রংপুরে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দৃশ্যমান কোনও কর্মকাণ্ড নেই। বিগত ৫ বছরে দুদক কোনও ঘটনার অনুসন্ধান বা মামলা করেনি। সম্প্রতি সরকারি চাল আত্মসাতের ঘটনার তদন্ত ও মামলাতেই সীমাবদ্ধ তাদের কাজ। অভিযোগ রয়েছে, রংপুর সিটি করপোরেশনের প্রয়াত মেয়র ঝন্টুর আমলে নিয়োগ বাণিজ্য, কেনাকাটাসহ বিভিন্ন খাতে কোটি কোটি টাকার দুর্নিতীর অনুসন্ধান শুরু করলেও বেশির ভাগ ঘটনায় দায়মুক্তি দিয়েছে। আর কিছু কিছু ঘটনার অনুসন্ধান বিগত ৬ বছর ধরে তাদের ভাষায় চলমান আছে। এছাড়াও দুদকের ২/৩ জন কর্মকর্তা ৫/৭ বছর ধরে একই কর্মস্থলে অবস্থান করছে তাদের বিরুদ্ধে রয়েছে অনুসন্ধানের নামে নানান অভিযোগ।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে রংপুরে কয়েকটি চাল আত্মসাতের ঘটনায় মামলা ছাড়া আর কোনও কর্মকাণ্ড নেই। অথচ রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যন্ত্রপাতি কেনার নামে শত কোটি টাকার দুর্নীতির ব্যাপারে কোনও পদক্ষেপ নেই রংপুর দুদকের। এছাড়া রংপুর সিটি করপোরেশনের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা যারা এখন সরকারের বিভিন্ন পদে আসীন আছেন তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের অনুসন্ধানের নামে কোনও অগ্রগতি দৃশ্যমান নেই।
এ ব্যাপারে রংপুর জেলা সুজন সম্পাদক অধ্যাক্ষ খায়রুল আনাম বলেন, ‘দুদক স্বাধীনভাবে কাজ করে এটাই আমরা জানি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব সময় হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করছেন দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স। কিন্তু রংপুরে দুদকের দৃশ্যমান কোনও কর্মকাণ্ড দেখছি না।’ তিনি যেসব সেক্টরে দুর্নীতি হচ্ছে সে বিষয়গুলো খতিয়ে দেখে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।
রংপুর মহানগর নাগরিক কমিটির নেতা আনোয়ার হোসেন বাবলু বলেন, রংপুরে দুদকের কর্মকাণ্ড দন্তহীন বাঘের মতো। আমরা দুর্নিতীবাজদের বিরুদ্ধে দুদকের দৃম্যমান কর্মকাণ্ড প্রত্যাশা করছি।
রংপুর জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা আকবর হোসেন বলেন, দুদক বলে তাদের জনবল নেই। জনবলের ব্যবস্থা তাদেরকেই করতে হবে। তাদের দৃশ্যমান কাজ দেখবো এটা আমাদের প্রত্যাশা।
এ ব্যাপারে দুদক রংপুরের উপ-পরিচালক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, রংপুর সিটি করপোরেশন কিংবা স্বাস্থ্য খাত নিয়ে আমাদের কোনও কাজ হচ্ছে না। তবে দুস্থদের জন্য বরাদ্দ সরকারি চাল আত্মসাতের ঘটনায় মামলা করা হয়েছে এবং অনুসন্ধান চলছে। আর কোনও বিষয়ে অনুসন্ধান করা হচ্ছে না।’
দুদকের রংপুরের বিভাগীয় পরিচালক আব্দুল করিম বলেন, ‘আমরা অনুসন্ধান বা তদন্ত করি না। এসব করে জেলা অফিস।’ তাদের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন তিনি।