X
রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫
৭ বৈশাখ ১৪৩২

পিএইচডি’র অনুমতি নাম দেখে দেওয়া হবে না: অধ্যাপক বিশ্বজিৎ চন্দ

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
১৫ জুলাই ২০২৪, ২০:৫৪আপডেট : ১৬ জুলাই ২০২৪, ১৩:২০

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ বলেছেন, শর্ত পূরণ সাপেক্ষেই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে পিএইচডি করানোর অনুমতি দেওয়া হবে। যারা শর্ত পূরণ করবে তারাই পাবে। পিএইচডি করার অনুমতি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম দেখে দেওয়া হবে না।

দেশের শীর্ষস্থানীয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলা ট্রিবিউনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত ‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডির নীতিমালা’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।

সোমবার (১৫ জুলাই) বিকালে রাজধানীর ডেইলি স্টার সেন্টারে শুরু হয় বাংলা ট্রিবিউনের এই আয়োজন। এতে সভাপতিত্ব করেছেন বাংলা ট্রিবিউন সম্পাদক জুলফিকার রাসেল।

নীতিমালায় কী থাকতে পারে তা তুলে ধরে অনুষ্ঠানে ইউজিসি’র সদস্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ বলেন, ‘একটি চেকলিস্ট থাকবে। চেকলিস্টের বক্সগুলো যারা পূরণ করতে পারবে, তারাই পাবে (পিএইচডি করার অনুমতি), বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম দেখে দেওয়া হবে না, দেওয়ার সুযোগ থাকবে না। ইউজিসি’র ক্ষমতাও সেখানেই সীমাবদ্ধ হয়ে যাবে। যেহেতু চেকলিস্টের বিষয়টা থাকবে; কোর্স লোড কতটা হবে, পাবলিকেশন বেইজড হলে ভালো হয় কিনা সেটা নিয়ে আমরা এক্সপার্টদের নিয়ে আলোচনা করবো। যেসব বিশ্ববিদ্যালয় সুনাম অর্জন করেছে, সুনামটা একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হবে। ঠিক তারাই পাবে যারা চেকলিস্টের বক্সগুলো পূরণ করতে পারবে। যাদের নামে সনদ বাণিজ্যের অভিযোগ ছিল, তারা বিবেচিত হবে না। অভিযোগ প্রমাণিত হলে কখনোই পাবে না, যতদিন পর্যন্ত নির্দোষ প্রমাণিত হবে ততদিন পর্যন্ত পাবে না।

পুরো বিশ্ববিদ্যালয়কে অনুমোদন দেওয়া হবে না, বিভাগের সামর্থ্য বিবেচনা করা হবে, গবেষণায় যাদের অবদান আছে। যাদের যেসব বিভাগের সেই সামর্থ্য আছে, সেসব বিভাগই পাবে।

বিশ্বজিৎ চন্দ আরও বলেন, ‘যেসব বিশ্ববিদ্যালয় পিএইচডি দিচ্ছে সেসব পিএইচডি’র আমাদের সমাজে বাজার-চাহিদা আছে কিনা সেটা দেখা হবে। পাশাপাশি যেসব বিশ্ববিদ্যালয় ন্যূনতম কোয়ালিটি অনুসরণ করছে না তাদের বাদ দেওয়ার সুপারিশ করা হবে। কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও বিভাগের রিসোর্স ও সুযোগ-সুবিধা থাকলে তাদের এগিয়ে নেওয়া যেতে পারে, কিন্তু দুর্বল বিশ্ববিদ্যালয়কে পিএইচডির দায়িত্ব দিয়ে এগিয়ে নেওয়ার ইচ্ছে আমাদের থাকবে না। যাদের সামর্থ্য আছে তারাই এই প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবে।’

অধ্যাপক বিশ্বজিৎ চন্দ বলেন, ইউজিসির ক্ষমতায়ন জরুরি, কিন্তু যে আইন আছে সেটারও চর্চা অনেক সময় হয় না। আইন প্রয়োগের দৃষ্টিভঙ্গি বা চর্চাটাও দেখতে হবে। বর্তমান আইন অ্যাকাডেমিক ক্ষেত্রে অনেকে শক্তিশালী। দুর্নীতি করলে সেটা হয়তো মিনিস্ট্রিতে পাঠাতে হবে। কিন্তু প্রোগ্রাম বা অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ করতে মিনিস্ট্রিতে যাওয়া লাগে না, ইউজিসিই পারে। ফলে কোনও বিশ্ববিদ্যালয় পিএইচডির অনুমতি পাওয়ার পর যদি নিয়মের তোয়াক্কা না করে তাহলে তাৎক্ষণিক আমরা বাতিল করতে পিছপা হবো না। কোনও পিএইচডি গবেষকের যদি ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে তাকে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে নেওয়া হবে। আপনারাই দায়বদ্ধ থাকবেন যারা অনুমতি পাবে। ইউজিসি যাতে বেশি খবরদারি না করে, আবার একেবারে নিয়ন্ত্রণহীনভাবে না চলে— সবখানে যাতে ব্যালান্স থাকে। শিক্ষক স্বল্পতা যেখানে রয়েছে সেখানে চিন্তা করার দরকার নেই। একই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক একই বিভাগে পিএইচডি না করতে নিরুৎসাহিত করবো।’

