গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার বোনারপাড়া খাদ্য গুদাম থেকে ১০০ মেট্রিক টন ধান, চাল ও গম চুরির ঘটনায় অবশেষে খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিয়াউর রহমানকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। একই সঙ্গে তাকে ৯৫ লাখ ৫৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায়ের নির্দেশ দিয়েছে খাদ্য বিভাগ।
মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন গাইবান্ধা জেলা খাদ্য কর্মকর্তা মিজানুর রহমান। তিনি জানান, খাদ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক আব্দুল খালেক স্বাক্ষরিত (গত ৭ অক্টোবর) এক চিঠিতে এই আদেশ কার্যকর করতে বলা হয়েছে। প্রজ্ঞাপন জারির তিন মাসের মধ্যে জিয়াউর রহমানকে ৯৫ লাখ ৫৫ হাজার টাকা জরিমানা করা টাকা সরকারি কোষাগারে জমাদানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্যথায় সরকারি পাওনা আদায়ে আইন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চাকরিচ্যুত জিয়াউর রহমান ২০২২ সালে বোনারপাড়া খাদ্য গুদামে কর্মরত ছিলেন। চুরির ঘটনার পর থেকেই তিনি পলাতক রয়েছেন। তার বাড়ি রংপুর সদর উপজেলার কেল্লাবন্দ এলাকার সরকারপাড়ায়।
খাদ্য বিভাগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, অভ্যন্তরীণ বোরো সংগ্রহ ২০২২ মৌসুমে খাদ্য গুদাম থেকে ৭৬ মেট্রিক টন চাল, ২৪ মেট্রিক টন ধান ও প্রায় এক মেট্রিক টন গম ও চার হাজার খালি বস্তা চুরির ঘটনা ঘটে। অভিযোগ ওঠে, এসব ধান, চাল, গম ও খালি বস্তা খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান স্থানীয় কয়েকজন ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করেন। এ ছাড়া জিয়াউর রহমান বোনারপাড়া খাদ্য গুদাম থেকে নির্দেশ বহির্ভূতভাবে চাল নারায়ণগঞ্জ সিএসডিতে পাঠান। এসব চালের অধিকাংশ ট্রাক গুদামের বাইরে ও অবশিষ্ট ট্রাক গুদামের ভেতরে লোড দেওয়া হয়।
এদিকে, ঘটনা জানাজানি হলে স্থানীয় প্রশাসন ও খাদ্য বিভাগ থেকে গোডাউনটি সিলগালা করা হয়। পরে গুদামের ধান-চাল হিসাব করে ওই পরিমাণ ধান-চাল ও গম ঘাটতি পাওয়া যায়। ঘটনার দিনই জিয়াউর রহমান গোডাউনের চাবি রেখে পালিয়ে যান। পরে খাদ্য বিভাগের উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি সরেজমিন তদন্ত করে ১০০ মেট্রিক টন ধান-চাল ও গম চুরি করে বিক্রির প্রমাণ পায়।
তদন্ত কমিটির প্রমাণের পর চলতি বছরের ৭ অক্টোবর অভিযুক্তকে স্থায়ী বরখাস্ত করে অধিদফতর। একই সঙ্গে ৯৫ লাখ ৫৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায়ের আদেশ দেওয়া হয়।