একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে বক্তব্য দেওয়ার সময় বাধা দিয়ে থামিয়ে দিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর একজন নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য। এ সময় ওই মুক্তিযোদ্ধার হাত থেকে মাইক্রোফোন কেড়ে নেন আরেকজন। ঘটনাটি ঘটে গতকাল শনিবার বিকালে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা পুলিশ আয়োজিত সুধীসমাবেশে।
ওই বীর মুক্তিযোদ্ধা হলেন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা ইউনিটের সাবেক সহকারী কমান্ডার মো. তরিকুল আলম। আর তাকে বাধা দিয়েছেন জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য লতিফুর রহমান।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় সার্বিক আইনশৃঙ্খলার বিষয়ে সুধীসমাবেশের আয়োজন করে জেলা পুলিশ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মোহাম্মদ শাহজাহান। অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হয়ে বক্তব্য দিচ্ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. তরিকুল আলম।
ঘটনাস্থলে অবস্থান করে দেখা যায়, বক্তব্য দিতে গিয়ে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে ২০২৪ সালের ৫ আগস্টকে না মেলানোর আহ্বান জানান মো. তরিকুল আলম। এ সময় সামনের সারিতে বসা জামায়াত নেতা লতিফুর রহমান উত্তেজিত হয়ে আঙুল উঁচিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা তরিকুল আলমের দিকে তেড়ে আসেন। চিৎকার করে এর প্রতিবাদ জানিয়ে বক্তব্য থামাতে বলেন। এ সময় আরও কেউ কেউ চেঁচামেচি শুরু করেন। একজন তাঁকে মাইক্রোফোন দিয়ে দিতে বলেন। এ সময় পুলিশের এক সদস্যকে তরিকুল আলমের হাত থেকে মাইক্রোফোন নিয়ে নিতে দেখা যায়।
এ সময় বীর মুক্তিযোদ্ধা তরিকুল আলম বলেন, ‘আমি কী বলতে চেয়েছিলাম, তা বলতে দেওয়া হলো না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জামায়াত নেতা লতিফুর রহমান বলেন, ‘উনি (মুক্তিযোদ্ধা) ৫ আগস্টকে কটাক্ষ করে বক্তব্য দেওয়ায় আমি এর প্রতিবাদ জানিয়েছি।’
এ প্রসঙ্গে তরিকুল আলম বলেন, ‘আমি কোনও দলের লেজুড়বৃত্তি করি না। মুক্তিযুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি। মুক্তিযুদ্ধের কথা বলবোই। তাই বলে জুলাই-আগস্ট আন্দোলনকে অস্বীকার করি না। যারা প্রাণ দিয়েছেন, তাদের শ্রদ্ধা করি। আহত ব্যক্তিদের প্রতি সহানুভূতি আছে। কিন্তু আমাকে এ কথা বলতে দেওয়া হয়নি। তার আগেই থামিয়ে দেওয়া হয়েছে। এটা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য।’
এ ঘটনার পর সমাবেশে রাজশাহী রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মোহাম্মদ শাহজাহান, জেলা পুলিশ সুপার রেজাউল করিমসহ কয়েকজন বক্তব্য দিলেও তারা এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেননি।
পরে জেলা পুলিশ সুপার রেজাউল করিম মোবাইল ফোনে বলেন বলেন, ‘ঘটনাটি অনাকাঙ্ক্ষিত। হঠাৎ করেই ঘটে গেছে।’