ছয় দিন বন্ধ থাকার পর দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের ৩ নম্বর ইউনিটের উৎপাদন শুরু হয়েছে। বর্তমানে এই ইউনিট থেকে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হচ্ছে ২০০-২১০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। আর পুরো কেন্দ্র থেকে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হচ্ছে ২৬০-২৮০ মেগাওয়াট। ফলে দেশের উত্তরাঞ্চলের লোডশেডিং অনেকাংশে কমে আসবে বলে জানায় কর্তৃপক্ষ।
রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টা থেকে ২৭৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন ৩ নম্বর ইউনিটটি চালু করা হয়। বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের ৩ নম্বর ইউনিটের ব্যবস্থাপক (ভারপ্রাপ্ত) উৎপল কুমার সাহা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বড়পুকুরিয়া কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রর ৫২৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্রটি উৎপাদন কার্যক্রম পরিচালনা করে চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হারবিন ইন্টারন্যাশনাল। ২০২০ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছরের চুক্তি মোতাবেক আগামী বছর তাদের মেয়াদ শেষ হবে। বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির সরবরাহকৃত কয়লার ওপর নির্ভর করে এই তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র।
বিদ্যুৎকেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, ইলেক্ট্র হাইড্রোলিক ওয়েল পাম্পের ত্রুটির কারণে ৯ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা থেকে ২৭৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন ৩ নম্বর ইউনিট বন্ধ হয়ে যায়। এর আগে ৭ সেপ্টেম্বর থেকে ১২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন ১ নম্বর ইউনিট যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বন্ধ হয়ে যায়। এ ছাড়া কেন্দ্রের ১২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন ২ নম্বর ইউনিট ওভারহোল্ডিং কাজের জন্য ২০২০ সালের নভেম্বর মাস থেকে বন্ধ আছে। ফলে ৯ সেপ্টেম্বর থেকে উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।
ওই দিন থেকে এখানের বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যাচ্ছিল না। এতে করে লোডশেডিংয়ের মাত্রা বেড়ে যায় পুরো দেশে। ওই সময়ে দায়িত্বপ্রাপ্তরা এক সপ্তাহের মধ্যে ১ নম্বর ইউনিট এবং ২ সপ্তাহের মধ্যে ৩ নম্বর ইউনিট চালুর ঘোষণা দেন। গত ১২ সেপ্টেম্বর ১ নম্বর ইউনিট চালু হয়। সর্বশেষ ৩ নম্বর ইউনিটটিও চালু হলো।
বর্তমানে ১ নম্বর ইউনিট থেকে ৬০-৭০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ এবং ৩ নম্বর ইউনিট থেকে ২০০-২১০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হচ্ছে। অর্থাৎ ২৬০-২৮০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করছে কেন্দ্রটি।
বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটিতে তিনটি ইউনিট রয়েছে। এর মধ্যে ১ নম্বর ও ২ নম্বর ইউনিট ১২৫ থেকে ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন। আর ৩ নম্বর ইউনিটটি ২৭৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন। তিনটি ইউনিট মিলে কেন্দ্রের বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা ৫২৫ মেগাওয়াট।
তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী মো. আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ‘বর্তমানে কেন্দ্রের দুটি ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। এতে করে লোডশেডিংয়ের মাত্রা অনেকটাই কমে আসবে।’