ঘুষের টাকাসহ সুনামগঞ্জ জেলা ওষুধ তত্ত্বাবধায়কের কার্যালয়ের অফিস সহকারী মো. ফাহিম মিয়াকে আটক করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) দুপুরে জেলা ওষুধ তত্ত্বাবধায়কের কার্যালয় থেকে তাকে আটক করা হয়। এ সময় তত্ত্বাবধায়ক আবু জাফর কার্যালয়ে ছিলেন না।
ঘুষের টাকা দিতে আসা ভুক্তভোগী তাহিরপুর উপজেলার বড়ছরা এলাকার বাসিন্দা আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘এলাকায় আমার একটি ফার্মেসি আছে। এটির নিবন্ধনের জন্য ওই কার্যালয়ে যোগাযোগ করি। এজন্য আগে ঘুষের পরিমাণ ছিল ২০ হাজার টাকা। সেই অনুযায়ী, শুরুতে ১০ হাজার টাকা দিয়েছি। কিন্তু নিবন্ধনের কাগজপত্র নেওয়ার জন্য দুই দিন আগে যোগাযোগ করলে অফিস সহকারী ফাহিম মিয়া জানান, এখন পরিস্থিতি একটু অন্য রকম, বিভিন্ন জায়গায় বেশি টাকা দিতে হয়। তাই ঘুষের টাকার পরিমাণ আরও বাড়বে। আরও ১৫ হাজার টাকা করে দাবি করা হয়। সবশেষে ১০ হাজার টাকা দিতে রাজি হই। এতেও কাগজ দিতে রাজি না হওয়ায় বৃহস্পতিবার ১০ হাজার টাকা নিয়ে ওই কার্যালয়ে যাই। এর আগেই আমি শিক্ষার্থীদের বিষয়টি জানিয়ে রাখি। আমার কাছ থেকে ঘুষের টাকা নেন অফিস সহকারী ফাহিম মিয়া। টাকা নেওয়ার পরই সেখানে উপস্থিত হন শিক্ষার্থীরা। পরে শিক্ষার্থীরা টাকাসহ হাতেনাতে ফাহিম মিয়াকে আটক করেন।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠন ওসমান গনী বলেন, ‘আমরা ফাহিম মিয়াকে ঘুষের টাকাসহ আটক করেছি। জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করেছি। এ বিষয়ে তাদের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা হবে। ড্রাগ লাইসেন্স দেওয়ার জন্য একটি কমিটি আছে। কমিটির সদস্য হিসেবে জেলা প্রশাসনের একজন কর্মকর্তা, সিভিল সার্জন কার্যালয়ে একজন কর্মকর্তাসহ সদস্যদের ঘুষের টাকা ভাগ দিতে হয়; গত মাসে কাকে কত টাকা দিতে হয়েছে, তার একটা তালিকাও পেয়েছি আমরা।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ওষুধ প্রশাসন সুনামগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের তত্ত্বাবধায়ক মো. আবু জাফর বলেন, ‘আমার মা অসুস্থ, তাই ছুটিতে নিজের জেলা বগুড়ায় আছি। গত ২ মে সুনামগঞ্জে যোগদান করেছি। আমি ওই ঘুষের টাকার বিষয়ে কিছুই জানি না। সুনামগঞ্জ যোগদানের পর কাউকে ড্রাগ লাইসেন্সও দেওয়া হয়নি।’