানান, গত কয়েক বছরে তিনি বেশ ক’টি সিনেমার স্ক্রিপ্ট ও প্লট তৈরি করে রেখেছেন। কিন্তু আত্মবিশ্বাসের অভাবে সেটি নিয়ে মাঠে নামা হয়নি। কান থেকে ফিরে এবার পুরোদস্তুর সিনেমা নিয়ে মাঠে নামার কথাও জানালেন এই নির্মাতা।

আদনান আল রাজীবের কাছে প্রশ্ন ছিল, প্রথম কান সফর। তাও কান উৎসব আয়োজকদের সমর্থিত সমান্তরাল বিভাগে এসেছেন। আপনাকে নিয়ে দেশের সবার উচ্ছ্বাস কেমন লাগছে এবং এখানে বাংলাদেশকে কেমন আবিষ্কার করলেন? জবাবে তিনি বলেন, ‘সবার যে উচ্ছ্বাস দেখছি, সেটা আমাকে খানিক লজ্জায়ও ফেলে দেয়। এটাও ঠিক প্রশংসা কার না ভালো লাগে। তবে এজন্য আমি কৃতজ্ঞতা জানাই আমার সহযোদ্ধা তানভীর হোসেনকে। মূলত তার সূত্র ধরেই এই ছবিটার সঙ্গে আমার যুক্ত হওয়া। অথচ সে এখনও কানে পৌঁছাতে পারেনি ভিসা জটিলতার কারণে। এখন এই সময়ে তাকে খুব মিস করছি। আর এটা বড় একটা আয়োজন, সমুদ্রের মধ্যে নৌকা ভাসানোর মতোই লাগছে বাংলাদেশটাকে। সাংবাদিক, শিল্পী, সমালোচকসহ অনেককেই দেখলাম এখানে এসে। তাদের সঙ্গে দেখা হলে, কথা বললে খুব আরাম লাগে। আশাবাদী হই। মনে হয়, এই আসা-যাওয়াটা নিয়মিত হলে বাংলাদেশ দ্রুতই কানসৈকতে তার সমৃদ্ধ সিনেমার ইয়ট ভেড়াতে পারবে। আমি যথেষ্ট আশাবাদী।’

রাজীব আরও একটি কথা বললেন বাংলাদেশের সিনেমার আন্তর্জাতিক বাধা হিসেবে। তার মতে, ‘আমরা আসলে এসব উৎসব সম্পর্কে খুব কমই জানি। আমার মতো দেশে অসংখ্য নির্মাতা-প্রযোজক-শিল্পী আছেন, যারা সত্যি বলতে সঠিক গাইডলাইনের অভাবে এ পর্যন্ত আসতে পারে না। আমি নিজেও আসতে পারতাম না এখানে, যদি না ফিলিপাইনের এই প্রজেক্টে যুক্ত হতে পারতাম। ফলে যারা এসব উৎসব সম্পর্কে জানেন, তারা অন্যদের সঙ্গে খুব কমই শেয়ার করেন! এটা আমার মনে হয়েছে। সেজন্য এখানে এসে এবার যা দেখলাম, যা শিখলাম কিংবা সামেনও যদি আসি, তার সবই সতীর্থদের সঙ্গে শেয়ার করার বিষয়ে একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমার মনে হয়েছে, বাংলাদেশের সিনেমার আন্তর্জাতিক পথ সুগম করার ক্ষেত্রে এই কাজটুকু দরকার।’    

কানের পালে ভবনে সাদিয়া খালিদ ঋতি এদিকে বাংলাদেশের কোনও নারী দ্বিতীয়বারের মতো উৎসবের সমান্তরাল বিভাগ ফিপরেসির অন্যতম জুরি (বিচারক) হিসেবে যুক্ত হয়েছেন। তিনি সাদিয়া খালি ঋতি। নির্মাতা নন, তিনি মূলত সিনেমা সমালোচক ও সাংবাদিক। কাজ করেন বাংলাদেশের ইংরেজি দৈনিক ঢাকা ট্রিবিউন-এ। সেই ঋতি এর আগে ২০১৯ সালে ফিপরেসির আমন্ত্রণ পান। বাংলাদেশের মেয়েদের মধ্যে তিনিই প্রথম এই তালিকায় নাম লেখান। ৫ বছর পর সেই ঋতিই আবার একই বিভাগের বিচারক হিসেবে ডাক পেলেন। এরমধ্যে শুরু করেছেন তার কান-কর্মকাণ্ড। রাত-দিন মাথা গুজে দেখছেন ফিপরেসিতে জমা পড়া ১৮টি ছবি।

