বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার ভেলুরপাড়া রেলওয়ে স্টেশনে তিন যুগেও যাত্রী বিশ্রামাগারের কাজ শেষ হয়নি। বসার কোনও জায়গা না থাকায় ট্রেনের জন্য যাত্রীদের গাছতলায় অপেক্ষা করতে হয়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা রোদ পুড়তে ও বৃষ্টিতে ভিজতে হচ্ছে। এতে যাত্রীদের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। বিশ্রামাগারের কাজ দ্রুত শেষ করতে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন সাধারণ যাত্রীরা।
রেল বিভাগের সূত্র জানায়, ১৯৮৮ সালে প্রায় ২৫ লাখ টাকা ব্যয়ে সান্তাহার-বোনারপাড়া রুটে বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার ভেলুরপাড়া রেলস্টেশনে যাত্রী বিশ্রামাগার নির্মাণের দরপত্র আহ্বান করা হয়। ঠিকাদার নিযুক্ত হওয়ার পর তারা ছয় মাস কাজ করেন। প্রায় ৭৫ ভাগ কাজ শেষ হওয়ার পর ভয়াবহ বন্যা শুরু হলে বিশ্রামাগারের কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এরপর দীর্ঘ ৩৬ বছর পেরিয়ে গেলেও অবশিষ্ট কাজ আর শুরু করা যায়নি। এতে রেল বিভাগ যে উদ্দেশ্য নিয়ে ভেলুরপাড়া স্টেশনে যাত্রী বিশ্রামাগার নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছিল তা ভেস্তে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে।
এলাকায় গুঞ্জন রয়েছে, ঠিকাদার রেল বিভাগের অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে যোগসাজশে কাজ শেষ না করেই বরাদ্দকৃত টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এতে সরকারের মোটা অঙ্কের টাকা গচ্চা গেছে।
এ প্রসঙ্গে স্থানীয় ভেলুরপাড়া গ্রামের রোস্তম আলী মণ্ডল, গোলাম রব্বানী, সেকেন্দার আলী, পেস্তা মিয়া, এনামুল হক, সিরাজুল ইসলাম প্রমুখ জানান, একসময় ভেলুরপাড়া স্টেশন থেকে সরকার মাসে লাখ লাখ টাকা রাজস্ব আয় করতো। গত ৬-৭ বছর ধরে জনবলসংকটে স্টেশনটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। এখনও ওই স্টেশন থেকে বিভিন্ন এলাকার নানা পেশার বিপুলসংখ্যক মানুষ ট্রেনে দেশের বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করেন।
তারা আরও জানান, বর্তমানে অসমাপ্ত যাত্রী বিশ্রামাগার মাদকসেবীদের আখড়া ও ছিন্নমূলদের বাসস্থানে পরিণত হয়েছে। তারা অবিলম্বে বিশ্রামাগারের কাজ শেষ করতে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এ বিষয়ে লালমনিরহাট রেলওয়ে বিভাগের বগুড়া দফতরের সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী সাইদুর রহমান জানান, তিনি ২০২১ সালে যোগদান করেছেন। সোনাতলার ভেলুরপাড়া রেলস্টেশনের যাত্রী বিশ্রামাগারের বিষয়টি কেউ তাকে অবগত করেনি। তার দফতরে এ সংক্রান্ত কোনও ফাইলপত্র নেই। এরপরও তিনি এ ব্যাপারে খোঁজ নেবেন বলে জানিয়েছেন।