জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে চলন্ত ট্রেন থেকে মাথা বের করে বাইরের দৃশ্য দেখার সময় ল্যাম্পপোস্টে ধাক্কা লেগে বাইরে ছিটকে পড়া শিশুটির (১২) পরিচয় মিলেছে। আহত শিশুটির নাম সাকিব আল হাসান (১২)। সে সরিষাবাড়ী উপজেলার সাতপোয়া ইউনিয়নের চরনান্দিনা এলাকার ময়েন মন্ডলের ছেলে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় সরিষাবাড়ী রেলস্টেশন এলাকায় ল্যাম্পপোস্টে ধাক্কা লেগে বাইরে ছিটকে পড়ে শিশুটি। বর্তমানে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার অবস্থা আগের থেকে কিছুটা উন্নতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন শিশুটির বাবা ময়েন মন্ডল। তিনি বলেন, ‘সাকিবের মাথার খুলি সার্জারি করা হয়েছে। শনিবার সকালে সে কথা বলেছে। তার অবস্থা আগের চেয়ে ভালো বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।’
আহত সাকিব আল হাসান সরিষাবাড়ী উপজেলার মারকাজুল উলুম মাদ্রাসার বিশেষ জামাতের প্রথম শ্রেণির ছাত্র। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা বায়েজীদ হাসান। তিনি বলেন, ‘সাকিব আল হাসান গত রমজান মাসে মাদ্রাসায় ভর্তি হয়। গতকাল শুক্রবার বিকাল পর্যন্ত মাদ্রাসায় ছিল। সন্ধ্যায় ফেসবুকে ছবি দেখে আমরা চিনতে পারি তাকে। আমাদের ধারণা, সাকিব ট্রেনে করে সারিষাবাড়ী থেকে তারাকান্দি গিয়েছিল। আবার সেখান থেকে সরিষাবাড়ী স্টেশনে ফেরার পথে দুর্ঘটনা ঘটেছে।’
শিশুটির বাবা ময়েন মন্ডল বলেন, ‘দুর্ঘটনার বিষয়টি তার মাদ্রাসা থেকে ফোন করে আমাকে জানানো হয়। রাতে রওনা দিয়ে শনিবার ভোরে ময়মনসিংহ হাসপাতালে পৌঁছেছি। সাবিক আমাদের দেখে চিনতে পেরেছে। কথাও বলেছে।’
ইতিমধ্যে দুর্ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে দেখা যায়, সাদা পোশাকের একজন ট্রেন থেকে ছিটকে পড়েছে। ট্রেন চলে যাওয়ার পর স্থানীয়রা আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে একটি ভ্যানে তুলে নিয়ে যান। ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে শনিবার দুপুরে রেল কর্তৃপক্ষ ওই ল্যাম্পপোস্ট সরিয়ে নেয়।
রেলওয়ে পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর থেকে জামালপুর এক্সপ্রেস ট্রেনটি সরিষাবাড়ী স্টেশন এলাকায় পৌঁছালে শিশুটি চলন্ত ট্রেনের দরজা দিয়ে মাথা বের করে বাইরে দেখছিল। হঠাৎ তার মাথা রেললাইনের পাশে থাকা ল্যাম্পপোস্টের সঙ্গে ধাক্কা খায়। এতে ট্রেন থেকে পড়ে যায়। স্থানীয়রা তাকে সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে তার জ্ঞান না ফিরলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।
জামালপুর রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রবিউল ইসলাম বলেন, ‘শিশুটির পরিচয় মিলেছে। ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে।’