বিয়েবাড়িতে সাউন্ডবক্সে জোরে গান বাজানোয় ভাতিজার বাসরঘর ভাঙচুর ও তছনছ করায় চাচাকে জুতাপেটা ও জরিমানা করার ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) রাত ১০টার দিকে নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার দয়ারামপুর ইউনিয়নের জয়ন্তীপুর গ্রামে এক সালিশি বৈঠকে এ দণ্ড দেওয়া হয়।
স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) রাতে জয়ন্তীপুর গ্রামের আরাফাত শাহের বিয়ের অনুষ্ঠান ছিল। অনুষ্ঠানে সাউন্ডবক্সে জোরে গান বাজানো হচ্ছিল। এর প্রতিবাদ করেন তার চাচা আওয়াল শাহ। একপর্যায়ে তিনি ও তার ছেলেরা বাসরঘর তছনছ ও ভাঙচুর করেন এবং বরকে মারধর করেন।
দয়ারামপুর ইউনিয়ন পরিষদ সূত্রে জানা যায়, বাসরঘর ভাঙচুর করার ঘটনায় গতকাল সন্ধ্যার পর গ্রামে সামাজিক সালিশ বসে। গভীর রাত পর্যন্ত সালিশ চলে। সালিশে মিন্টু আলী শাহের ছেলে আরাফাত শাহ (২১) অভিযোগ করেন, বিয়ে উপলক্ষে বাড়িতে সাউন্ডবক্সে গান বাজছিল। এ সময় তার বড় চাচা আওয়াল শাহ ও তার ছেলেরা বাড়িতে এসে কেন জোরে গান বাজানো হচ্ছে, জানতে চান। এ নিয়ে কথা–কাটাকাটির একপর্যায়ে তার বড় চাচা ও তার ছেলেরা তাকে বাসরঘর থেকে টেনেহিঁচড়ে বাইরে নিয়ে যান ও মারধর করেন। তারা বাসরঘরের খাট ও সাজানো জিনিসপত্র তছনছ করে চলে যান। যাওয়ার সময় বরের নানি রেজিয়া বেগমকেও মারধর করা হয়। বৈঠকে জোরে গান বাজানোর নিন্দা জানানো হয়। কিন্তু বাসরঘর ভাঙচুর ও মারধর করার ঘটনায় শাস্তির সিদ্ধান্ত হয়। পরে বরের চাচা আওয়াল শাহকে ৫টি জুতার বাড়ি ও ৩৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
সালিশের প্রধান দয়ারামপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য জাহাঙ্গীর আলম জানান, তিনিসহ সালিসে সাবেক ইউপি সদস্য আবদুল জলিল, গ্রামপ্রধান আবদুর রবসহ গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা ছিলেন। সর্বসম্মতিক্রমে আওয়াল শাহকে ৫টি জুতার বাড়ি ও ৩৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। সেই সঙ্গে গ্রামে জোরে মাইক বাজানোর জন্য আরাফাতকে তিরস্কার করা হয়েছে।
আওয়াল শাহ বলেন, ‘রাত সাড়ে ১০টার দিকেও তারা জোরে গান বাজাচ্ছিল। হইচই করছিল। এতে আমরা ঘুমাতে পারছিলাম না। তাই ভাতিজাকে একটু শাসন করেছিলাম। অথচ এর জন্য আমাকে সমাজের লোকজন কি না করল। আমি সমাজের লোক হওয়ায় প্রতিবাদ করিনি। তবে কষ্ট পাইছি।’