X
রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫
৭ বৈশাখ ১৪৩২

শচীন টেন্ডুলকারকে নিয়ে শ্রাবণ্যর আক্ষেপ!

সুধাময় সরকার
১৪ ডিসেম্বর ২০১৯, ১৯:১৬আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০১৯, ২১:৩৪

শচীন টেন্ডুলকারকে নিয়ে বেশ আক্ষেপ জমে আছে শ্রাবণ্য তৌহিদার মনে! তাও আবার সেই আক্ষেপের সুর ঝরলো হোম অব ক্রিকেট গ্রাউন্ডে বসে, চলমান বিপিএল আসরের ফাঁকে।

শচীন টেন্ডুলকারকে নিয়ে শ্রাবণ্যর আক্ষেপ! তৃতীয়বারের মতো এই আসরের অন্যতম উপস্থাপক হিসেবে কাজ করছেন শ্রাবণ্য তৌহিদা। এবার তিনি বেসরকারি টিভি চ্যানেল জিটিভি’র প্রতিনিধি হয়ে কাজ করছেন। রোজ মাঠ অথবা স্টুডিও থেকে তিনি প্রতিটি ম্যাচের চুলচেরা বিশ্লেষণ করছেন, সঙ্গে থাকছে বিশেষজ্ঞ অতিথি। মূলত এসব নিয়েই বাংলা ট্রিবিউন-এর সঙ্গে কথা হলো সময়ের অন্যতম স্পোর্টস সঞ্চালক শ্রাবণ্য তৌহিদার।
বাংলা ট্রিবিউন: বিপিএল-এ তিনবার। কাজটা তো প্রায় একই। একঘেঁয়ে লাগে না! কিংবা প্রতিদিন একই কাজ করতে গিয়ে চাপ হয়ে যাচ্ছে না?  
শ্রাবণ্য তৌহিদা: একদমই না। বিষয়টা হচ্ছে ক্রিকেট আপনি কতটুকু উপভোগ করেন এবং বোঝেন। উপভোগ করেন না, আবার বোঝেনও কম কম, তাহলে তো এই বিশ্লেষণের কাজটি কঠিন হয়ে যাবে। আমি পুরো বিষয়টাকেই প্রচণ্ড উপভোগ করি। একেবারে বল টু বল।
হ্যাঁ, এমন অনেকেই আসেন এখানে। এসেই ঝলক দেখান। এরপর কিছু ভুল করেন। নেতিবাচকভাবে ভাইরাল হন! এবং চলেও যান। এই সংখ্যাটাও কিন্তু কম নয়। যাদের বেশিরভাগই মনে করেন, এটা খুবই সহজ কাজ! 
শ্রাবণ্য তৌহিদা বাংলা ট্রিবিউন: এবারের আসরেও অলমোস্ট একই কাজ আপনার। ম্যাচ বিশ্লেষণ। তৃতীয়বারের মতো করছেন। আপনার জন্য তো এখন আর জটিল কিছু নয়। সহজই!
শ্রাবণ্য তৌহিদা:
দেখুন পুরো বিষয়টা হচ্ছে ইনফরমেশন বেইজড। এখানে গাল-গল্পের কোনও সুযোগ নেই। চিত্রনাট্যও ফলো করতে পারি না আমরা। ম্যাচ শেষে পুরো ম্যাচ নিয়ে অতিথির সঙ্গে হেড টু হেড আলাপ করতে হয়। ফলে আমাকে পুরো ম্যাচটি বল টু বল স্টাডি করতে হয়। কাজটি জটিল, তবে এনজয়েবল। ক্রিকেটকে ভালো না বেসে কাজটা জমবে না।
বাংলা ট্রিবিউন:
যাই বলুন না কেন, এবার কিন্তু আগের মতো বিপিএল জমছে না!
শ্রাবণ্য তৌহিদা: প্রথম দিনের প্রথম ম্যাচটা দেখে আমি বিমর্ষ হয়ে পড়ি। তবে পরের ম্যাচগুলোতে দর্শক ভালো ইনক্রিজ করেছে। দিন যত যাচ্ছে দর্শকের আগ্রহ বাড়ছে। এটা একটা পজিটিভ দিক।
বাংলা ট্রিবিউন: তবুও এবার যেন কোনও একটি দিকে ঘাটতি আছে...
