বিনামূল্যে বিতরণের প্রায় ৯ হাজার বই বিক্রির উদ্দেশ্যে পাচারকালে শেরপুর থেকে জব্দের ঘটনায় কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের এক পিয়নকে আটক করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) বিকালে ওই পিয়নকে আটক করা হয়। রৌমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. লুৎফর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আটক পিয়নের নাম জামাল হোসেন (৪৬)। তিনি রৌমারী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের পিয়ন পদে কর্মরত। উপজেলার সিজি জামান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত দুটি কক্ষ বইয়ের স্টোর রুম হিসেবে ব্যবহার করে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস। সেই দুটি কক্ষের দায়িত্বে ছিলেন জামাল হোসেন। ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করেছে উপজেলা প্রশাসন।
এর আগে বুধবার (২২ জানুয়ারি) রাতে শেরপুর সদর উপজেলায় বইভর্তি একটি ট্রাক জব্দ করে পুলিশ। যেখানে সরকারিভাবে বিতরণের জন্য বরাদ্দকৃত মাধ্যমিক পর্যায়ের অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণির ৯ হাজার সরকারি বই পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে শেরপুর সদর থানা পুলিশ। বইগুলো কুড়িগ্রামের রৌমারী সিজি জামান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় চত্বর থেকে নেওয়া হয়েছিল বলে প্রাথমিক তথ্যের বরাতে জানায় শেরপুর থানা পুলিশ।
এসব তথ্য নিশ্চিত করে রৌমারী থানার ওসি লুৎফর রহমান বলেন, ‘শেরপুরে জব্দ বইয়ের সূত্র ধরে ওই থানা পুলিশকে সহযোগিতা করতে জামাল নামে এক পিয়নকে আটক করা হয়েছে। শেরপুর থানা পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে। ঠিক কোথায় থেকে বইগুলো নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, তা তদন্তে বের হয়ে আসবে।’ তদন্তের স্বার্থে এই মুহূর্তে আর বেশি কিছু বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন ওসি।
বই বহনকারী ট্রাকের চালক কিংবা সহকারীকে আটক ও জিজ্ঞাসাবাদ সম্পর্কে জানতে শেরপুর থানার ওসিকে একাধিকবার ফোন দিলেও রিসিভ করেননি।
এদিকে রৌমারী থেকে বই পাচারের ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি করেছে উপজেলা প্রশাসন। তবে কমিটিতে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের কোনও সদস্য রাখা হয়নি বলে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে জানতে রৌমারী ইউএনওর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। জেলা শিক্ষা অফিসার শামসুল আলম বলেন, ‘খবর পাওয়ার পর উপজেলা কর্মকর্তাকে বইয়ের স্টক মিলিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। কিন্তু উপজেলা প্রশাসন তদন্ত কমিটি করে দিয়েছে। তারা স্টক যাচাই করছেন। আমাদের কর্মকর্তাকে সেখানে রাখা হয়নি।’
সিজি জামান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘বইগুলো আমাদের স্কুলের জন্য বরাদ্দের নয়। কারণ আমরা প্রায় সব বই বিতরণ করেছি। তবে স্কুল চত্বরে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের বইয়ের স্টোর রুম রয়েছে। স্কুলের নৈশপ্রহরী জানিয়েছেন যে স্কুল চত্বরে কোনও ট্রাক প্রবেশ করেনি। এ ছাড়া স্কুল ক্যাম্পাস সিসি ক্যামেরা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। উপজেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটি বিষয়টি তদন্ত শুরু করছে।’