সেতুর সংযোগ সড়কের দুই পাশের মাটি ধসে যায় বেশ কয়েক মাস আগেই। এরই মধ্যে সাম্প্রতিক আকস্মিক বন্যার পানির তীব্র স্রোত ধসে যাওয়া সব মাটি ভাসিয়ে নিয়ে যায়। এ অবস্থায় চরম ঝুঁকি নিয়ে সেতুটি দিয়ে যাতায়াত করছেন ছোট-বড় যানবাহনসহ সাধারণ মানুষ। ফলে যেকোনও সময় বড় রকমের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার সীমান্তবর্তী রংছাতি ইউনিয়নের নল্লাপাড়া এলাকায় থাকা রসুর (লইচ্ছা) সেতুর চিত্র এটি।
এদিকে ঝুঁকি নিয়ে যানবাহনসহ পথচারীরা প্রতিনিয়ত সেতুটি পারাপার করলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যেন তা দেখেও দেখছেন না, এমন অভিযোগ স্থানীয়দের। তাই দ্রুততম সময়ের মধ্যে সেতুর সংস্কারকাজ সম্পন্ন করতে কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছেন তারা।
স্থানীয় বাসিন্দা ছাদু মিয়াসহ কয়েকজন জানান, সম্প্রতি উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের তীব্র স্রোতে ও বালুবোঝাই ইঞ্জিনচালিত নৌকার ঢেউয়ে এখানকার বসতবাড়িসহ সেতুর উভয়পাশের সংযোগ সড়ক নদের গর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া সরকারি বালুমহাল বিলুপ্ত করে ইজারা বাতিল হওয়ার পরও এখানে দিনে-রাতে অবৈধভাবে বালুখেকোরা বালু উত্তোলন করছে। বিশেষ করে বসতভিটার সামনের জায়গাসহ নদ থেকে হুমকি-ধমকি দিয়ে জোরপূর্বক শতাধিক ছোট-বড় ইঞ্জিনচালিত নৌকা দিয়ে বালু উত্তোলন করে নিয়ে যায় তারা।
জেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি) কার্যালয় ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কলমাকান্দা উপজেলার সীমান্তবর্তী রংছাতি ইউনিয়নের নল্লাপাড়া এলাকায় এলজিইডির তত্ত্বাবধানে রসুর (লইচ্ছা) সেতুটি ২০০০ সালে নির্মিত হয়। প্রায় ৬ মাস আগে সেতুটি উভয়পাশের সংযোগ সড়কের নিচের অংশের মাটি ধসে যায়। এরই মধ্যে সাম্প্রতিক আকস্মিক বন্যা দেখা দেওয়ায় বন্যার পানির তীব্র স্রোতে মাটি ভেসে গিয়ে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এ অবস্থায় ছোট-বড় যানবাহনসহ পথচারীরা অনেকটা ঝুঁকি নিয়েই সেতুটি পারাপার হচ্ছেন।
স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) কলমাকান্দা উপজেলা প্রকৌশলী মো. মমিনুল ইসলাম জানান, সম্প্রতি বন্যায় সেতুটির উভয়পাশের সংযোগ সড়কের নিচের অংশের মাটি ধসে ঝুঁকিতে রয়েছে। সেতু পারাপারকারীদের সতর্ক করতে আপাতত ঝুঁকিপূর্ণ একটি সংকেত ব্যবহার করা হবে। এ বিষয়ে সংস্কারের একটি প্রস্তাবনাসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে কলমাকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘সেতুটির সংযোগ সড়ক দ্রুত সংস্কার করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে। এ ছাড়া অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে এবং এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।’