রাজশাহীতে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে অবসরপ্রাপ্ত এক সেনাসদস্যকে হত্যার দায়ে ৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সেইসঙ্গে দুজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন। মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) দুপুরে রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহা. মহিদুজ্জামান এ রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন গোদাগাড়ী উপজেলার কাঁকনহাট পৌরসভার দুর্গাপুর মহল্লার ইসাহাক আলী (৬৫), মো. হাসান (৫২), মনি খাতুন (২৬), মুক্তা খাতুন (৩২), জাহিদ হাসান (২২), নাহিদ হাসান (২৫), দামকুড়া গ্রামের আবুল হাসনাত (৪০), আবদুল হালিম (২৮) এবং সেরাজুল ইসলাম মিয়া (৩০)। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। এর মধ্যে দুজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অপর একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি অন্য একটি ধারায় আরও তিন বছর কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। বিকালে তাদের রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে। নিহত অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য আলতাফ হোসেন (৫৮) কাঁকনহাট পৌরসভার দুর্গাপুর মহল্লার বাসিন্দা ছিলেন।
এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এন্তাজুল হক বাবু। তিনি বলেন, ‘অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য আলতাফ হোসেনের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে তার ভাই ইসহাক আলীর জমি নিয়ে বিরোধ ছিল। এ নিয়ে গত বছরের ৩ মে উভয় পক্ষকে নিয়ে মীমাংসায় বসেছিলেন কাঁকনহাট পৌরসভার তৎকালীন মেয়র। পৌরসভা কার্যালয় বসে মেয়র মীমাংসা করতে ব্যর্থ হন। সেদিন ইসহাক আলী তার ছেলে, মেয়ে ও ভাড়াটিয়া লোকজন নিয়ে আলতাফ হোসেনের বাড়িতে হামলা চালান। এ সময় আলতাফ হোসেনকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করে চলে যান তারা। পরে তাকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৬ মে মারা যান। এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে হত্যা মামলা করা হয়। পরে ১০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ।
আইনজীবী এন্তাজুল হক বাবু বলেন, ‘মামলার ১০ আসামির মধ্যে একজন আগেই মারা গেছেন। অন্য ৯ জনকে আজ সাজা দিয়েছেন আদালত। এই মামলায় আদালতে আমার সঙ্গে সংযুক্ত ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মিজানুল ইসলাম। মামলার রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করছি আমরা।’