উৎসবের চতুর্থ দিনে এসে কথা হলো তার সঙ্গে। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, ‌দম ফেলার সুযোগ পাচ্ছেন না। দেখতে হচ্ছে নির্বাচিত সব ছবি। দিতে হচ্ছে মতামত। ফলে উৎসবের চার দিন পার করেও তিনি দেখতে পারেননি প্রিমিয়ার হওয়া ছবিগুলোর একটি। হাঁটতে পারেননি লালগালিচায়।

সেসব আলাপের বাইরে ঋতির প্রতি একটি প্রশ্ন ছিল বিশেষ। সেটি হলো, এবারের উৎসবে কেমন দেখছেন নিজের দেশটাকে? তার উত্তর, ‘শরীরটা একটু খারাপ হলেও ফিলিং বেটার। কারণ এবার বাংলাদেশের দুই কো-প্রডিউসারের একটি ছবি ক্রিটিকস’ উইকের জন্য নির্বাচিত হয়েছে। এই যে বিচারক হিসেবে আমার অংশগ্রহণ আর সিনেমা হিসেবে বাংলাদেশের কো-প্রডিউসারের প্রতিযোগিতায় নাম লেখাতে পারা, এর সবটাই তো বাংলাদেশের সিনেমার পক্ষে যাচ্ছে। এভাবেই কিন্তু একটা দেশ এ ধরনের আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে পরিচিতি পায়, আস্থা অর্জন করে। হুম, এটা ঠিক, আমাদের অগ্রগতি বেশ ধীরলয়ে হচ্ছে। এর কারণ, আমাদের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির উদাসীনতা। এর বাইরে আমাদের সমালোচক কিংবা নির্মাতা যাই বলেন, এসব উৎসবের মাধ্যমে দেশটাকে এগিয়ে নিতে সবাই কিন্তু যার যার পক্ষ থেকে যথেষ্ট সচেতন। আমার বিশ্বাস, দ্রুতই আমাদের এই অবস্থানের পরিবর্তন ঘটবে।’
  
আহমেদ মুজতবা জামাল ও সামিয়া জামান (বামে), ডানে দুই সাংবাদিক পার্থ সনজয় ও জনি হক বাংলাদেশের প্রথম চলচ্চিত্র সমালোচক হিসেবে আহমেদ মুজতবা জামাল ২০০২ সালে ফিপরেসির বিচারক হন। কানের ওই আসরে বাংলাদেশি নির্মাতা তারেক মাসুদের ‘মাটির ময়না’ ফিপরেসি পুরস্কার জেতে। ২০০৫ ও ২০০৯ সালে আরও দু’বার ফিপরেসির বিচারকের আসনে বসেছিলেন আহমেদ মুজতবা জামাল। ২০১৯ সালে সাদিয়া খালিদ ঋতি ফিপরেসির আমন্ত্রণ পান। এরপর এবারও পেলেন। মাঝে ২০২১ সালে কানের অফিসিয়াল সিলেকশনে জায়গা পেয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করে আবদুল্লাহ মোহাম্মদ সাদের ‘রেহানা মরিয়ম নূর’। যদিও এটি কোনও পুরস্কার জিততে পারেনি।

‘মাটির ময়না’র দুই দশক পর শূন্য হাতে ফিরলো ‘রেহানা’। বৈশ্বিক উৎসবে বাংলাদেশের সিনেমা এমন ধারাবাহিকহীন অথবা মলিন কেন? পালে দে ফেস্টিভ্যাল ভবনে দাঁড়িয়ে এ নিয়ে আহমেদ মুজতবা জামালের সঙ্গে বিস্তর আলাপ হয়। যিনি ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব আয়োজন করে আসছেন সুনামের সঙ্গে। এছাড়া কান উৎসবের সবচেয়ে বড় প্রতিনিধি হিসেবেও ঢাকা থেকে প্রতিবার হাজির থাকেন এই সিনেমাওয়ালা। বাংলাদেশের সিনেমার কানযাত্রায় প্রতিবন্ধকতা কোথায়? অফিসিয়াল সিলেকশনে নিয়মিত হওয়া দূরের কথা, মার্শে দ্যু ফিল্মে একটি স্টলও নিতে দেখা যায়নি এবার। গতবার প্রথমবারের মতো স্টল বরাদ্দ নিলেও বিএফডিসি বা তথ্য মন্ত্রণালয়ের কাউকেই দেখা যায়নি সেখানে। পুরো উৎসবজুড়ে একটি মাত্র স্টল ফাঁকা ছিল, সেটির নাম বাংলাদেশ!

