টানা তিন দিন বিক্ষোভের পর অবশেষে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের সাতটি দাবির মধ্যে কয়েকটি মেনে নেওয়ায় আপাতত আন্দোলন স্থগিত করেছেন শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক শেষে এ সিদ্ধান্ত জানান আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এর আগে সকাল থেকে প্রক্টর ও রেজিস্ট্রারের পদত্যাগসহ সাত দফা দাবিতে তৃতীয় দিনের মতো ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে বিক্ষোভ করেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে উত্তাল হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়।
এর আগে সোমবার (২৮ অক্টোবর) বেলা ১১টা থেকে বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত ভিসি, শিক্ষক, কর্মকর্তাদের সঙ্গে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের প্রায় ছয় ঘণ্টা বৈঠক হলেও দাবি আদায়ে কোনও সুরাহা হয়নি।
সেজন্য তারা প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগ চেয়ে প্রশাসনিক ও একাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আলিমুল ইসলাম বলেন, ‘সংঘর্ষের ঘটনা তদন্তকালে প্রক্টর দায়িত্ব পালন করবেন না। তবে শিক্ষার্থীদের দাবি ছিল প্রক্টরের পদত্যাগ, সেটিও আমরা তদন্ত করে দেখবো। এরপর তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী সোহেল আহমদ বলেন, ‘আমাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে প্রক্টর তদন্তকালীন সময়ে দায়িত্ব পালন করবেন না। প্রক্টরের পদত্যাগের বিষয়টি তদন্ত করে দেখবে বলেছে প্রশাসন।’
তিনি বলেন, ‘আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের হেনস্তা কিংবা তাদের বিরুদ্ধে কোনও তদন্ত হবে না। যে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের হয়রানি করবেন তার বিরুদ্ধ ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়েছে প্রশাসন। আমরা বলেছি, এসব প্রজ্ঞাপন আকারে প্রকাশ করার জন্য। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা ও প্রক্টর ক্ষমা চেয়েছেন আমাদের কাছে। তবু প্রশাসন বিষয়টি দেখবে বলে আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন।’
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, গত ২৪ অক্টোবর ছাত্রদলের নেতাকর্মী ও বহিরাগতদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পরদিন শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) শ্রেণির গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পাশাপাশি বিভিন্ন গণমাধ্যমে শিক্ষার্থীদের জড়িয়ে যে বক্তব্য দেওয়া হয়েছে, তা অপমানজনক। এসব কারণে শনিবার থেকে বিক্ষোভ করেন তারা।
এদিকে, সংঘর্ষের রাতেই কেন্দ্রীয় ছাত্রদল তাৎক্ষণিকভাবে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের কমিটিকে মেয়াদোত্তীর্ণ উল্লেখ করে বিলুপ্ত ঘোষণা করে। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাবেক এক নেতাকে সংগঠনের প্রাথমিক সদস্যপদ থেকে বহিষ্কার করার পাশাপাশি এই সংঘর্ষের প্রকৃত কারণ উদঘাটনে কেন্দ্রীয় কমিটি দুই সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে।