X
রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫
৭ বৈশাখ ১৪৩২

নানা আয়োজনে সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হককে স্মরণ

কু‌ড়িগ্রাম প্রতি‌নি‌ধি
২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১১:৫৩আপডেট : ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৪:২৯

সৈয়দ শামসুল হকের সমাধিতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদন আজ ২৭ সেপ্টেম্বর, সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হকের তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী। খ্যাতিমান এ লেখক ফুসফুসের ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে ২০১৬ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। লেখকের ইচ্ছানুযায়ী জন্ম-শহর কুড়িগ্রামের সরকারি কলেজের মূল ফটকের পাশেই রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাকে দাফন করা হয়। সৈয়দ শামসুল হক ১৯৩৫ সালের ২৭ ডিসেম্বর কুড়িগ্রাম শহরের থানাপাড়ার পৈত্রিক নিবাসে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা সৈয়দ সিদ্দিক হুসাইন ও মা হালিমা খাতুন। বাবা পেশায় ছিলেন হোমিওপ্যাথিক ডাক্তার। সৈয়দ হক তার বাবা-মায়ের আট সন্তানের মধ্যে সবার বড়।

সৈয়দ হকের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকা‌লে জেলা প্রশাসন, জেলা আইনজীবী সমিতি ও সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন কবির সমাধিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে। পরে একটি র‌্যালি বের হয়ে জেলা প্রশাসন চত্বরে শেষ হয়। সেখানে নবনির্মিত ‘স্বপ্ন কুঁড়ি’ নামক হল রুমে ক‌বির জীবন ও সা‌হিত্য নি‌য়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

বাংলা সাহিত্যের সব শাখায় সমানভাবে পদচারণার জন্য সৈয়দ শামসুল হককে ‘সব্যসাচী লেখক’ বলা হয়। ১৯৬৪ সালে মাত্র ২৯ বছর বয়সে তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার পেয়েছিলেন। এ পুরস্কার পাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে তিনিই সবচেয়ে কম বয়সে এটি লাভ করেন। এছাড়াও তিনি একুশে পদক ও স্বাধীনতা পদক পেয়েছেন।

১৯৫০-এর দশকে প্রকাশিত হয় তার প্রথম উপন্যাস ‘দেয়ালের দেশ’। সে ধারাবাহিকতায় প্রকাশিত তার অন্যান্য উপন্যাসগুলো হলো– খেলারাম খেলে যা, নিষিদ্ধ লোবান, সীমানা ছাড়িয়ে, নীল দংশন, বারো দিনের জীবন, তুমি সেই তরবারি, কয়েকটি মানুষের সোনালি যৌবন ও নির্বাসিতা।

তার বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থগুলোর মধ্যে রয়েছে– একদা এক রাজ্যে, বৈশাখে রচিত পঙক্তিমালা, পরানের গহীন ভিতর, অপর পুরুষ, অগ্নি ও জলের কবিতা।পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায় ও নুরুলদীনের সারাজীবন সৈয়দ শামসুল হকের বিখ্যাত কাব্যনাট্য।

নানা আয়োজনে সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হককে স্মরণ নাটকীয়তায় ভরা তারুণ্যে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করার পর ১৯৫১ সালে মুম্বাই পালিয়ে যান এ সব্যসাচী লেখক। সিনেমা প্রোডাকশন হাউসের সহকারী হিসেবে বছরখানেক কাজ করার পর ঢাকায় ফিরে আবারও লেখাপড়া শুরু করলেও তার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা অসম্পূর্ণই থেকে যায়।

মুক্তিযুদ্ধের আগ পর্যন্ত তিনি বেশ কিছু সিনেমার চিত্রনাট্য লিখে সুনাম কুড়িয়েছেন। যেমন– মাটির পাহাড়, তোমার আমার, কাচ কাটা হীরে, বড় ভালো লোক ছিল ইত্যাদি। তিনি শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও লাভ করেন।

১৯৭১ সালের নভেম্বরে তিনি লন্ডন চলে যান। সেখানে বিবিসি বাংলার সংবাদ পাঠক হিসেবে চাকরি করেন। ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আত্মসমর্পণের খবর বিবিসি থেকে তিনিই পাঠ করেছিলেন।

কবির স্মৃতিকে সংরক্ষণের দাবি জানিয়ে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, কুড়িগ্রাম জেলা শাখার আহ্বায়ক শ্যামল ভৌমিক বলেন, ‘গুনি এ লেখক তার সাহিত্যকর্মের মধ্য দিয়েই বেঁচে থাকবেন মানুষের মাঝে। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় তার স্মৃতি ধরে রাখা প্রয়োজন। আমরা চাই, কবির সমাধি ঘিরে একটি স্মৃতি কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হোক। এতে করে বহুমাত্রিক এ লেখকের সাহিত্যচিন্তা এ জেলার শিক্ষার্থীসহ দেশের সব সাহিত্য অনুরাগীদের সমৃদ্ধ করবে।’

 

/টিটি/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
সারা দেশে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের মহাসমাবেশ আজ
সারা দেশে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের মহাসমাবেশ আজ
নারায়ণগঞ্জে ঝুটবোঝাই চলন্ত ট্রাকে আগুন, চালক আহত
নারায়ণগঞ্জে ঝুটবোঝাই চলন্ত ট্রাকে আগুন, চালক আহত
ক্রুর যাত্রা থামিয়ে অপরাজিত মেসির ইন্টার মায়ামি
ক্রুর যাত্রা থামিয়ে অপরাজিত মেসির ইন্টার মায়ামি
বরগুনা জেলা শ্রমিক লীগের আহ্বায়ক গ্রেফতার
বরগুনা জেলা শ্রমিক লীগের আহ্বায়ক গ্রেফতার
সর্বাধিক পঠিত
কপি-পেস্টে চলছে ১৩ পত্রিকা, সম্পাদকদের কারণ দর্শানোর নোটিশ
কপি-পেস্টে চলছে ১৩ পত্রিকা, সম্পাদকদের কারণ দর্শানোর নোটিশ
মগবাজার রেললাইনে বাস আটকে যাওয়া সম্পর্কে যা জানা গেলো
মগবাজার রেললাইনে বাস আটকে যাওয়া সম্পর্কে যা জানা গেলো
গাজীপুরে সেই দুই শিশুকে হত্যা করেছেন মা: পুলিশ
গাজীপুরে সেই দুই শিশুকে হত্যা করেছেন মা: পুলিশ
আ.লীগের ঝটিকা মিছিল, বিপাকে পুলিশ
আ.লীগের ঝটিকা মিছিল, বিপাকে পুলিশ
হিন্দু নেতা ভবেশ চন্দ্র রায় হত্যা: নিন্দা জানালো ভারত
হিন্দু নেতা ভবেশ চন্দ্র রায় হত্যা: নিন্দা জানালো ভারত