এসব হতাশা টানতেই নিজের জীবনের স্ট্রাগলের কথা বললেন আহমেদ মুজতবা জামাল। তিনি বলেন, ‘আমি একা একটা উৎসব করি নিজের শহরে। যেটা আসলে কানের কাছে কিছুই না। তবুও চেষ্টা করি সাধ্যমতো করার। সেই ছোট্ট আয়োজন করতে গিয়ে কত রকমের বাধা আর আইনি জটিলতায় পড়ি, সেটি মুখ ফুটে বলার সুযোগ বা সাহস আমার নেই। কতদিন ধরে অনুরোধ করেছি সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলে এই উৎসব আর ফিল্ম স্ক্রিনিংয়ের জন্য আমাকে যদি একটা জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়, তাহলে খুব ভালো হতো। আমাকে মানে উৎসব করার জন্য। এটুকুও অনুরোধ করেছি, ভবন করে দিতে হবে না। জমি দিলেও হবে। ভবন লাগলে আমরা করে নেবো। তবুও ঢাকা শহরে সিনেমার জন্য একটা জায়গা থাকুক। যেখানে আমরা কানের এই পালে ভবনের মতো বৈশ্বিক সিনেমার আসর বসাতে পারবো। হচ্ছে-হবে করে আমলাতন্ত্রে আটকে আছে। এটা বলছি, আমাদের দেশে সিনেমা নিয়ে মূলত যাদের ভাবার কথা তারা ভাবছে না। যতবার কানে আসি, ততবার ঘুরে ফিরে এই আফসোসটুকুই আমার মাথাকুড়ে খায়। কিন্তু রাস্তা তো দেখি না।’

শুধু অফিসিয়াল সিলেকশন বা বিচারক হিসেবেই কানে বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা আসেন না। এর বাইরে প্রতি বছরই নিজ উদ্যোগ ও আগ্রহে এই উৎসব দেখতে আসেন বাংলাদেশের মডেল, অভিনয়শিল্পী, নির্মাতা ও প্রযোজকরা। আরও আসেন বেশ ক’জন সাংবাদিকও। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি।

আশনা হাবিব ভাবনা ৭৭তম কান উৎসবের আয়োজন খানিক জৌলুসহীন মনে হলেও এবার স্বাধীনভাবে কান উৎসবে অংশ নিয়ে দারুণ আলো ছড়িয়েছেন অভিনেত্রী আশনা হাবিব ভাবনা, ঢাকার মেয়ে মিস আয়ারল্যান্ড মাকসুদা আক্তার প্রিয়তি, নির্মাতা সামিয়া জামান ও স্বপন আহমেদ। সাংবাদিক হিসেবে শুরুর দিন থেকে হাজির আছেন একাত্তর টেলিভিশনের বিশেষ প্রতিনিধি পার্থ সনজয়, বাংলা ট্রিবিউন-এর জয়েন্ট নিউজ এডিটর জনি হক, এই প্রতিবেদকসহ বিভিন্ন পত্রিকা ও টেলিভিশনের ফ্রান্স প্রতিনিধিরা। তাদের মধ্যে বাংলাদেশের গণমাধ্যম ও সোশ্যাল হ্যান্ডেলে প্রায় আগুন লাগিয়ে দিয়েছেন ভাবনা!

আগুন দু’ধরনের। একটি তার দৃষ্টিনন্দন পোশাক অন্যটি ব্যক্তিগত উদ্যোগে কানে আসার সমালোচনা। কান ও আগুন প্রসঙ্গে ভাবনা বলেন, ‘শিল্প-সংস্কৃতির সঙ্গে যুক্ত প্রতিটি মানুষই আসলে ফ্রান্স হয়ে কান উৎসবে নিজেকে দেখতে চায়। অন্যদের মতো এটাও আমার একটা স্বপ্ন ছিল। সেটি এবার পূর্ণ হলো। তবে আরও একটি স্বপ্নের বীজ এখানে এসে বপন করলাম, সেটি হলো বৈশ্বিক সিনেমার এই উৎসবের মূল ক্যানভাসে নিজেকে আঁকতে চাই। আমি ছোট-বড় প্রত্যেক শিল্পীকে বলবো, আপনারা নিজ আগ্রহ থেকে হলেও একবার আসুন এখানে। দেখে যান, পৃথিবীর চলচ্চিত্র কোথায়, কেমন আছে। সেই মানুষগুলো দেখতে কেমন। তাদের কাজের প্রক্রিয়া বা ধরন কেমন। আপনি যদি নিজেকে সিনেমা ও শিল্পের মানুষ মনে করেন, তাহলে এখানে আপনাকে আসতেই হবে। হতে পারে, শুরুতেই আপনি উৎসবের অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড পাবেন না। কারণ, শিল্পী হিসেবে কিংবা সিনেমার মানুষ হিসেবে আপনাকে তো প্রমাণ করতে হবে নিজেকে। তারপর ভিসা প্রক্রিয়া। তারপর কানসৈকতের দেখা। ফলে বিষয়টি অত সহজ নয়। সেক্ষেত্রে আমি ভাগ্যবান, প্রথমবারই শিল্পী হিসেবে কানের ভিসা পেয়েছি এবং প্রাণভরে উপভোগ করছি।’

