এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ হওয়া পরীক্ষার্থীরা অটো পাসের দাবিতে চেয়ারম্যানকে আট ঘণ্টা অবরুদ্ধ রাখার পর ঢাকা শিক্ষা বোর্ড প্রাঙ্গণ ছেড়েছেন শিক্ষার্থীরা। রাত সাড়ে ৯টার পর অবরোধ তুলে নিয়ে শিক্ষা বোর্ড থেকে চলে যান তারা। রাত পৌনে ১০টায় চেয়ারম্যানসহ কর্মকর্তারা নিরাপদে কার্যালয় থেকে বেরিয়ে যান।
এ বিষয়ে রাত সাড়ে ৯টার পর ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, কিছুক্ষণ আগে অবরোধ তুলে নিয়ে ছাত্ররা এখান থেকে চলে গেছে।
পদত্যাগের বিষয়ে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান বলেন, সরকারি চাকরিতে এভাবে পদত্যাগ সঠিক হয় না। মন্ত্রণালয় আমাদের প্রেষণ প্রত্যাহার করতে পারে। আমি ছাত্রদের বলেছি আমি পদত্যাগ করছি, দেখো মন্ত্রণালয় তোমাদের অটো পাস দেয় কি না।’
রবিবার (২০ অক্টেবার) ২০২৪ সালের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ পরীক্ষার্থী ও বহিরাগত শিক্ষার্থীরা অটো পাসের দাবিতে বিক্ষাভ শুরু করেন। বেলা দেড়টার দিকে প্রধান ফটকের তালা ভেঙে শিক্ষা বোর্ডের ভেতরে ঢুকে চেয়ারম্যানের অফিস ভাঙচুর করেন। এ সময় তারা চেয়ারম্যানকে অবরুদ্ধ করেন। এতে অন্য কর্মকর্তারাও অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন।
জানা গেছে, দুপুরে শিক্ষা বোর্ডের প্রবেশের সময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। এতে তিন ছাত্রীসহ ছয়জন আহত হন। তাদের মধ্যে দুজন ঢাকা মেডিক্যালে চিকিৎসা নিয়েছেন। তারা হলেন প্রিয়াঙ্কা (১৮) ও জান্নাতুল (১৮)।
গত ১৫ অক্টোবর এইচএসসি-সমমানের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বলছেন, ইতোমধ্যে যে ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে, তা বৈষম্যমূলক। এ জন্য তারা সব বিষয়ের ওপর ‘ম্যাপিং’ করে ফলাফল নতুন করে প্রকাশের দাবি জানাচ্ছেন।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, প্রকাশিত ফলাফল বৈষম্যমূলক। সব কটি বিষয়ের ওপর সাবজেক্ট ম্যাপিং করে ফল প্রকাশ করতে শিক্ষা বোর্ডকে বলেছি। আমরা এসএসসি পরীক্ষায় পাওয়া নম্বরের ভিত্তিতেই সব বিষয়ের ওপর সাবজেক্ট ম্যাপিং করার দাবি জানাই।
প্রসঙ্গত, কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতার কারণে গত ১৮, ২১, ২৩ ও ২৫, ২৮ জুলাই এবং ১ ও ৪ আগস্টের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। সবশেষে ১১ সেপ্টেম্বর থেকে নতুন সময়সূচি প্রকাশ করে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড। এরপর অবশিষ্ট পরীক্ষা না নেওয়ার দাবি করেন পরীক্ষার্থীরা। আর অটো পাস ঘোষণা না দিয়ে সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে ফলাফল ঘোষণার দাবি জানান পরীক্ষার্থীরা। পরে অবশিষ্ট পরীক্ষাগুলো আর না নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। যেসব বিষয়ে পরীক্ষা হয়নি, সেগুলোর ক্ষেত্রে সাবজেক্ট ম্যাপিং হবে।
গত ১৫ অক্টোবর ফল প্রকাশিত হয়। এবার পরীক্ষায় মোট অংশ নেন ১৩ লাখ ৩১ হাজার ৫৮ জন। তাতে অকৃতকার্য হন ২ লাখ ৯৫ হাজার ৭৪৯ পরীক্ষার্থী। সাবজেক্ট ম্যাপিয়ে সব বিষয় পাস করলেও পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ হন এসব পরীক্ষার্থী।
আরও পড়ুন:
সাড়ে ৭ ঘণ্টা অবরুদ্ধ ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান, পদত্যাগের ঘোষণা
অটো পাসের দাবিতে ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও কর্মকর্তারা অবরুদ্ধ