সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার জয়শ্রী ইউনিয়নের শীমের খাল নামক আশ্রয়ণকেন্দ্রে অগ্নিকাণ্ডে এক জেলে পরিবারের ৬ জনের মৃ্ত্যু হয়েছে। সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- জেলে এমারুল (৪৫), তার স্ত্রী পলি আক্তার (৩৫), তাদের ছেলে পলাশ (১০), ফরহাদ (৮), ফারুক (৩) ও মেয়ে ফাতেমা (৫)।
শীমের খাল আশ্রয়ণকেন্দ্রে ৩৪টি ঘরে ৫০ পরিবার বসবাস করে। ওই আশ্রয়ণকেন্দ্রের দক্ষিণ দিক থেকে তৃতীয় ঘরে এমারুল তার পরিবার নিয়ে বসবাস করার পাশাপাশি হাওরে মাছ ধরে জীবিকানির্বাহ করতেন। এমারুলের ঘরের আশপাশের অনেকগুলো ঘর ফাঁকা পড়ে আছে।
জানা যায়, সোমবার দিনের বেলায় এমারুল স্থানীয় বাজার থেকে ফল, মোরগের মাংস ও কেরোসিন কেনেন। এদিনই শ্বশুরবাড়ির লোকজনকে দাওয়াত দেন এবং রাতে একসঙ্গে খাবার খান। পরে রাত সাড়ে ১২টার দিকে অগ্নিকাণ্ডে তাদের মৃত্যু হয়। ঘরের ভেতর থেকে দরজা লাগানো থাকায় ধারণা করা হচ্ছে ভেতরেই অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়েছে।
এদিকে, মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) সকালে ধর্মপাশা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, ধর্মপাশা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আলী ফরিদ আহমেদ, ধর্মপাশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ এনামুল হক, জয়শ্রী ইউপি চেয়ারম্যান সঞ্জয় রায় চৌধুরী ঘটনাস্থলে যান। পরে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সুনামগঞ্জ পুলিশ সুপার (এসপি) আ ফ ম আনোয়ার হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
একই গ্রামের বাবুল মিয়া বলেন, ‘রাত সাড়ে ১২টার দিকে প্রতিবেশী কামালের ডাক শুনে এগিয়ে দেখি একরামুলের ঘরের ভেতরে আগুন জ্বলছে। পরে দরজা ভেঙে দেখা যায় সব পুড়ে ছাই।’
এমারুলের শ্বশুর চেরাগ আলী বলেন, ‘এমারুল ও তার স্ত্রীর মধ্যে টুকটাক ঝগড়াঝাঁটি হতো। তারা নিজেরাই আবার মীমাংসা করতো। তবে এমন কোনও ঝগড়া হয়নি যার জন্য এমন (আত্মহত্যা) হবে। কেন যে এমনটি হলো, তা ভেবে পাচ্ছি না।
এমারুলের মা তাসমিনা আক্তার ও বড় ভাই রাহাত আলী বলেন, ‘তাদের কোনও শত্রু ছিল না। কেন এমন ঘটনা ঘটেছে, তা বুঝতে পারছি না।’
সুনামগঞ্জ পুলিশ সুপার আ ফ ম আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘এই মর্মান্তিক ঘটনা কীভাবে ঘটলো, তা জানার চেষ্টা করছি। এর রহস্য উদঘাটনে অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ক্রাইম সিন ইউনিট ও পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশনও (পিবিআই) কাজ শুরু করেছে।’