কারা পিএইচডি গবেষক হিসেবে ভর্তি হবেন এমন প্রসঙ্গে ড. বিশ্বজিৎ বলেন, ‘২০-৫০ জন ভর্তি হবে সে সুযোগ মোটেই থাকবে না। এখানে দেখতে হবে কেন পিএইচডি করবেন, আদৌ প্রয়োজন আছে কিনা? প্রয়োজন বুঝে করানো হবে। পিএইচডি থেকে যদি কোনও কন্ট্রিবিউশন না আসে, এমনকি একটি পাবলিকেশনও যদি না হয়, তাহলে তাদের ভর্তি করবেন কিনা তা বিশ্ববিদ্যালয়কে দেখতে হবে। নীতিমালায় এসব বিষয় থাকবে।’

অধ্যাপক বিশ্বজিৎ বলেন, ‘রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ যাতে না থাকে তা করা হবে। সহযোগিতামূলক নজরদারি থাকবে। সুপারভাইজরের যোগ্যতা নির্ধারণ করা থাকবে।’

ইন্ডাস্ট্রি-অ্যাকাডেমিয়ার কোলাবরেশন গুরুত্বপূর্ণ হবে এখানে। পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ, বিশেষ করে ফান্ডিংয়ের ক্ষেত্রে। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেটের শতকরা তিন ভাগ ন্যূনতম হতে হবে। প্রথমদিকে গবেষণায় উন্নয়ন করলে টিউশন ফি ধরা যাবে। প্রথম থেকেই টিউশন ফি’র চিন্তা থাকলে মনে হয় না ভালো ক্যান্ডিডেট পাবে। শুধু আলংকারিক পিএইচডি না হোক।’

বিশ্ববিদ্যালয় নিজেদের প্রয়োজনে নিজেরাই আন্ডার-গ্রাজুয়েট ও পোস্ট-গ্র্যাজুয়েট করার ক্ষেত্রে মান বজায় রাখবেন। ভর্তির ক্ষেত্রে যাচাই-বাছাই করে নিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়কে নিজেই দায়িত্ব নিতে হবে। পড়াশোনার চর্চা নেই এমন কাউকে দায়িত্ব দেওয়া যাবে না।

আরও পড়ুন

বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো প্রাইভেট: অধ্যাপক আবদুল মান্নান

বাজেটের তিন ভাগ গবেষণার জন্য থাকতে হবে

কোয়ালিটি নিয়ে ভয় পেলে হবে না:  অধ্যাপক ড. আবুল কাশেম মিয়া

পিএইচডি চালু হলে মানসম্পন্ন শিক্ষা ও সুপারভিশন সম্ভব হবে: অধ্যাপক ড. আবদুর রব খান

পিএইচডি নীতিমালায় প্রতারণা বিষয়ে ফ্রেমওয়ার্ক থাকা দরকার: অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খান 

পিএইচডি’র জন্য ইউজিসির গাইডলাইন খুবই জরুরি: অধ্যাপক শামস রহমান

পিএইচডি চালুতে সবার সামর্থ্য এক না: অধ্যাপক ইমরান রহমান

পিএইচডি’র জন্য গুণগত শিক্ষার প্রস্তুতি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আছে: ড. কামরুল আহসান

/এসও/এসএমএ/এমএস/এমওএফ/
সম্পর্কিত
ইউল্যাব ফেয়ার প্লে কাপ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট উদ্বোধন
ভারতীয়রা আমাদের বিরুদ্ধে যে প্রচারণা করছে সেগুলো খামোখা: সলিমুল্লাহ খান
গবেষণার মান বাড়াতে ইউজিসিকে তদারকির পরামর্শ
সর্বশেষ খবর
নির্বাচন যখনই হোক একটা রোডম্যাপ দেন: ফারুক
নির্বাচন যখনই হোক একটা রোডম্যাপ দেন: ফারুক
বাজারে এলো ক্লেমনের নতুন ভ্যারিয়েন্ট ‘ক্লেমন জিরো’
বাজারে এলো ক্লেমনের নতুন ভ্যারিয়েন্ট ‘ক্লেমন জিরো’
শাশুড়িকে বাংলার ‘বাঘিনী’ আখ্যা দিলেন কারিনা
শাশুড়িকে বাংলার ‘বাঘিনী’ আখ্যা দিলেন কারিনা
সার্ককে পুনরুজ্জীবনে কাজ করবে বাংলাদেশ ও নেপাল
সার্ককে পুনরুজ্জীবনে কাজ করবে বাংলাদেশ ও নেপাল
সর্বাধিক পঠিত
গাজীপুরে সেই দুই শিশুকে হত্যা করেছেন মা: পুলিশ
গাজীপুরে সেই দুই শিশুকে হত্যা করেছেন মা: পুলিশ
আ.লীগের ঝটিকা মিছিল, বিপাকে পুলিশ
আ.লীগের ঝটিকা মিছিল, বিপাকে পুলিশ
হিন্দু নেতা ভবেশ চন্দ্র রায় হত্যা: নিন্দা জানালো ভারত
হিন্দু নেতা ভবেশ চন্দ্র রায় হত্যা: নিন্দা জানালো ভারত
প্রধানমন্ত্রী নয়, মন্ত্রিপরিষদ শাসিত সরকার চায় এনসিপি: নাহিদ ইসলাম
প্রধানমন্ত্রী নয়, মন্ত্রিপরিষদ শাসিত সরকার চায় এনসিপি: নাহিদ ইসলাম
যেসব পদক্ষেপে ঘুরে দাঁড়ালো রিজার্ভ
যেসব পদক্ষেপে ঘুরে দাঁড়ালো রিজার্ভ