উজানের ঢল না আসায় ও গত কয়েকদিন খুব বেশি বৃষ্টি না হওয়ায় সুনামগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হয়েছে। এতে তাহিরপুর উপজেলার টাংগুয়ার হাওর, যাদুকাটানদী, শিমুলবাগান, নীলাদ্রিলেক, নীলাদ্রি ঝরণা, লালঘাট ঝরনাসহ সাতটি পর্যটনকেন্দ্রে পর্যটকদের জন্য দেওয়া বিধিনিষেধ তুলে নিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।
রবিবার (২৩ জুন) বিকাল ৩টায় তাহিরপুর ইউএনওর ফেসবুক পেজে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। এর আগে বন্যা পরিস্থিতির জন্য পর্যটকদের আগমন নিষিদ্ধ করে উপজেলা প্রশাসন।
তাহিরপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আফতাব উদ্দিন জানান, বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি ও স্বাভাবিক অবস্থা বিরাজ করায় পর্যটনকেন্দ্রগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে। এখনও অতি নিম্নাঞ্চলের মানুষ রয়েছেন দুর্ভোগে। তাদের বাড়িঘর থেকে পানি ধীরে নামায় অনেকেই আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছেন। সুনামগঞ্জ শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে নেমেছে পানি। বানের পানিতে দীর্ঘ দিন তলিয়ে থাকা ঘর সংস্কারের টাকা না থাকায় অনেক বানভাসি মানুষ ঘরে ফিরতে পারছেন না।
বানভাসিরা জানান, বন্যার কারণে তাদের আয়রোজগার নেই। ঝোড়ো বাতাসে বিধ্বস্ত ঘরবাড়ি। তাই পানি নেমে গেলেও ঘরে ফিরতে পারছেন না। সদর উপজেলার পাঠানবাড়ি মাইজবাড়ি এলাকার শতাধিক বসতঘরের মধ্যে ৩০টি ঘর পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়েছে। নিম্ন আয়ের শ্রমজীবীরা ঘর সংস্কারের জন্য সরকারি ঢেউটিন ও আর্থিক সহায়তা না পাওয়ায় বসত ঘরে ফিরে যেতে পারছেন না। এটি শুধু পাঠানবাড়ি এলাকার মানুষের কথা নয়, জেলার সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ছাতক দোয়ারাবাজার, সদর, বিশ্বম্ভরপুর,শান্তিগঞ্জ পুরো জেলার নিম্নাঞ্চলের বন্যার্ত মানুষের কথা।
এদিকে জেলার পাঁচটি পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সুনামগঞ্জের ষোলঘর পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ২৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় দুই মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, অনুকূল আবহাওয়া ও উজানে বৃষ্টি না হওয়ায় দ্রুত পানি নেমে যাচ্ছে। অতি নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দারা বন্যার পানি নিরাপদ স্তর মেনে ঘরবাড়ি তৈরি করেননি, তাই তাদের ঘরবাড়ির পানি সরে যেতে দেরি হচ্ছে। আগামী ২/৩ দিনের মধ্যে অতি নিম্নাঞ্চলের পানিও নেমে যাবে।