শ্রাবণ্য তৌহিদা: হ্যাঁ, আগের মতো এবার এখনও জমেনি। কারণ, ওভারসিস প্লেয়ারদের এবার আমরা তেমন পাইনি। মনে আছে, এর আগে প্রথম দিন থেকেই আমরা মাঠে পেয়েছি ডেভিড ওয়ার্নার, ক্রিস গেইল, এবি ডি ভিলিয়ার্স, স্টিভেন স্মিথদের মতো তারকা প্লেয়ারদের। যাদেরকে আমরা এবার শুরু থেকে পাইনি। এর বাইরেও আমি মনে করি এবারের আসরের সবচেয়ে বড় মাইনাস সাকিব আল হাসান। এমন একজন প্লেয়ার নিষিদ্ধ, তার প্রভাব তো গ্যালারিতে পড়বেই।
আরেকটা বিষয়, এ বছর কিন্তু দুটো বিপিএল হচ্ছে। এটাও মাথায় রাখতে হবে। ফ্রাঞ্চাইজি সিস্টেমেও পরিবর্তন এসেছে।
বাংলা ট্রিবিউন: আপনার উপস্থাপনা ক্যারিয়ার মাত্র পাঁচ বছরের। এরমধ্যে তিনটি বিপিএল কাভার করলেন! প্রাপ্তিটা একটু বেশি হলো না! নাকি যোগ্য উপস্থাপক সংকট?
শ্রাবণ্য তৌহিদা: সংকটের কথা জানি না, তবে প্রাপ্তিটা বেশিই। আমি সৌভাগ্যবান। মনে পড়ে আমার শুরুর কথা। এই তো সেদিন।
২০১৪ সালের সেপ্টেম্বর মাস। চ্যানেল ২৪ এর লাইফ স্টাইল নিয়ে একটা শো করতাম আমরা তিন উপস্থাপক। এরমধ্যে লাইভ একটি বিভাগ ছিল। অনেকেই বলতেন তখন, লাইভ সম্প্রচারের সময় আমি বেশ কনফিডেন্ট থাকি। যেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এরপর ২০১৫ সালের বিশ্বকাপ আসরের জন্য জিটিভি উপস্থাপক খুঁজছিলো। গেলাম। টিকে গেলাম। সেই থেকে শুরু আমার ক্রিকেট লাইভ শো। শ্রাবণ্য তৌহিদা বাংলা ট্রিবিউন: আগে তো ভুলেও খেলা দেখতেন না? না মাঠে না টিভিতে...
শ্রাবণ্য তৌহিদা:
একদম বাজে কথা। আমি নিজে তো খেলা দেখিই, পুরো পরিবারকেও দেখাই। আমি ভাগ্যবান, ছোটবেলায় খেলা দেখতাম ভাইয়ার সঙ্গে। এখন হাজবেন্ডকে দেখি খেলার পোঁকা। সে এলার্ম দিয়ে ভোর রাতে উঠে লিগের খেলা দেখে। সঙ্গে আমাকেও টেনে তোলে। পুরো খেলা পাগল ফ্যামিলি।
বাংলা ট্রিবিউন:
এই যে ঘরে ও মাঠে খেলার মধ্যে ডুবে আছেন, পরিবারসহ। চলতি সিরিজেও টানা এক মাস থাকতে হচ্ছে মাঠে।  চিকিৎসা বিদ্যার কী অবস্থা! ছেড়ে দেননি তো?
শ্রাবণ্য তৌহিদা: একদমই না। প্রশ্নই আসে না। এই চিকিৎসা বিদ্যার জন্য নাটক-সিনেমা-বিজ্ঞাপন বহু কিছু ছেড়েছি। মানে এখনও ছাড়ছি প্রতিনিয়ত।
ঢাকা মেডিকেলে আছি। এফসিপিএস (মেডিসিন) এর লাস্ট পার্ট বাকি আছে। এটা শেষ করলেই আমার শেষ। আরও আগেই শেষ হতো। মাঝে এক বছরে গ্যাপ পড়েছে বাচ্চার জন্য।
শ্রাবণ্য তৌহিদা বাংলা ট্রিবিউন: নাটক-সিনেমা ছেড়েছেন ডাক্তারি পড়ার জন্য!
