বরিশালে দিন দিন লিকুইড পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) ব্যবহার বাড়ছে। ফলে নগরীতে একের পর এক এলপিজি অটো গ্যাস স্টেশন গড়ে উঠেছে।আবাসিক এলাকা, বহুতল ভবনের গা ঘেঁষে, মহাসড়কের পাশে যত্রতত্র এসব গ্যাস স্টেশন গড়ে ওঠায় ঝুঁকিতে পড়ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। অথচ বিস্ফোরক পরিদফতরের এ দিকে কোনও নজর নেই। তারা দায় চাপিয়েছেন পরিবেশ অধিদফতরের ওপর। তবে এসবের কিছুই জানে না বিভাগীয় পরিবেশ অধিদফতর। নীতিমালা লঙ্ঘন করে নির্মিত এলপিজি গ্যাস স্টেশন বন্ধ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে বরিশালের জেলা প্রশাসন।
বরিশালে এ পর্যন্ত গড়ে উঠেছে ৫টি এলজিপি গ্যাস স্টেশন। গত কয়েক বছর ধরে নগরীসহ জেলায় বেড়েছে গ্যাস চালিত যানবাহনের ব্যবহার। এতে পরিবেশ দূষণ এবং কালো ধোয়া থেকে রক্ষা পাচ্ছেন স্থানীয়রা। তবে গড়ে উঠেছে এলপিজি অটো গ্যাস স্টেশন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরদারি না থাকায় জনবহুল আবাসিক এলাকায়, বহুতল ভবনের গা ঘেঁষে আবার কোথাও গ্যাস স্টেশন নির্মাণ করা হচ্ছে মহাসড়কের পাশে।
নগরীর রূপাতলীর কাঠালতলার বাসিন্দা কবির হোসেন, রফিক, আবুল কালামসহ অন্যান্যরা জানান, আবাসিক এলাকায় গ্যাস স্টেশনের কারণে স্থানীয়দের জানমাল ঝুঁকিতে পড়েছে। যেকোনও সময় ভয়াবহ দুর্ঘটনায় ঘটতে পারে বলে আশঙ্কায় আছেন তারা। আবাসিক ও ব্যস্ততম এলাকা থেকে গ্যাস স্টেশন নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞ বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-তত্ত্ব ও খনি বিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান আবু জাফর মিয়া বলেন, সরকারি নির্দেশনা মেনে এলপিজি স্টেশনগুলো নিরাপদ দূরত্বে স্থাপন করা উচিত। বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে সংশ্লিষ্ট সব প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।
তবে এসব যাদের দেখার দায়িত্ব সেই বিস্ফোরক পরিদফতরের প্রধান পরিদর্শক মঞ্জুরুল হাফিজ দায় চাপিয়েছেন পরিবেশ অধিদফতরের কাঁধে। তিনি বলেন, পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র পেলেই অটো গ্যাস স্টেশনের অনুমতি দেয় বিস্ফোরক পরিদফতর। জনবসতি থেকে কত ফুট দূরত্বে গ্যাস স্টেশন নির্মাণ করা যাবে তা স্পষ্ট করে বলতে প্রধান বিস্ফোরক পরিদর্শক।
জনবসতিপূর্ণ এলাকায় গ্যাস স্টেশন নির্মাণের কোনও খবর জানেন না বলে দাবি করেন বরিশাল বিভাগীয় পরিবেশ অধিদফতরের পরিচালক আবদুল হালিম। তিনি বলেন, এলপিজি স্টেশন নির্মানে পরিবেশ এবং বিস্ফোরক কর্তৃপক্ষের অনুমোদন প্রয়োজন। কেউ অনুমতি ছাড়া এবং নীতিমালা ভঙ্গ করে ঝুঁকিপূর্ণভাবে গ্যাস স্টেশন নির্মাণ করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বরিশালের জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান বলেন, জনস্বার্থে ঝুঁকিপূর্ণ এলপিজি স্টেশন বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।