রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলায় হামলা, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনার মধ্য দিয়ে চলছে ভোটগ্রহণ। উপজেলার পানানগর দ্বিমুখী উচ্চবিদ্যালয় ও নয়াপাড়া গোপালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় দুই কেন্দ্রে ৯ জন আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (২১ মে) সকালে ভোট দেওয়াকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে। প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, উপজেলার নয়াপাড়া গোপালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে চেয়ারম্যান প্রার্থী শরিফ ও মজিদ সরদারের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ছাড়াও ভোটারদের বাধা ও হুমকি-ধমকি দেওয়ার অভিযোগে একজনকে আটক করেছে র্যাব।
আহতরা হলেন গোপালপুর গ্রামের আজাদ, আজের, শহিদুল, মিঠু, শুকচান, আব্দুর রাজ্জাক, সান্টু ও পানানগর গ্রামের আজিজুল ইসলামের ছেলে শিহাব। বাকি একজনের পরিচয় জানা যায়নি। আহতদের রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও দুর্গাপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে।
এদিকে, নান্দিগ্রাম দারুস সালাম আলিম মাদ্রাসা কেন্দ্রে ভোটারদের ভয়ভীতি ও হুমকি-ধমকি দেওয়ার অভিযোগে একজনকে আটক করে র্যাব। আটক ব্যক্তি নান্দিগ্রামের নবীর উদ্দিনের ছেলে আতাহার আলী (৪২)।
জানা গেছে, এসব কেন্দ্রে চেয়ারম্যান প্রার্থীদের নির্বাচনি এজেন্ট থাকলেও ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীদের কোনও এজেন্ট ছিল না। সকাল ৮টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত বিভিন্ন কেন্দ্রে ৩, ৬ ও ১২ শতাংশ ভোট কাস্ট হয়েছে।
দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার স্বীকৃতি প্রামাণিক বলেন, ‘সকাল থেকেই সবগুলো কেন্দ্রে শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ চলছে। দু-একটি কেন্দ্রে কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, র্যাব, পুলিশ ও বিজিবিসহ যথেষ্ট পরিমাণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নির্বাচনি মাঠে কাজ করছে। আশা করি, কোনও ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন সম্পন্ন হবে।’
এদিকে, সকাল ৮টা থেকে দুর্গাপুর, পুঠিয়া ও বাগমারা উপজেলায় ২৬৭টি ভোটকেন্দ্রে একযোগে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। বিরতিহীনভাবে চলবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত।
দুর্গাপুর উপজেলার ঝালুকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে বৃষ্টি উপেক্ষা করে নারী ও তরুণ ভোটারদের উপস্থিতি বেশি ছিল।
রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ও রিটার্নিং কর্মকর্তা কল্যাণ চৌধুরী জানান, মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় ধাপে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নির্ধারিত সময়ে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। দু-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া কোথা থেকে এখন পর্যন্ত বড় কোনও সহিংসতার খবর পাইনি। সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের সকল প্রস্তুতি ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে।
তিনি আরও জানান, বৃষ্টির কারণে সকালের দিকে ভোটার উপস্থিতি কিছুটা কম হলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাড়বে। পুঠিয়া উপজেলায় মোট ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ৭৮ ও ভোটকক্ষের সংখ্যা ৫১৩, দুর্গাপুরে ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ৬৭ ও ভোটকক্ষের সংখ্যা ৪৭২, বাগমারায় ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ১২২ ও ভোটকক্ষের সংখ্যা ৭৪৭টি। পুঠিয়া উপজেলায় মোট ভোটার এক লাখ ৮১ হাজার ৯৯৮ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ৯১ হাজার ৮৬২ এবং পুরুষ ভোটার ৯০ হাজার ১৩৬ জন। দুর্গাপুর উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা এক লাখ ৫৯ হাজার ৯৩২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৮০ হাজার ৫১ এবং নারী ভোটার ৭৯ হাজার ৮৮১ জন। বাগমারা উপজেলায় মোট ভোটার তিন লাখ ১০ হাজার ৯৭১ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার এক লাখ ৫৬ হাজার ৫৮২ এবং নারী ভোটার এক লাখ ৫৪ হাজার ৩৮৯ জন।