উচ্চশিক্ষার প্রতিবন্ধকতা দূর করতে পদ্ধতিগত পরিবর্তনের উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. সি আর আবরার।
শনিবার (২৬ এপ্রিল) সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটির সমাবর্তনে তিনি এ উদ্যোগের কথা জানান। রাজধানীর বেইলি রোডে অফিসার্স ক্লাবে সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটির তৃতীয় সমাবর্তন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন উপদেষ্টা।
ড. সি আর আবরার বলেন, ‘সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটির কনভোকেশনে যোগদান করে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। নারীদের শিক্ষায় অগ্রগতি হিসেবে এটি একটি বড় মাইলফলক।’
তিনি বলেন, ‘সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটি অবস্থানের দিক থেকে এমন একটি স্থানে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে যেখানে পুরান ঢাকার বিশাল জনগোষ্ঠীর নারীদের উচ্চ শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি করেছে।’
উপদেষ্টা বলেন, ‘আজকের এই সমাবর্তন অনুষ্ঠান এমন সময় হচ্ছে যখন আমরা অধিকার বিবর্জিত প্রজন্মকে অধিকার সমৃদ্ধ নাগরিকত্ব ফিরিয়ে দিতে পেরেছি। যা সম্ভব হয়েছে হাজারও তাজা প্রাণের আত্মত্যাগের বিনিময়ে। আমি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি একাত্তরে যারা শহীদ হয়েছেন, এদেশে বিভিন্ন সময়ে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে যারা জীবন দিয়েছেন এবং ২৪ এর অভ্যুত্থানে যারা শহীদ হয়েছেন। যাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি, সেই দীপ্ত অঙ্গীকার নিয়ে আমরা এগিয়ে যেতে চাই। শিক্ষকরা যে প্রজ্ঞা ও নিষ্ঠা দিয়ে ভবিষ্যৎ নাগরিকদের কারিগর হিসেবে তুলেছেন সে জন্য তাদের অভিনন্দন।’
তিনি বলেন, ‘উচ্চশিক্ষায় যে প্রতিবন্ধকতাগুলো রয়েছে, সেই প্রতিবন্ধকতাগুলো দূর করার একটি পদ্ধতিগত পরিবর্তনের উদ্যোগ আমরা শুরু করবো এবং সেটাকে বাস্তবায়নের দিকেও নিয়ে যাবো। আশা করি সব অংশীদার-পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে আমরা বিশবিদ্যালয় পরিচালনার ক্ষেত্রে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে পারবো।’
অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে উপদেষ্টা বলেন, ‘যে আশা নিয়ে আপনার সন্তানকে এই প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করেছেন, আমি আশা করি আপনাদের সন্তানরা সেই আশার আলো দেখাবে এবং ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়ার জন্য নিজেদের নিয়োজিত করবে।’
তিনি স্নাতকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘বর্তমান শিল্প বিপ্লবের এই যুগে একদিকে যেমন প্রযুক্তির উৎকর্ষতা ও নতুন সম্ভাবনা রয়েছে, অন্যদিকে রয়েছে নানাবিধ চ্যালেঞ্জ। এগুলো তোমাদের মোকাবিলা করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। আমি এমন এক শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলার ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করে যেতে চাই, যেখানে সামগ্রিক উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে সৃষ্টি হবে আত্ম-উন্নয়নের পথ। যা হবে আর্থসামাজিক উন্নয়নে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উৎকর্ষে সহায়ক। যা হবে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে মূল্যবোধ সম্পন্ন নাগরিক অধিকার।’
সি আর আবরার আরও বলেন, ‘আমি এমন শিক্ষা ব্যবস্থার স্বপ্ন দেখি, যেখানে আমাদের ছাত্র-ছাত্রীরা দেশের ভেতরেই তাদের ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে পারে, বাংলাদেশ থেকে শিক্ষার্থীরা পুরো বিশ্বকে নেতৃত্ব দিতে সক্ষম হবে।’
অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্তা ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। বিশেষ অতিথি ছিলেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ। ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যরা, ভিসি, প্রোভিসি, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাও উপস্থিত ছিলেন।