শ্রাবণ্য তৌহিদা: যেমন সর্বশেষ একটা উদাহরণ দেই। ‌‘মিশন এক্সট্রিম’ ছবিটির অফার ফেরাতে হয়েছে আমাকে। নিশ্চয়ই জানেন, এটা অনেক বড় ক্যানভাসের একটি ছবি। প্রস্তাব পাওয়ার পর আমারও তো লোভ হয়েছে। কিন্তু সেটি করিনি। কারণ, আমি চাইনি ঢাকা মেডিকেল ও সংসার থেকে ছিন্ন হতে। কারণ, নাটক-সিনেমার শুটিং মানেই টানা তিন দিন থেকে কয়েক মাস ঘরের বাইরে যাওয়া। আমি সেটা করতে প্রস্তুত নই। ডে লাইট আমার ব্যক্তিজীবনের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ।
বাংলা ট্রিবিউন: তাহলে এখন! প্রতিদিন মাঠে-স্টুডিওতে কাটছে কিভাবে।
শ্রাবণ্য তৌহিদা: প্রথমত এটা আমার পুরনো কাজ। তাছাড়া এটার জন্য আমাকে সারাদিন আটকে থাকতে হচ্ছে না। আমি ঠিকই সকালে ঢাকা মেডিকেল ঘুরে আসছি। পরিবারকে যথেষ্ট সময় দিতে পারছি। যেটা নাটক-সিনেমার শুটিংয়ে সম্ভব নয়।
তবুও তো নাটক করছি। গেল পাঁচ বছরে ৫টি কাজ করেছি। আসছে ঈদেও করবো। তবে সিনেমা নয়। এখনই নয়।
বাংলা ট্রিবিউন: জীবনের লক্ষ্য তাহলে কী! সেরা উপস্থাপক, সেরা চিকিৎসক, সেরা অভিনেত্রী-মডেল নাকি...
শ্রাবণ্য তৌহিদা: থামেন। আমি আসলে সেরা চিকিৎসকই হতে চাই। এটাই আমার মূল লক্ষ্য। পাশাপাশি খেলা যেহেতু ভালোবাসি, উপস্থাপনায় পাঁচ বছর কাটিয়ে দিলাম- সো এই কাজটা বাঁচিয়ে রাখতে চাই। আর কিছু না।
বাংলা ট্রিবিউন: আলাপের শেষের দিকে। এই সস্তা প্রশ্নটি এমনি এমনি করা। উত্তর দামি হলে প্রকাশ হতে পারে। এই যে উপস্থাপনার দৌলতে দেশ ও বিশ্ব-তারকাদের সঙ্গে হরহামেশা দেখা হয়, কথা হয়। তারমধ্যে অন্যতম কাউকে মনে ধরেছে? ক্রিজের বাইরেও যার চলন-বলন-লাইফস্টাইল আপনাকে মুগ্ধ করে।
শ্রাবণ্য তৌহিদা: শচীন টেন্ডুলকার। তিনিই আমার সবচেয়ে পছন্দের মানুষ ও প্লেয়ার। খুব আক্ষেপ হয়, এই মানুষটাকে আমি এক দিনের জন্যেও মাঠে পাইনি। এই আফসোসটুকু আমাকে সবসময় জ্বালায়। মনে হয়, আরও আগে কেন আমার জন্ম হয়নি।   
বাংলা ট্রিবিউন: আপনাকে ধন্যবাদ।
শ্রাবণ্য তৌহিদা: শেষ উত্তরটি প্রকাশ হবে তো! শ্রাবণ্য তৌহিদা

/এমএম/
সম্পর্কিত
বিনোদন বিভাগের সর্বশেষ
নতুন নেতৃত্বে অভিনয়শিল্পী সংঘ
নতুন নেতৃত্বে অভিনয়শিল্পী সংঘ
কয়েদির পোশাকে সিনেমা হলে শতাধিক ভক্ত!
কয়েদির পোশাকে সিনেমা হলে শতাধিক ভক্ত!
বিয়ে ‘বিতর্ক’ নিয়ে মুখ খুললেন শাবানা!
বিয়ে ‘বিতর্ক’ নিয়ে মুখ খুললেন শাবানা!
ছোটবেলা থেকেই আমি সিয়ামের ফ্যান: নৈঋতা
ছোটবেলা থেকেই আমি সিয়ামের ফ্যান: নৈঋতা
১৯ পদে লড়ছেন ৩৮ জন অভিনয়শিল্পী
১৯ পদে লড়ছেন ৩৮ জন অভিনয়শিল্পী