স্বপন আহমেদ এদিকে বাংলাদেশের নির্মাতা স্বপন আহমেদ, যিনি ফরাসি নাগরিকও বটে। তিনি জানালেন, এবারের উৎসবে বাংলাদেশের মিটিমিটি বাতি আরও উজ্জ্বল হয়ে জ্বলছে। একদশক ধরেই তিনি এই উৎসবে অংশ নিচ্ছেন নানান পরিচয়ে। এবারও এসেছেন। কেমন দেখছেন এবারের উৎসব? জবাবে ‘লালটিপ’ নির্মাতা বললেন, ‘এবারের উৎসব জমেনি। জমার কথাও নয়। কারণ ফরাসি সরকারের পূর্ণ মনোযোগ এবার অলিম্পিক নিয়ে। অলিম্পিকে মন দিতে এবারের কান উৎসবের বাজেট কমানো হয়েছে প্রায় তিন গুণ। ফলে উৎসব জমে ওঠার মতো যে বৈশ্বিক তারকা কিংবা পরিকল্পনা প্রয়োজন, সেসব এবার উৎসব কর্তৃপক্ষ করতে পারেনি বলেই আমার মনে হচ্ছে। তবে আশার কথা এবার কিন্তু বাংলাদেশ আরও একধাপ এগিয়ে। ক্রিটিকস’ উইকে আমাদের দুই কো-প্রডিউসার এবং ফিপরেসিতে একজন বিচারক আছেন আমাদের। এর বাইরে আরও অনেকেই এসেছেন এবার। এই সংখ্যা আরও বাড়বে সামনে, সেই আলোর আভাস দেখতে পাচ্ছি।’

৭৭তম কান চলচ্চিত্র উৎসবের পর্দা উঠেছে ১৪ মে কিংবদন্তি মার্কিন অভিনেত্রী মেরিল স্ট্রিপের হাত ধরে। পর্দা নামবে ২৫ মে।

/জেএইচ/
সম্পর্কিত
ঈদে আসছে ‘মিশন মুন্সিগঞ্জ’
ঈদে আসছে ‘মিশন মুন্সিগঞ্জ’
১৩ বছরের প্রেমের সফল পরিণতি
১৩ বছরের প্রেমের সফল পরিণতি
আমার ক্যারিয়ারে এটি অন্যমাত্রা যোগ করেছে: ভাবনা
ফিরে দেখা ২০২৪, পরিকল্পনা ২০২৫আমার ক্যারিয়ারে এটি অন্যমাত্রা যোগ করেছে: ভাবনা
এবার কান-আবাসিকে সুযোগ পেলেন তারা
এবার কান-আবাসিকে সুযোগ পেলেন তারা
বিনোদন বিভাগের সর্বশেষ
কয়েদির পোশাকে সিনেমা হলে শতাধিক ভক্ত!
কয়েদির পোশাকে সিনেমা হলে শতাধিক ভক্ত!
বিয়ে ‘বিতর্ক’ নিয়ে মুখ খুললেন শাবানা!
বিয়ে ‘বিতর্ক’ নিয়ে মুখ খুললেন শাবানা!
ছোটবেলা থেকেই আমি সিয়ামের ফ্যান: নৈঋতা
ছোটবেলা থেকেই আমি সিয়ামের ফ্যান: নৈঋতা
১৯ পদে লড়ছেন ৩৮ জন অভিনয়শিল্পী
১৯ পদে লড়ছেন ৩৮ জন অভিনয়শিল্পী
এবার যুক্তরাষ্ট্রে ‘দাগি’
এবার যুক্তরাষ্ট্রে ‘দাগি’