চীনে ছড়িয়ে পড়া এইচএমপিভি ভাইরাসে আক্রান্তের খোঁজ পাওয়া গেছে ভারতে। এর মধ্যে এবার পশ্চিমবঙ্গের কলকাতাতেও একজন আক্রান্ত বলে জানা গেছে। গত সোমবার পর্যন্ত ভারতে চার শিশু আক্রান্তের খবর পাওয়া গেলো। তবু এই সংক্রমণরোধে দিনাজপুরের হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে কার্যকরী কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। প্রতিদিন এই চেকপোস্ট দিয়ে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে হাজারো মানুষজন যাতায়াত করেন। ফলে ভারত থেকে ভাইরাসটি যাত্রীদের মাধ্যমে বাংলাদেশে আসতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট সূত্রে জানা গেছে, হিলি দিয়ে আগে ছয় শতাধিক পাসপোর্টযাত্রী দুই দেশে যাতায়াত করলেও বর্তমানে দুই শতাধিক যাত্রী যাতায়াত করছেন। কোনও ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই এই পথ দিয়ে দুই দেশে যাতায়াত করছেন তারা। পাশাপাশি বন্দর দিয়ে আমদানি-রফতানিকৃত পণ্য নিয়ে দুই দেশের ট্রাকচালক ও সহকারীরা চলাচল করছেন। ফলে ভাইরাসটি বাংলাদেশে ছড়ানোর আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
হিলি চেকপোস্ট এলাকার বাসিন্দা আশরাফুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘করোনার মতো চীনে ছড়িয়ে পড়েছে এইচএমপিভি ভাইরাস। ইতিমধ্যে ভারতেও ছড়িয়ে পড়ছে। মানুষজন আক্রান্ত হচ্ছেন। কলকাতাতেও আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে বলে শুনেছি। হিলি দিয়ে দুই দেশের মানুষ যাতায়াত করে। আবার যেসব পণ্য আমদানি-রফতানি হয় সেগুলোর বেশিরভাগ কলকাতা হয়ে আসছে এবং যাচ্ছে। ফলে যাত্রী ও পরিবহনচালকদের মাধ্যমে বাংলাদেশেও ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। কিন্তু হিলি চেকপোস্টে কোনও ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয় না। তাই ভাইরাসটি রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি।’
ভারত থেকে বাংলাদেশে ফেরা তানিয়া রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘কলকাতা থেকে চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরলাম। নতুন ভাইরাস সম্পর্কে সেখানেই শুনেছি। কিন্তু সংক্রমণরোধে ভারতেও এখনও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। আর আমাদের দেশের চেকপোস্টেও চোখে পড়েনি। করোনার সময়ে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, সেটি মাথায় রেখে আমাদের নিজেদের স্বার্থে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।’
হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ইলতুতমিশ আকন্দ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘নতুন ভাইরাসটি নিয়ে যেভাবে প্রচারণা চালানো হচ্ছে, সেটি এখনও অতটা ভয়ঙ্কর পর্যায়ে যায়নি। আপাতত আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। তবু বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। সবাই সতর্ক নজর রাখছেন। যদি প্রাদুর্ভাব দেখা দেয় সেক্ষেত্রে কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
তিনি বলেন, ‘যেহেতু ভারতে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে সেহেতু আমাদের দেশেও ছড়ানোর শঙ্কা আছে। এ বিষয়ে সতর্ক রয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। আপাতত করোনাকালীন সময়ের মতো জনসমাগম এড়িয়ে মাস্ক পরিধান করে চলাফেরা ও বারবার হাত-মুখ ধোয়ার অভ্যাস শুরু করতে পারি আমরা।’