মৌলভীবাজারে ‘ভুল টার্গেটে’ আইনজীবী সুজন মিয়াকে মিসবাহ ভেবে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার (এসপি) এম কে এইচ জাহাঙ্গীর হোসেন। এই হত্যার মূল পরিকল্পনাকারীসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) দুপুরে মৌলভীবাজার পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান তিনি।
গ্রেফতাররা হলো- সদর উপজেলার বাসুদেবশ্রী এলাকার বাসিন্দা মূল পরিকল্পনাকারী নজির মিয়া মুজিব (২৫), রঘুনন্ধনপুর এলাকার বাসিন্দা মো. আরিফ মিয়া (২৭), দিশালোক এলাকার বাসিন্দা হোসাইন আহমদ সোহান (১৯), রাজনগর উপজেলার মাথিউরা চা বাগানের লক্ষণ নাইডু (২৩) ও নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া থানার বাসিন্দা আব্দুর রহিম (১৯)। গ্রেফতারদের আদালতে তোলা হয়েছে। সেখানে ১৬১ ধারায় জবানবন্দি শেষে আদালত তাদের কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
হত্যাকাণ্ডের পেছনের রহস্য উদঘাটন করা হয়েছে জানিয়ে পুলিশ সুপার বলেন, ‘মূল পরিকল্পনাকারী মুজিবের সঙ্গে পাশের বাড়ির ব্যাংকের সিকিউরিটি গার্ড মিসবাহর পূর্বশত্রুতা ছিল। তাকে “শিক্ষা” দিতে ভাড়াটিয়া খুনি নিয়োগ করে সে। পূর্বপরিচিত লক্ষণের মাধ্যমে এসব খুনিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং মোবাইলে টার্গেটের (মিসবাহর) ছবি পাঠায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘তবে মুজিব আইনজীবী সুজনকে মিসবাহ ভেবে ভুল করে ভিডিও কলে খুনিদের দেখিয়ে নিশ্চিত করে। এরপর ১০-১২ জন দুষ্কৃতকারী তার ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে হত্যা করে। ঘটনাটি ঘটে গত ৬ এপ্রিল রাত ১১টার দিকে, যখন সুজন মৌলভীবাজার পৌরসভা এলাকার ফুটপাতে চটপটির দোকানের পাশে বসে ছিলেন।’
এসপি বলেন, ‘এ ঘটনায় ৮ এপ্রিল মৌলভীবাজার সদর মডেল থানায় নিহতের ভাই এনামুল হক সুমন বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেন। মামলার পর সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় গত বুধবার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে মূল পরিকল্পনাকারীসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়।’
তিনি বলেন, ‘বাকি পলাতক আসামিদের পরিচয় শনাক্ত করা হয়েছে। মামলার স্বার্থে তাদের নাম প্রকাশ করছি না। তাদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) নোবেল চাকমা, সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গাজী মো. মাহবুবুর রহমান, জেলা গোয়েন্দা শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাফর হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
আইনজীবী সুজন মৌলভীবাজার শহরতলির পূর্ব হিলালপুর গ্রামের বাসিন্দা। প্রায় ৭-৮বছর ধরে তিনি জেলা জজ আদালতে আইন পেশায় ছিলেন। সাত মাস আগে সুজন মিয়ার বিয়ে হয়েছিল। তবে স্ত্রীকে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘরে তোলা হয়নি।
আরও পড়ুন: